Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
sainthia

School Dropout: খেলাকে সঙ্গী করে বিদ্যালয়ে ফিরল তরুণী

খেলা নিয়ে মাতামাতি করলে লেখাপড়ার ক্ষতি হয় বলে অনেক অভিভাবকের ধারণা। তার যেন মূর্তিমান জবাব তালাবিটি মুর্মু।

বল পায়ে তালাবিটি।

বল পায়ে তালাবিটি। নিজস্ব চিত্র।

অর্ঘ্য ঘোষ
সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:৩৮
Share: Save:

খেলা নিয়ে মাতামাতি করলে লেখাপড়ার ক্ষতি হয় বলে অনেক অভিভাবকের ধারণা। তার যেন মূর্তিমান জবাব তালাবিটি মুর্মু। স্কুলছুট হয়ে যাওয়ার পরেও খেলাধুলোর সৌজন্য ফের শিক্ষাঙ্গনে ফিরেছেন তিনি। লেখাপড়া করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতেও শুরু করেছেন।

সাঁইথিয়ার বাগডোলা গ্রামে হতদরিদ্র পরিবার। মজুরি খেটে পাঁচ সদস্যের সংসার চলে। পড়াশোনার পাশাপাশি তালাবিটিকেও বাবা-মায়ের সঙ্গে মজুরি করতে হয়। তারা তিন ভাইবোন। তালাবিটিই বড়। পরের ভাই সুকুল দশম শ্রেণির পরে স্কুলছুট হয়ে যায়। ছোট ভাই বোদিশোল দশম শ্রেণির ছাত্র। তালাবিটি প্রথমে ২০১৫ সালে স্থানীয় দেড়িয়াপুর অঞ্চল হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিকে অকৃতকার্য হয়।

এমন সময়ে জীবনের বাঁক বদল ঘটিয়ে দিয়েছে স্থানীয় একটি স্পোর্টস অ্যাকাডেমি। ২০০৮ সাল থেকে ওই ক্রীড়া সংস্থা বিনা খরচে ফুটবল-সহ বিভিন্ন খেলাধুলোর প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। বর্তমানে ৪৫ জন মেয়ে এবং ২৫ জন ছেলে প্রশিক্ষণ নেয়। মেয়েদের মধ্যে ৩৭ জন আদিবাসী সম্প্রদায়ের। এই সব দেখে তালাবিটিও ২০১৭ সালে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগ দেন। তার পরেই আসতে শুরু করে সাফল্য। জেলা অ্যাথলেটিক ক্লাব মিটে শটপার্ট থ্রো এবং দীর্ঘলম্ফনে পর পর তিন বছর রুপো এবং ব্রোঞ্জ পদক পান। জেলা পুলিশ আয়োজিত ফুটবল প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। খেলাধুলোর পাশাপাশি পড়াশোনায় অনুপ্রাণিত করেন ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রশিক্ষক পেশায় শিক্ষাবন্ধু বুদ্ধদেব চৌধুরী। তিনি কোটাসুর রবীন্দ্র মুক্তবিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর পাশাপাশি পড়িয়েছেনও। বাংলা পড়ানোর দায়িত্ব নেন মাঠপলশা হাইস্কুলের শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ গড়াই। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন বিধায়ক নীলাবতী সাহা।

এই সবের ফলে ২০২১ সালে ওই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন তালা। এই উত্তরণ আরও অনেককেও স্কুলে ফিরিয়েছে। ওই গ্রাম থেকে স্কুলছুট হয়ে যাওয়া অঞ্জলি হাঁসদা, সোনামণি মুর্মুরাও ভর্তি হয়েছে মুক্ত বিদ্যালয়ে। বুদ্ধদেববাবু বলছেন, ‘‘অনেক অভিভাবকের ধারণা থাকে খেলাধুলো করা মানে লেখাপড়া কিংবা কাজের ক্ষতি করা। সেই ধারণায় অনেকে ছেলেমেয়েকে খেলাধুলো থেকে নিরুৎসাহিত করেন। সেটা ঠিক নয় ওই মেয়েটি দেখিয়ে দিয়েছে।’’

তালাবিটির বাবা দুগোয় মুর্মু, পরেশ হাঁসদারা মানছেন, ‘‘খেলাধুলো করেও যে লেখাপড়া আর বাড়ির কাজ করা সম্ভব বুঝিনি।’’ আর তালাবিটি বলছেন, ‘‘স্কুলছুটের পরে মুনিস খাটতে শুরু করেছিলাম। আবার পড়াশোনার কথা ভাবতে পারিনি। কোচিংয়ের স্যর ভাবনাটা মাথায় ঢুকিয়ে দেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

sainthia School Dropout
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy