নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে আসছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
৯ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট পর সিবিআই দফতর থেকে বেরোলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়েই অভিষেক বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের নির্যাস আস্ত একটা অশ্বডিম্ব’। এর পাশাপাশি তিনি এক দিকে যেমন নিশানা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে, অন্য দিকে, তাঁর আক্রমণের মুখে পড়লেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিজেপি নেতৃত্বকে আক্রমণ করার পাশাপাশি, চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দিকে। শনিবার রাতে নিজাম প্যালেসের বাইরে এসে অভিষেক বলেন, ‘‘আমার কাছে বেশ কিছু নাম জানতে চাওয়া হয়েছিল। আমি তাঁদের চিনি না। যাঁদের নাম বলা হয়েছিল, তাঁদের বেশির ভাগই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার। কেউ কেউ আবার মুর্শিদাবাদের। ওই সময় আমাদের দলের তরফে কে দায়িত্বে ছিল ওই দুই জেলায়? সবাই জানে। তাঁকে কেন ডাকা হচ্ছে না?’’
রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় শনিবার অভিষেককে তলব করেছিল সিবিআই। সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে নিজাম প্যালেসে (কলকাতায় যেখানে সিবিআই দফতর রয়েছে) পৌঁছন অভিষেক। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের হাজিরা ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল সিবিআই দফতরে।
ধর্মতলায় শহিদ মিনারের সভা থেকে অভিষেক দাবি করেছিলেন, হেফাজতে থাকার সময় মদন মিত্র, কুণাল ঘোষকে তাঁর নাম নিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পর পরেই রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুব নেতা কুন্তল ঘোষ দাবি করেন যে, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে ‘চাপ’ দিচ্ছে ইডি, সিবিআই। এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠি দেন কুন্তল। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়েও চিঠি পাঠান হেস্টিংস থানাতেও। তার পরে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, প্রয়োজনে সিবিআই বা ইডি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। পরে একই নির্দেশ বহাল রাখেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন অভিষেক। এর মধ্যেই শনিবার অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
অভিষেককে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন যে, ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচি বন্ধ করতেই অভিষেককে নোটিস পাঠানো হয়েছে। শনিবার তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘কুন্তলের চিঠির প্রেক্ষিতে যদি অভিষেককে ডাকা হয়। তা হলে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের চিঠির ভিত্তিতে শুভেন্দু অধিকারীকে কেন তলব করা হবে না।’’ অভিষেককে সিবিআই তলব নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করেছে বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার শুক্রবার টুইটারে লেখেন, ‘‘বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এ বার ঘুঘু তোমার বধিব পরান।’’ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে সিবিআই তলব করতে বাধ্য হয়েছে। ওঁর উচিত, তদন্তে সহযোগিতা করা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy