ফাইল চিত্র
প্রকল্প চালুর পরে এখনও তিন মাসও পেরোয়নি। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পড়ুয়াদের ঋণ কার্ড প্রকল্পে ইতিমধ্যেই গোটা রাজ্যে ২২ হাজারের কিছু বেশি আবেদন জমা পড়েছে। তবে এর মধ্যে প্রায় ৯৩% আবেদনপত্র বকেয়া পড়ে রয়েছে! আবেদনকারীদের অনেকেরই অভিযোগ, একটি বাদে বাকি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির থেকে তেমন সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। সমবায় ব্যাঙ্কগুলিও গড়মসি করায় আবেদনপত্রগুলির অনুমোদন বকেয়া থাকছে।
স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটির (এসএলবিসি) একটি সূত্রের দাবি, আগে শুধু পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) সঙ্গে রাজ্য সরকারের দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি হয়েছিল। সম্প্রতি ইউকো ব্যাঙ্কের সঙ্গেও সেই প্রক্রিয়া সাঙ্গ হয়েছে। এই চুক্তির জন্য সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির পরিচালন পর্ষদের সায় জরুরি। ইন্ডিয়ান এবং স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া চুক্তি সংক্রান্ত প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, “ছ’টি ব্যাঙ্ক এ ব্যাপারে আগ্রহী। শীঘ্রই তাদের সঙ্গেও চুক্তি হয়ে যাবে। তখন সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে।”
চলতি ‘সমস্যা’ কাটাতে শনিবার ব্যাঙ্ক ও সমবায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ, জেলা শাসক এবং সমবায় দফতরের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। বৈঠকে মুখ্যসচিবের নির্দেশ, যোগ্য আবেদনকারীর আবেদন অন্যায্য ভাবে বাতিল করে দেওয়া যাবে না। সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে এ ব্যাপারে আরও তৎপর হতে হবে। আরও বেশি করে এগিয়ে আসতে হবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকেও।
গত ৩০ জুন পড়ুয়াদের জন্য ঋণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকে অনলাইনে আবেদন-প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষের অনেকেই জানাচ্ছেন, সাধারণ পড়াশোনার ঋণের ক্ষেত্রে চার লক্ষ টাকা পর্যন্ত গ্যারান্টার বা কোনও বন্ধক লাগে না। সাত লক্ষ টাকা পর্যন্ত শুধু গ্যারান্টার দরকার হয়। তার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে অবশ্য দু’টিই প্রয়োজন হয়। প্রশাসনের একটি সূত্রের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার নিজে গ্যারেন্টার হওয়ায় সেই প্রশ্নগুলি থাকছে না। তার পরেও কেন ব্যাঙ্কগুলি আগ্রহ দেখাচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
এসএলবিসি-র তরফে এক ব্যাঙ্কই কর্তা জানান, চলতি মাসের মধ্যে বেশির ভাগ ব্যাঙ্কের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হয়ে যাওয়ার কথা। তার পরেই জট কেটে যাবে। তবে রাজ্য সরকার গ্যারান্টার হওয়ায় ধরে নিতে হবে কোনও ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে সরকারই তার দায়িত্ব নেবে। তবুও নন পারফর্মিং অ্যাসেট (এনপিএ) আটকাতে কিছু বিধি মানতে হয়। গ্যারান্টারের বাদে বাকি যোগ্যতা পূরণ করতে পারলে ঋণ পেতে সমস্যা হবে না।
জেলা প্রশাসনগুলির অনেকেই জানাচ্ছে, বেশির ভাগ ব্যাঙ্ক ঋণ না-দেওয়ায় সেই আবেদনপত্রগুলি সমবায় ব্যাঙ্কে পাঠানো হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তারাও আবেদনপত্র মঞ্জুর করতে চাইছে না। পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর বা আবেদনের সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা বাতিল করে দিচ্ছে। আবার কোনও সমবায় জানতে চাইছে ঋণ মঞ্জুরের পরের মাস থেকেই গ্রাহক সুদ কাটাতে রাজি কি না। যদিও এ দিনের বৈঠকে সমবায় সচিব এম ভি রাও-ও সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন। বঙ্গীয় গ্রামীণ ব্যাঙ্কের অফিসার্স সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস মহাপাত্র জানিয়েছেন, ১২টি জেলার ৫৮৭টি শাখাকে দ্রুত আবেদনপত্রগুলি যাচাই করে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy