শুভেন্দু এবং অভিষেক বিভিন্ন মঞ্চে একে অপরকে আক্রমণ করেছেন বহুবার। ফাইল চিত্র।
কয়লা পাচার মামলায় ‘ফেরার’ অভিযুক্তের সঙ্গে আট মাস আগে ফোনে কথা বলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই ফোনে শুভেন্দু ওই অভিযুক্তকে বলেছেন, তাঁর কেসটা তিনি দেখে দেবেন। সেই কথাবার্তার ‘অডিয়ো ক্লিপিং’ তিনি শুনেছেন। প্রয়োজনে আদালতে জমা দিতে পারেন। শুক্রবার ইডির জেরার পর এমনই দাবি করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেকের ওই মন্তব্যের কিছু পরে একটি জনসভায় অভিষেককে সেই অভিযোগের জবাব দেন শুভেন্দু। তবে বিষয়টিকে তিনি ‘অপ্রাসঙ্গিক’ বলে আখ্যা দেন। তবে অভিষেকের বক্তব্যের ‘অডিয়ো ক্লিপিং’ প্রসঙ্গে তিনি কিছু বলেননি।
প্রত্যাশিত ভাবেই অভিষেকের দাবি নিয়ে আলোড়ন উঠেছে। কারণ, নাম না করলেও অভিষেকের কথায় স্পষ্ট যে, তিনি কয়লা পাচার মামলায় ‘ফেরার’ বিনয় মিশ্রের কথা বলেছেন। অভিষেকের বক্তব্য, এক সাংবাদিকের কাছে ওই কথোপকথনের রেকর্ড আছে। সেই সাংবাদিক অভিষেককে সেটি শুনিয়েছেন। অভিষেকের কথায়, ‘‘আমি এই কথাটা জোর দিয়ে বলছি। যদি এতে শুভেন্দু অধিকারীর মানহানি হয়, তা হলে তিনি আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। আমি আদালতে ওই ফোনের অডিয়ো ক্লিপিং জমা দিয়ে দেব।’’
শুক্রবার কয়লা পাচারের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠানো হয়েছিল অভিষেককে। সেখান থেকে বেরিয়েই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অভিষেক। তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে ৬০ ঘণ্টা জেরা করেছেন। যার নিট ফল শূন্য। আর যাদের ক্যামেরার সামনে নোটের তোড়া নিতে দেখা গেল, তাদের ডেকে পাঠানো হবে না?’’ নাম না করলেও এই আক্রমণের লক্ষ্য যে বিজেপির বিধায়ক শুভেন্দু, তা স্পষ্ট ছিল। তবে এর কিছু পরে আর রাখঢাক না রেখে অভিষেক নাম করেই আক্রমণ করেন শুভেন্দুকে। কয়লা পাচারকারীর সঙ্গে শুভেন্দুরও যোগাযোগ রয়েছে অভিযোগ করে অভিষেক জানান, তাঁর হাতে এ ব্যাপারে প্রমাণও আছে। সেই প্রমাণের কথা বলতে গিয়েই অভিষেক জানান, কয়লা পাচার মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন যে মূল অভিযুক্ত, তাঁর সঙ্গে আট মাস আগে কথা হয়েছিল শুভেন্দুর।
শুভেন্দুকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘আমি নাম করে বলছি, কোর্টে আমার নামে অভিযোগ করুক! আমি ওই ক্লিপিং জমা দিয়ে দেব।’’ প্রসঙ্গত, কয়লা পাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত বিনয় এখনও পলাতক। অভিষেকের দাবি, ওই ক্লিপিংয়ে শুভেন্দু অভিযুক্তকে বলেছেন, তিনি মামলাটি সামলে নেবেন। অর্থাৎ, তিনি অভয় দিয়েছেন কয়লা পাচারে মূল অভিযুক্তকেই।
একদা যুব তৃণমূলে এক সঙ্গে কাজ করেছেন অভিষেক-শুভেন্দু। তবে সেই সম্পর্কের অবনতি হয় অভিষেক যুব তৃণমূলের সভাপতি হওয়ার পর। পরে বিজেপিতে যোগ দিয়েই অভিষেকের বিরুদ্ধে সরাসরি স্লোগান দেন শুভেন্দু। প্রথমে নাম না করে এবং পরে নাম করে ‘তোলাবাজ ভাইপো’ বলে আক্রমণ করেন অভিষেককে। পাল্টা অভিষেকও ‘ঘুষখোর’, ‘বেইমান’, ‘গদ্দার’ বলে শুভেন্দুকে বিভিন্ন জনসভা থেকে আক্রমণ করেন। কিন্তু এই ফোনালাপের কথা এর আগে অভিষেকের কাছে শোনা যায়নি। এখন দেখার, শুভেন্দু এবং বিজেপি নেতারা কী ভাবে ওই আক্রমণের মোকাবিলা করেন। অভিষেকের কথা স্পষ্ট যে, ‘অপ্রাসঙ্গিক’ বলে শুভেন্দু বিষয়টি এড়িয়ে গেলে তৃণমূল রাজনৈতিক আক্রমণের মাত্রা আরও বাড়াবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy