সুদীপ্ত সেন। ফাইল চিত্র।
বেশ কিছু দিন পালিয়ে বেড়ানোর পরে কাশ্মীরে ধরা পড়েন তিনি। দীর্ঘদিন জেলে থাকার পরে বিচারককে লেখা চিঠিতে সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার ও সারদা তছরুপ মামলায় মূল অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেন জানাচ্ছেন, তিনি কখনওই কলকাতা ছেড়ে ফেরার হতে চাননি। এক রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতার চাপে সারদা অর্থ লগ্নি সংস্থা বন্ধ করে গোষ্ঠীর অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গী করে ফেরার হতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। ২১ পাতা চিঠিতে মূল ষড়যন্ত্রকারীদের কথা উল্লেখ করেছেন সারদা-প্রধান।
কলকাতা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৯ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্সি জেল থেকে ওই চিঠি আদালতে পেশ করেছেন সুদীপ্ত। বিচারক সেই চিঠি (মেমো নম্বর ১০৬৭৬/ ডব্লিউ ও/১৯.১২.২০২০) সারদা মামলার কেস রেকর্ডে নথিভুক্ত করেছেন। ওই বিচারক ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী এবং সিবিআইয়ের ডিরেক্টরের কাছে ওই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে।
আদালত সূত্রের খবর: ইংরেজি হরফে তিন ভাগে ওই চিঠি লিখেছেন সুদীপ্ত। কী ভাবে তিনি রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতাদের দ্বারা প্রতারিত হয়েছিলেন, সারদা-প্রধান তা লিখেছেন চিঠির প্রথম ভাগে। পরের দু’টি ভাগে তিনি লিখেছেন সারদা তৈরির ইতিবৃত্ত এবং জানিয়েছেন, কী ভাবে আমানতকারীদের টাকা এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতাদের হাতে তুলে দিতে হয়েছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকে কখন কবে তিনি নগদে এবং ব্যাঙ্ক ড্রাফট ও চেকের মাধ্যমে টাকা দিয়েছিলেন, তা বিস্তারিত ভাবে লিখেছেন সুদীপ্ত। লিখেছেন, ২০১৩ সালের এপ্রিলে এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা তাঁকে দিয়ে জোর করে সিবিআই-এর কাছে চিঠি লিখিয়েছিলেন এবং তার পরে তাঁকে সাময়িক ভাবে কলকাতা ছেড়ে চলে যেতে বলেন। সেই নেতার পরামর্শ অনুযায়ী তিনি কলকাতা ছাড়েন।
সুদীপ্ত ওই চিঠিতে দাবি করেছেন, তদন্ত চলাকালীন তিনি সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র তদন্তকারী অফিসারদের সব জানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও রহস্যময় কারণে এখনও মূল ষড়যন্ত্রকারী ও প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ষড়যন্ত্রকারী ও প্রতারক নেতারা দিনের আলোয় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর সারদা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান হওয়ার দরুন তাঁকে জেলে থাকতে হচ্ছে। শুধু রাজনৈতিক বা ব্যবসায়িক প্রভাবশালী ব্যক্তি নন, সারদার টাকা লুটের ঘটনায় এক বিখ্যাত চিকিৎসকও জড়িত ছিলেন বলে চিঠিতে দাবি করেছেন সুদীপ্ত। জানিয়েছেন, তিনি খুবই অসুস্থ। যে-কোনও দিন কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
আদালত সূত্রের খবর, সুদীপ্ত ওই চিঠিতে বিচারকের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন। সারদা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ শনিবার আদালত-চত্বরে বলেন, ‘‘সম্প্রতি মামলার আইনজীবী মারফত ওই চিঠির বিষয়ে আমি কিছুটা জানতে পেরেছি। সুদীপ্তের আবেদন অনুযায়ী সিবিআই ঘটনার তদন্ত করুক। সারদা-কাণ্ডের ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসা প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy