ধর্নামঞ্চে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র ।
কলকাতায় এসে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি জানিয়েছেন, তিনি তৃণমূলের সঙ্গে কথা বলতে রাজি। ধর্নামঞ্চ থেকে অভিষেক বলেন, ‘‘দু’দিন আগে আমাদের ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বার করে দিয়েছিল। এর মধ্যেই বাংলায় এসে বাংলার মানুষের কাছে মাথা নত করতে হল। আমি ওঁকে বলছি, রাজভবনে আসুন। আমরা সেখানে আপনার সঙ্গে কথা বলব। আমাদের তাতে কোনও সমস্যা নেই।’’
সুকান্তের নম্বর প্রকাশ করে তাঁকে ফোন করার কথা বললেও অভিষেক ধর্নামঞ্চ থেকে মানুষকে অনুরোধ করেছেন, কেউ যাতে ফোন করে গালিগালাজ না করেন। অভিষেকের কথায়, ‘‘ওঁকে সকলে ফোন করুন। ভদ্র ভাবে বলুন টাকা আনিয়ে দেওয়ার কথা। বার বার বলছি, ফোন করে ভদ্র ভাবে কথা বলুন।’’
যে ২০ লক্ষ মানুষ ১০০ দিনের কাজ করেও টাকা পাননি বলে তৃণমূলের অভিযোগ, তাঁদের দলে দলে সুকান্তকে ফোন করার ডাক দিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা সকলে এই নম্বরে ফোন করে বলুন, আপনার এত ক্ষমতা, আপনি বললেই টাকা চলে আসবে। তাহলে আপনি দয়া করে আমাদের টাকাটা আনিয়ে দিন। দু’বছর ধরে আমাদের বেতন আটকে আছে।’’
অভিষেক বলার পরেই মাইক নিয়ে মঞ্চে দাঁড়ান রাজীব। তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে সুকান্তের দু’টি নম্বর রয়েছে। জানি না এখন এই নম্বরগুলি সক্রিয় কি না। যদি ফোন না লাগে, তবে জনপ্রতিনিধি হিসাবে ওঁরই কর্তব্য নম্বর প্রকাশ্যে আনার এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের প্রশ্নের জবাব দেওয়া।’’ এর পরেই দু’টি ফোন নম্বর পড়ে শোনান রাজীব। শ্রোতাদের তা লিখেও নিতে বলেন।
সুকান্ত মজুমদারের ফোন নম্বর প্রকাশ করা হল তৃণমূলের ধর্নামঞ্চ থেকে। অভিষেক ধর্নামঞ্চে উপস্থিত আর এক তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন নম্বর প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ করেন। রাজীব যে হেতু এক সময় বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন এবং বেশ কিছু দিন সেই দলে ছিলেন, তাই তাঁর কাছে রাজ্য সভাপতির ফোন নম্বর থাকা স্বাভাবিক। সেই নম্বরই ধর্নামঞ্চে প্রকাশ করে দিতে বলেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘রাজীবদাকে খুব যত্ন করে বিজেপিতে নিয়ে গিয়েছিল, আমি ওঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনার কাছে সুকান্ত মজুমদারের ফোন নম্বর আছে? রাজীবদা বললেন, দু’টি নম্বর আছে।’’
ধর্নামঞ্চ থেকে অডিয়ো শোনালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, অডিয়োতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের গলা শোনা গিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘২০০০ কোটি টাকা পড়ে আছে। সুকান্ত মজুমদার একটা ফোন করবে, টাকা চলে আসবে।’’ অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
দিল্লি থেকেই বৃহস্পতিবারের ‘রাজভবন চলো’র ডাক দিয়েছিলেন অভিষেক। কিন্তু রাজ্যপাল তার আগেই কলকাতায় থেকে কেরল চলে যান। সেখান থেকে তিনি যান দিল্লি। দিল্লি থেকে বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি দেখে আবার দিল্লিতেই ফিরে যান বোস। বৃহস্পতিবারের মিছিলের শেষে অভিষেক আচমকাই ঘোষণা করে দেন, তিনি ধর্নায় বসবেন। যা তৃণমূলের পূর্বঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে ছিল না। মূল ধর্না মঞ্চের পাশে অভিষেকের রাত্রিবাসের জন্য তাঁবু বানানো হলেও মূল মঞ্চের সামনে কোনও পোক্ত ছাউনি ছিল না। রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে শুক্রবার সেই ছাউনির বন্দোবস্ত হয়েছে। মঞ্চে রাতে যে নেতৃত্ব থাকবেন, তাঁদের জন্য মঞ্চ পর্দা দিয়ে ঘেরার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
তৃতীয় দিনে পা দিল রাজভবনের সামনে তৃণমূল নেতৃত্বের ধর্না কর্মসূচি। রাজভবনের অদূরে কত দিন ধর্না-অবস্থান চালাবেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? শুক্রবার, ধর্নার দ্বিতীয় দিনে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস যদি পুজোর পরেও কলকাতায় ফেরেন, তা হলে তিনি সেই পর্যন্ত ধর্নায় বসে থাকবেন! পুজোর দিনগুলিতেও। শুক্রবারের ধর্না মঞ্চের পরিপার্শ্ব দেখে স্পষ্ট, তৃণমূলও ধরে নিচ্ছে টানা ধর্না চালাতে হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy