Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
saraswati puja

পঞ্চমী রাতে কলেজে ঢুকে নাচ এবিভিপি-র

নবদ্বীপ বিদ্যাসাগর কলেজ প্রাঙ্গণে তাঁদের সমর্থকদের এই উল্লাসের কয়েকটি ভিডিয়ো ফেসবুকে পোস্ট করেন এবিভিপি-র কলেজ ইউনিটের সভাপতি কৃষ্ণেন্দু সাহা।

এই নাচ ঘিরেই বিতর্ক।

এই নাচ ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৩৯
Share: Save:

প্রভাতে সরস্বতী বন্দনা নয়। বরং বসন্ত পঞ্চমীর রাত ঘনালে কলেজে ঢুকে সাউন্ডবক্স চালিয়ে উদ্দাম নাচ, তীক্ষ্ণ শিস, ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি!

নবদ্বীপ বিদ্যাসাগর কলেজ প্রাঙ্গণে তাঁদের সমর্থকদের এই উল্লাসের কয়েকটি ভিডিয়ো ফেসবুকে পোস্ট করেন এবিভিপি-র কলেজ ইউনিটের সভাপতি কৃষ্ণেন্দু সাহা। বুধবার বেশ কিছু শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে নবদ্বীপ থানায় গিয়ে ডায়েরি করেছেন নদিয়ার ওই কলেজের অধ্যক্ষ স্বপনকুমার রায়।

মঙ্গলবার বেশি রাতে ফেসবুকে পোস্ট হওয়া বেশ কয়েকটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, কলেজে মণ্ডপের সামনে চলছে নাচ। উচ্চগ্রামে বাজছে— ‘এবিভিপি, এবিভিপি… চলো এবিভিপি কা নারা লাগাই…’। কারও হাতে এবিভিপি-র গৌরিক পতাকা, মুখে দু’আঙুল পুরে কেউ দিচ্ছেন শিস। মাঝে-মাঝে সমবেত ধ্বনি “জয় শ্রীরাম।”

নবদ্বীপ বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ স্বপনকুমার রায় জানান, কোভিড পরিস্থিতিতে এ বার সরস্বতী পুজোয় পড়ুয়াদের যুক্ত করা হয়নি। শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরাই পুজোর আয়োজন করেন। তবু ভিড় বাড়তে থাকায় বাধ্য হয়ে বিকেল ৪টে নাগাদ তাঁরা কলেজের মূল ফটকে তালা দিয়ে দেন। ভিতরে শুধু কলেজের কর্মীরা ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, “কিছুক্ষণ পরে কয়েক জন ছাত্র এবং কিছু বহিরাগত পাঁচিল টপকে কলেজে ঢুকে পড়ে। বারণ করতে গেলে তারা কলেজের কর্মীদের গালিগালাজ করে, ধাক্কা দেয়। কয়েক জন গিয়ে তালা ভেঙে কলেজের গেট খুলে দেয়। এর পরেই নাচগান শুরু হয়ে যায়।” তাঁর আক্ষেপ, “এই ঘটনায় কলেজের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।”

এবিভিপি-র নদিয়া জেলা সহ-সভাপতি তথা নবদ্বীপ নগর সভাপতি শুভঙ্কর হালদারের বক্তব্য, “বিকেল ৪টের পর গেট বন্ধ করে সকলে চলে গিয়েছিলেন। পড়ুয়া এবং দর্শনার্থীরা এসে ফিরে চলে যাচ্ছিলেন। তাই আমরা গিয়ে বন্ধ দরজা খুলে দিই।” তবে তালা ভাঙার অভিযোগ তিনি মানতে চাননি। তাঁর দাবি, “কলেজে সিসিটিভি আছে। কর্তৃপক্ষ দেখান, তালা ভাঙার ফুটেজ আছে কি না। শিক্ষায়তনের তালা ভাঙার সংস্কৃতি এবিভিপি-র নয়।” সরস্বতী মূর্তির সামনে শিস দিয়ে নাচ কি তাঁদের সংস্কৃতি? তাঁর মতে, ‘‘এটা আসলে আবেগের বহিঃপ্রকাশ।” আর ‘জয় শ্রীরাম’? শুভঙ্কর বলেন, “রামচন্দ্র আমাদের জাতীয় আবেগ। তাঁর নাম করলে ক্ষতি কী? গালি তো দেয়নি!”

নবদ্বীপ শহর টিএমসিপি সভাপতি রাজদীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সরস্বতী পুজোর রাতে কলেজে ঢুকে এবিভিপি যা করেছে, ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই। স্পষ্ট দেখাই গেল, কী তাদের সংস্কৃতি।” টিএমসিপি-র নদিয়া জেলা সভাপতি রাকেশ পাড়ুইয়ের মতে, “যারা মত্ত হয়ে সরস্বতীর সামনে নৃত্য করেছে, মানুষ তাদের চিনে নিল।”

এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক মৌপ্রিয়া রাহা বলেন, “এই গৈরিক বাহিনী শুধু একটা কলেজের সংস্কৃতি কেন, গোটা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকেই লন্ডভন্ড করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা এদের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু প্রত্যাশা করি না।”

অন্য বিষয়গুলি:

saraswati puja ABVP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy