বক্তাদের মধ্যে ছিলেন সুবর্ণ বসু, উইলমা ফ্রান্সিস আলফান্সো, অনিন্দ্য ঘোষ এবং রূপকথা সরকার। সঞ্চালনায় ছিলেন ব্রততী ভট্টাচার্য।
স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এবিপি এডুকেশন আয়োজিত ওয়েবিনার সিরিজ ক্যাম্পাসটুকেরিয়ার ২০২০-তে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল পছন্দের স্বাধীনতা।
‘কেরিয়ার কল: হাউ টু নো হোয়াট টু চুজ’ শীর্ষক ওই আলোচনায় সঠিক কেরিয়ার কী ভাবে বেছে নিতে হবে, তা নিয়ে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞেরা। বক্তাদের মধ্যে ছিলেন সুবর্ণ বসু, প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও, এডুগাই অ্যান্ড ইন্ডিস্মার্ট গ্রুপ; উইলমা ফ্রান্সিস আলফান্সো, বিহেভিয়্যারাল সায়েন্টিস্ট/ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট; অনিন্দ্য ঘোষ, অ্যাসোসিয়েট পার্টনার, ডেটা সায়েন্স অ্যান্ড এআই, আইবিএম গ্লোবাল সার্ভিসেস; এবং রূপকথা সরকার, অধ্যক্ষা, লা মার্টিনিয়ার ফর গার্লস। সঞ্চালনায় ছিলেন ব্রততী ভট্টাচার্য, সেক্রেটারি জেনারেল/সিইও, শিক্ষায়তন ফাউন্ডেশন অ্যান্ড শ্রী শিক্ষায়তন স্কুল।
ব্রততী ভট্টাচার্য, সেক্রেটারি জেনারেল/সিইও, শিক্ষায়তন ফাউন্ডেশন অ্যান্ড শ্রী শিক্ষায়তন স্কুল, কো-চেয়ারপার্সন, সিআইআই এডুকেশন সাব কমিটি (ইআর)
আমাদের নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে- আমাদের শখের বিষয়গুলো কী কী? কীসেই বা আমরা পারদর্শী? কোনটাকে গুরুত্ব দেব-- নিজের শখ বা ভাল লাগাকে, নাকি পারদর্শিতাকে? নাকি দুটোকেই সঙ্গে নিয়ে এগোব? শখের বিষয় এবং পারদর্শিতার জায়গা যদি একে অন্যের সঙ্গে মিলে যায়, তবে খুবই ভাল। কিন্তু তেমনটা সব সময় হয় না।
ডিগ্রি পাওয়া মানেই কেরিয়ার তৈরি-- এখন আর তা সম্ভব নয়। নিজেকে গড়ে তুলতে হবে নিজেকেই। উন্নতি করতে হবে, অন্যদের থেকে শিখতেও হবে সর্বদা। আর নিজেকে এই ঘষেমেজে নেওয়াটা চলবে সারা জীবন।
সুবর্ণ বসু, প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও, এডুগাই অ্যান্ড ইন্ডিস্মার্ট গ্রুপ
আমাদের সময়ে কেরিয়ারের সুযোগ তেমন ছিল না। আমি পাইলট হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শেষমেশ হলাম চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। এবং তার পরে চলে এলাম হসপিট্যালিটি এডুকেশনে। এখনকার ছেলেমেয়েদের কাছে ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং, আইনের বাইরেও অজস্র বিকল্প কেরিয়ারের পথ খোলা রয়েছে।
কেরিয়ার নিয়ে আলোচনা করতে হলে অবশ্যই কোভিড পরিস্থিতির কারণে পড়ুয়াদের মধ্যে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তাকে গুরুত্ব দিতে হবে। আইআইটি-র পরীক্ষা পিছিয়ে গিয়েছে, আরও পিছতেও পারে। তা হলে কী করবে পরীক্ষার্থীরা? অনলাইন ক্লাস, কেরিয়ার বাছাই নিয়ে ধন্দ, অতিমারির জেরে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা-- সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে সদ্য স্কুল পাশ করা ছেলেমেয়েদের।
মগজ আর মনের লড়াই বাধলে কেরিয়ার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সকলেরই মনের কথা শোনা উচিত। এমন একটা জগতে আমরা বাস করছি, যেখানে একাধিক ক্ষেত্রে কার্যকরী পারদর্শিতার দাম অনেক বেশি।
উইলমা ফ্রান্সিস আলফান্সো, বিহেভিয়্যারাল সায়েন্টিস্ট/ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট
শুধু পথ দেখানোর প্রয়োজনেই কেরিয়ার কাউন্সেলরের সহায়তা জরুরি নয়। এক জন পড়ুয়া কী চায়, তা বোঝা এবং সেই অনুযায়ী তাকে সঠিক পথ বেছে নিতে সাহায্য করাও কাউন্সেলরের কাজ। এ কালের পড়ুয়াদের মগজে তথ্য এত বেশি ঠাসা যে, এই মূল্যায়নটা জরুরি।
তোমার পছন্দ, ব্যক্তিত্ব এবং প্রবণতা-- এই তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। সময়ের সঙ্গে পছন্দ পাল্টে যেতেই পারে। তখনটা কোনটা বেশি পছন্দের, তা বাছাই করাটা কঠিন হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সাইকোমেট্রি পরীক্ষা সঠিক পছন্দ বেছে নিতে সাহায্য করতে পারে। সুবর্ণ বসুর সহযোগিতায় আইবিএম এখন ইসিপিটি তৈরি করছে। এই টুলটি সাইকোলজি এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্ট্যালিজেন্সের (এআই) মিশেল।
তুমি কীসে দক্ষ, তা বুঝতে নিজেকে বুঝতে হবে। বড়দের কারও কথায় বিশ্বাস থাকলে তাঁর মতামত জেনে নিতে পার। এমন তো হতেই পারে, যে তুমি নতুন কিছু করতে চেষ্টাই করছ না। নতুনকে জানার চেষ্টা দমিয়ে রাখলে শক্তিই বা আসবে কোথা থেকে? সাহস রাখতে হবে। হিসেব কষে ঝুঁকিও নিতে হবে।
অনিন্দ্য ঘোষ, অ্যাসোসিয়েট পার্টনার, ডেটা সায়েন্স অ্যান্ড এআই, আইবিএম গ্লোবাল সার্ভিসেস
পছন্দ, ব্যক্তিত্ব এবং প্রবণতা-- তিনটে জিনিসকে এক করে এক জন পড়ুয়াকে সঠিক কেরিয়ার বেছে নিতে সাহায্য করবেন কী ভাবে? কখনও ঠিক কী চাই, তা জানা থাকে না। কখনও আবার কোনটা পছন্দ, তা নিয়ে ধন্দ থাকে। এইখানেই কাজে লাগবে আর্টিফিশিয়াল ইন্ট্যালিজেন্স (এআই)-- কেরিয়ারের বিভিন্ন বিকল্প চেনানো এবং গুরুত্ব অনুযায়ী তা সাজিয়ে নিতে। বিশেষত নিজের শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ বা ঝুঁকির জায়গাগুলো চিনে নিতে অসুবিধা হলে তা সহায়ক হবে।
এআই-নির্ভর কেরিয়ার পরামর্শদাতা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই এক জন পড়ুয়াকে সঠিক কেরিয়ারের পথে এগোতে সাহায্য করতে পারে। আইবিএম-এ আমরা এআই অ্যালগোরিদমের উপর ভিত্তি করে একটা অ্যাপ তৈরি করছি। তবে এআই টুল হোক বা কেরিয়ার কাউন্সেলর-- সঠিক তথ্য দেওয়াটা জরুরি। কারণ সেই তথ্যের ভিত্তিতেই মিলবে কাউন্সেলর বা এআই টুলের পরামর্শ।
রূপকথা সরকার, অধ্যক্ষা, লা মার্টিনিয়ার ফর গার্লস
যে প্রশ্নটা নিজেকে করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হল-- তুমি কীসে দক্ষ? আরও কিছু জরুরি প্রশ্ন হল-- যা করছি তা কেন করছি? সেই কাজে কি আমি খুশি? আমি কি অন্যদেরও খুশি করতে পারছি? শুধু কি উপার্জনই করছি, নাকি মানুষের জন্য কাজ করে আমি খুশি? নিজের মনের কথা শুনলে এবং নিজের কেরিয়ারে উন্নতির মানসিকতা থাকলে সাফল্য আসবেই।
আর ঠিক এইখানেই ভূমিকা থাকে প্রশিক্ষক, গুরু, স্কুল বা কলেজের। শিক্ষাবিদদের উচিত পড়ুয়াদের বিভিন্ন কাজে দক্ষতা তৈরি এবং তা উন্নত করার সুযোগ দেওয়া। পড়ুয়াদের পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন শখের কাজে অংশ নেওয়ার অনুমতি দিতে হবে স্কুল-কলেজগুলোকে।
বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে তোমায়। বিভিন্ন জিনিস শিখে নিজেদের দক্ষতার পরীক্ষাও করতে হবে। অসফল হলে কোনও ক্ষতি নেই। ফের নতুন কিছু করে দেখ, আগেরটার চেয়ে ভাল হবে। অন্যের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে পার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy