Advertisement
০৯ অক্টোবর ২০২৪
Ration Distribution Case

হয়েছে ‘গোপন’ বৈঠক, দাবি শুভেন্দুর

শুভেন্দু বলেন, “জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হওয়ার পর রবিবার সন্ধ্যায় মমতার বাসভবনে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে সেটা জানা থাকলেও আমি প্রকাশ্যে বলব না।”

Suvendu Adhikari and Mamata Banerjee

শুভেন্দু অধিকারী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:২৪
Share: Save:

রেশন বণ্টন কেলেঙ্কারিতে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের উপর লাগাতার চাপ বাড়াচ্ছে বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে রবিবার প্রশ্ন তুলেছিলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী কবে গ্রেফতার হবেন? এক ধাপ এগিয়ে সোমবার তিনি দাবি করলেন, জ্যোতিপ্রিয়ের গ্রেফতারির পরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ‘গোপন’ বৈঠক হয়েছিল। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আরও অভিযোগ তুলেছেন, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর সমন পাওয়া ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর দুই অধিকর্তাকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহালেরা মনে করেছেন, শুভেন্দুর ইঙ্গিত ছিল, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবা অমিত ও মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। শুভেন্দুর অভিযোগের জবাব দিতে দেরি করেনি তৃণমূল। বাংলার শাসক দলের পাল্টা, এ সব অবান্তর কথা। বরং কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে কয়েক জন ‘চোর’কেই পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থাকরা হয়েছে।

বিধাননগরে বিজেপির নতুন দফতরে এ দিন শুভেন্দু বলেন, “জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হওয়ার পর রবিবার সন্ধ্যায় মমতার বাসভবনে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে সেটা জানা থাকলেও আমি প্রকাশ্যে বলব না।” তবে তিনি দাবি করেছেন, সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মমতা, অভিষেক, রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয় এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। বিরোধী দলনেতার বলেন, “বৈঠকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার একটি ল্যাপটপ নিয়ে ঢুকেছিলেন। অনেক রাত পর্যন্ত সেই বৈঠক চলেছিল। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে ইডির সমন পাওয়া লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস কোম্পানির দুই অধিকর্তা এখন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে থাকবেন। তাঁদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির বাইরে বসেছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি সিসিটিভি। সেই সঙ্গে পুলিশি পাহারা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, অভিষেক এখন থেকে মমতার সমান নিরাপত্তা পাবেন।”

প্রত্যাশিত ভাবেই শুভেন্দুর দাবিকে সমর্থন করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী তো আগে থেকেই তদন্তের গতিবিধি সম্পর্কে আঁচ করতে পারেন। উনি আগের দিনই বলেছেন, অভিষেকের শরীর খারাপ। উনি আঁচ করতে পারছেন, তদন্তের অভিমুখ কোন দিকে। তাই রাজ্য পুলিশের ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে ভাইপোকে আগলাতে চাইছেন।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি হুঁশিয়ারি, অতীতেও রাজ্য পুলিশ সংবিধান বহির্ভূত ভাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে বাধা দিয়েছে। এ বারেও তেমন কিছু ঘটলে, তাঁরা তদন্তকারীদের পরামর্শ দেবেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হতে। সুকান্তের তির্যক মন্তব্য, “পরবর্তী মন্ত্রিসভার বৈঠক কোথায় হবে, তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছি। শুনছি আরও কিছু মন্ত্রী জেলে যেতে পারেন। কলকাতায় বড় পুজো করেন, এমন মন্ত্রীরও জেলে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।”

রাজ্য বিজেপির এই সব দাবি ও কটাক্ষকে তেমন গুরুত্বই দিচ্ছে না শাসক দল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘একেবারে অবান্তর কথা। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে অধিকারীদের মতো কয়েক জন চোরকেই পাহারা দিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি বলুন, কাঁথি পুরসভায় টাকা দেওয়া নিয়ে সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ কোথায় হয়েছিল।’’

মমতাকে নিশানা করে শুভেন্দু রবিবার বলেছিলেন, শিক্ষামন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী জেলে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী কবে জেলে যাবেন, বাংলার মানুষ জানতে চায়। সেই সুরেই এ দিন সুকান্ত বলেন, “যে ভাবে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি হচ্ছে, বিশেষ করে আর জি কর হাসপাতালে যে লাগাতার বিশৃঙ্খলা চলছে, তা জানিয়ে রাজ্যপালকে চিঠি লিখেছি। এর সঠিক তদন্ত হলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর জেলে যাওয়া কেউ আটকাতে পারবে না।”

অন্য বিষয়গুলি:

Suvendu Adhikari Jyotipriya Mallick Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE