Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Lok Sabha Election 2024

‘সাম্প্রদায়িক রাজনীতির চক্রান্তের শিকার’, লোকসভা ভোটে হার নিয়ে সনিয়ার কাছে মমতাকেই দায়ী করলেন অধীর

দিন কয়েক আগেই দিল্লিতে গিয়েছিলেন অধীর। জল্পনা চলছিল তিনি হয়তো কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করবেন। শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জানান, তিনি সনিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন।

Adhir Chowdhury blames Mamata Banerjee to Sonia Gandhi for losing the Baharampur seat in Lok Sabha polls

(বাঁ দিকে) সনিয়া গান্ধী, (মাঝখানে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, (ডান দিকে) অধীর চৌধুরী।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৪ ২৩:২০
Share: Save:

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় দু’টি আসন জিতেছিল কংগ্রেস। এ বার সেই সংখ্যাটা নেমে এসেছে একে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী নিজের গড় বহরমপুরেই হেরে গিয়েছেন। সেই হারের জন্য তিনি প্রথম থেকেই তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করে এসেছেন। এ বার দিল্লিতে গিয়ে কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর কাছেও একই অভিযোগ করে এলেন তিনি। অধীর তাঁকে জানিয়েছেন, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির চক্রান্তের কাছে হারতে হয়েছে তাঁকে।

দিন কয়েক আগেই দিল্লিতে গিয়েছিলেন অধীর। জল্পনা চলছিল তিনি হয়তো কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করবেন। শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জানান, তিনি সনিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন। কী কথা হয়েছে দুই রাজনীতিবিদের? অধীর জানিয়েছেন, সনিয়া তাঁর কাছে জানতে চান এমন ফলাফল হল কেন? তাঁর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অধীর নেত্রীকে জানান, তিনি ‘চক্রান্তের’ শিকার হয়েছেন।

সনিয়াকে কী বলেছেন তা বলতে গিয়ে অধীর বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি প্রবেশ করেছে। আগে বাংলা এই ধরনের রাজনীতি থেকে দূরে ছিল। আমাকে হারানোর জন্য এক জন পরিচিত মুসলিম মুখকে (তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠান) আনা হয়েছিল।’’ এখানেই থেমে থাকেননি অধীর। তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূলের লোকেরা হিংসা ছড়িয়েছিল। দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) লক্ষ্যই ছিল অধীরকে হারানো। আমি সাম্প্রদায়িক রাজনীতির শিকার হয়েছি। আমার তাতে কোনও আফসোস নেই। তৃণমূল ভাড়া করা এজেন্সি দিয়ে প্রচার করে হিন্দু ভোট বিজেপির দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।’’

এ বারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-বিরোধী প্রায় সব দলই একজোট হয়ে লড়াই করেছে। আসন সমঝোতার মাধ্যমে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে কংগ্রেস, সিপিএম, আপ, ডিএমকে-র মতো দলগুলি। সেই জোটে তৃণমূল থাকলেও বাংলায় কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতার পথে হাঁটেননি মমতা। তিনি বার বার স্পষ্ট করেন, দেশে জোটবদ্ধ হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করলেও বাংলাতে একলা চলবে তৃণমূল। কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে একাধিক বৈঠকেও কোনও রফাসূত্র বার হয়নি। শেষ পর্যন্ত এ রাজ্যে সিপিএম এবং কংগ্রেস জোটে লড়লেও তৃণমূল আলাদাই লড়েছিল। ২০২৪ সালের নির্বাচনে ২৯ টি আসন জেতে তৃণমূল। ১২টি পেয়েছে বিজেপি। বাম-কংগ্রেস জোট মাত্র একটি আসন জিততে পেরেছে। ফলপ্রকাশের পর কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব যখন বঙ্গে বিরোধী শিবিরের ভাল ফলের জন্য তৃণমূলের প্রশংসা করেছিলেন, তখনও অধীর তাঁর বহরমপুরে হারের জন্য মমতাকেই দায়ী করেন। এ বার সনিয়ার কাছে গিয়েও একই দাবি করে এলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।

অধীরের এই দাবি প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র শান্তনু সেন বলেন, ‘‘অধীরবাবুর উচিত ছিল সনিয়া গান্ধীর কাছে সত্যি কথাটা বলা। সত্যি কথা হল, তিনি সর্বভারতীয় কংগ্রস নেতৃত্বের নির্দেশ অমান্য করে বাংলায় সিপিএম এবং আইএসএফের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে তৃণমূলের বিরোধিতা করেছেন। পরোক্ষ ভাবে বিজেপিকে সাহায্য করেছেন। সেই কারণেই বিজেপি ১২টা আসন পেয়েছে, না হলে একটা-দুটোর বেশি আসন পেত না।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE