Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Food Vlog

ফুড ভ্লগ দেখে মায়ের খোঁজ

চলতি সপ্তাহে হাজরার মোড়-এ একটি বিরিয়ানির দোকানে ভিডিয়ো শুট করতে গিয়েছিলেন কমলিকা। সেখানে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে দেখেন স্থানীয় এক মহিলার সঙ্গে মারপিট করতে।

food

—প্রতীকী ছবি।

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত 
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:২৮
Share: Save:

ইউটিউবার কমলিকা দে-র ফুড ভ্লগ দেখে মাকে খুঁজে পেলেন খড়্গপুরের তরুণ জগদীশ কুমার। ৩১ অক্টোবর বিকেলে পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান রাজেশ্বরী পুষ্পলতা। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। কলকাতার এক জনপ্রিয় ফুড ভ্লগারের ভিডিয়োয় মাকে দেখতে পান জগদীশ। ফেসবুক মেসেঞ্জারে কমলিকাকে যোগাযোগ করেন তরুণ। বৃহস্পতিবার খিদিরপুর থেকে মাকে খুঁজে পান জগদীশ।

চলতি সপ্তাহে হাজরার মোড়-এ একটি বিরিয়ানির দোকানে ভিডিয়ো শুট করতে গিয়েছিলেন কমলিকা। সেখানে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে দেখেন স্থানীয় এক মহিলার সঙ্গে মারপিট করতে। দ্রুত সেই ভিডিয়ো তুলে ধরেন ফেসবুকে। সেই মহিলাকে মারপিট করতে দেখে অনেকে কটূ মন্তব্য করেন ফেসবুকে। হাসিঠাট্টাও হয়। বন্ধুদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও ছড়িয়ে পড়ে সেই ভিডিয়ো।

খড়্গপুরে তখন অন্য ছবি। মাকে খোঁজার জন্য বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার দিচ্ছেন ছেলে জগদীশ। পুলিশের কাছেও গিয়েছিলেন। হঠাৎ এক দিন শোনেন হাওড়ায় ঘুরতে দেখা গিয়েছে তাঁর মাকে। গিয়ে দেখেন অন্য এক জন মহিলা। হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। কয়েক দিনের মধ্যে এক বন্ধুর সাহায্যে ইউটিউবে একটি ভিডিয়ো দেন জগদীশ। মাকে খুঁজে না পাওয়ার ঘটনা সেখানে তুলে ধরেন।

হঠাৎ এক দিন ফেসবুকে জগদীশ মায়ের সেই ভিডিয়ো খুঁজে পান। ফুড ভ্লগার কমলিকার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কমলিকা তখন দ্বিতীয় একটি পোস্ট দেন জগদীশের নম্বর দিয়ে। তিনি লেখেন, ‘‘এই মহিলাকে দেখতে পেলে দ্রুত যোগাযোগ করুন এই নম্বরে।’’ বৃহস্পতিবার সকালে খিদিরপুরে দেখা যায় সেই মহিলাকে। বিকেলের মধ্যে জগদীশ এসে মাকে খুঁজে পান।

আনন্দবাজারকে জগদীশ বলছিলেন, ‘‘মা বহু দিন ধরেই অবসাদে ভুগছিলেন। অ্যাংজ়াইটি ও ডিপ্রেশনের রোগী। ৩১ অক্টোবর আমাদের কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলেন মা। পুলিশকে জানাই। নিজেরাও অনেক খুঁজি। কিন্তু কোনও ভাবে মাকে পাচ্ছিলাম না।’’ যোগ করেন, ‘‘কমলিকাদির ভ্লগে দেখতে পাই মায়ের ভিডিয়ো। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার দু’দিনের মধ্যে মাকে খুঁজে পাই। কমলিকাদিকে বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ।’’

কমলিকা পেশায় সফ্‌টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। কাজের ফাঁকে ভ্লগিংয়ের শখ তাঁর। কমলিকা বলছিলেন, ‘‘ফেসবুকে জগদীশের ফোন নম্বর দিয়ে সেই মহিলার নিখোঁজ হওয়ার পোস্ট দেওয়ার পরে আমার এক ফলোয়ারই তাঁকে দেখতে পান খিদিরপুরে। হাজরা থেকে খিদিরপুর গেলেন কী করে তা আমাদের কাছেও অজানা।’’ যোগ করেন, ‘‘অনেকেই সমাজমাধ্যম নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। কিন্তু এই সমাজমাধ্যমই এক জন মাকে তাঁর পরিবার ফিরিয়ে দিল।’’

ভিডিয়ো করার সময় কমলিকাও বুঝতে পারেননি শেষটা এত সুন্দর হতে চলেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Missing woman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy