ঘুষ দিয়ে চাকরি না পাওয়ার কারণে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ এক তরণী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েছেন তিনি। অথচ চাকরি হয়নি। যিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, চাকরি চাইতে গেলে তিনিই একাধিক বার ধর্ষণ করেন। সে কথা বাড়ির লোককে বলে দেওয়ার কথা বলতেই চাকরিপ্রার্থী তরুণীকে দেওয়া হয় বিয়ের প্রতিশ্রুতি। পরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়া ওই তরুণীকে নির্মম ভাবে মারধর করা হয়। আঘাত করা হয় তাঁর পেটে ও মুখে। যার জেরে হয় গর্ভপাত! বর্ধমান তৃণমূলের এক অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে সম্প্রতি এমনই একাধিক অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন এক তরুণী। আদালতের কাছে তাঁর দাবি, প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিনি। আবেদনে তরুণী জানিয়েছেন, এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত হোক। একই সঙ্গে চাকরির জন্য দেওয়া ১০ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। হাই কোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, মামলাটি গত ১৮ অগস্ট গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এখনও শুনানির দিন ক্ষণ ঠিক হয়নি।
অভিযুক্ত ওই তৃণমূল নেতার সঙ্গে যদিও কোনও ভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তৃণমূলের মুখপাত্র তথা বর্ধমানের নেতা দেবু টুডু বলেন, ‘‘এই রকম ঘটনার কথা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। ঘটনা সত্যি হলে, আইন নিজের পথেই চলবে। আমাদের কিছু বলার নেই। দল এই বিষয়ে অভিযুক্তের পাশে থাকবে না। অন্যায় করলে কোনও রকম সাহায্যও করবে না দল।’’ অন্য দিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক মাস আগেই ওই তরুণী জেলার পুলিশ সুপারের কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ করেছিলেন।
হাই কোর্টে জানানো আবেদনে তরুণী জানিয়েছেন, গত বছরের ৩১ মার্চ পূর্ব বর্ধমানের এক তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি টাকার বিনিময়ে তাঁকে চাকরি দেওয়ার কথা বলেন। ওই তরুণীর দাবি, তাঁকে বলা হয়েছিল, ১০ লক্ষ টাকা দিলে দু’মাসের মধ্যে স্কুলের গ্ৰুপ-সি কিংবা গ্ৰুপ-ডি পদে চাকরি দেওয়া হবে। তরুণীর আরও দাবি, সেই মতো তিনি ওই অঞ্চল সভাপতিকে ১০ লক্ষ টাকা দেন। তিন মাস পেরিয়ে গেলেও স্কুলে চাকরি করিয়ে দেননি ওই তৃণমূল নেতা, এমনটাই আদালতে জানিয়েছেন ওই তরুণী। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, টাকা ফেরত চাইলে গেলে ওই নেতা তাঁকে একাধিক বার ধর্ষণ করেন। তরুণীর দাবি, চলতি বছরের মার্চে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। তাঁর আরও দাবি, চাপের মুখে তখন বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন ওই নেতা। যদিও তিনি পরে ওই প্রতিশ্রুতি পালন করেননি বলেই তরুণী জানিয়েছেন। অভিযোগ, উল্টে ওই তরুণীর গর্ভস্থ সন্তানকে মারধর করে ‘নষ্ট’ও করে দেন ওই তৃণমূল নেতা।
তরুণী আদালতে করা আবেদনে জানিয়েছেন, গত জুন মাসে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়ে তাঁর পেটে লাথি মারেন ওই তৃণমূল নেতা। তাতেই হয় গর্ভপাত। ওই তরুণীর আইনজীবীর দাবি, এর পর তাঁর মক্কেল অভিযোগ জানান আউশগ্রাম থানায়। ধর্ষণের অভিযোগ-সহ একাধিক ধারায় মামলাও রুজু করে পুলিশ। কয়েক দিন পরে মঙ্গলকোট থানায় মামলাটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের তরফে কোনও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া হয়নি। হাই কোর্টে জানানো আবেদনে ওই তরুণীর আর্জি, অবিলম্বে রাজ্য পুলিশের ডিজি এই বিষয়ে পদক্ষেপ করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy