নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত অয়ন শীল। ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত অয়ন শীলের পুত্র অভিষেক শীলকে হাজিরার নির্দেশ দিল আদালত। ইডির চার্জশিটে তাঁর নাম রয়েছে। চার্জশিটে অয়নের যে সংস্থার নাম করেছে ইডি, তারই ডিরেক্টর অভিষেক। তাই সংস্থার লেনদেন সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে আদালতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
অয়ন-পুত্রকে আগামী সোমবার ১৯ জুন আদালতে হাজিরা দিতে হবে। তাঁর আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট দিনেই তিনি বিচার ভবনে হাজিরা দিতে যাবেন।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অয়নের স্ত্রী কাকলি এবং পুত্রকে এর আগে তলব করেছিল ইডি। দীর্ঘ ক্ষণ ইডি দফতরে তাঁদের জেরা করা হয়। এপ্রিলের সেই জেরার পর ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন অভিষেক। সে সময় তাঁকে অয়নের সংস্থার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘আমাকে যে কোম্পানির ডিরেক্টর করা হয়েছে, তা আমি জানতাম না। ২০১৩ সালে যখন কোম্পানি তৈরি হয়, আমি তখনও নাবালক।’’ ইডি দফতরে সে দিন প্যান কার্ড এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় নথি জমা দিয়ে এসেছিলেন অয়ন-পুত্র।
সেই সংস্থার সূত্রেই আদালতে হাজিরা দিতে হবে অয়ন-পুত্রকে। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অয়নের বিরুদ্ধে ১০০ কোটির দুর্নীতির অভিযোগ করেছে ইডি। তদন্তে জানা গিয়েছে, পরিবারের সদস্য, বন্ধু এবং কর্মচারীদের নথি ব্যবহার করে ৫০টির বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন অয়ন। তবে টাকার হিসাব রাখতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির নিয়ন্ত্রণ রেখেছিলেন নিজের কাছেই।
ইডির দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অপর ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করে জানা গিয়েছে, ২০১২ এবং ২০১৪ সালের টেট-এ চাকরি দেওয়ার নামে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলেছিলেন অয়ন। পরে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মাধ্যমে চাকরি পাইয়ে দিতে অয়ন হুগলির বলাগড়ের ধৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষ এবং পার্থ-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়কে টাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ইডির তদন্তে উঠে এসেছে অয়নের ঘনিষ্ঠ শ্বেতা চক্রবর্তীর নামও। ইডি আধিকারিকদের দাবি, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঝামেলা হওয়ার কারণে বাড়ি ছেড়েছিলেন অয়ন-ঘনিষ্ঠ শ্বেতা। এর পর শ্বেতাকে থাকার জন্য চুঁচুড়ার ফ্ল্যাট ব্যবহার করতে দেন অয়ন। ইডি চার্জশিটে দাবি করেছে, ওই ফ্ল্যাট শ্বেতাকে উপহার দেবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শ্বেতার বয়ানে সেই কথা উঠে এসেছে। তবে শ্বেতাকে চেনেন না বলে ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে দাবি করেছিলেন অভিষেক।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে অয়নের বাড়ি এবং অফিসে টানা তল্লাশির পর তাঁকে গ্রেফতার করেছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে চাকরির পরীক্ষার একাধিক উত্তরপত্র ছাড়াও উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু অ্যাডমিট কার্ড এবং অন্যান্য নথিও। ইডি সূত্রে দাবি, অয়নের কাছ থেকে যে সমস্ত ওএমআর শিটের প্রতিলিপি মিলেছে, সেগুলি পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষার। অয়নের বাড়িতে ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথিও পাওয়া গিয়েছে। টেট দুর্নীতির পাশাপাশি পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy