Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Child Marriage

Child marriage: বিয়ে করে ১৪ বছরেই অন্তঃসত্ত্বা, দিনাজপুরে তোড়জোড় ১০ বছরের বোনের বিয়েরও!

করোনা আবহে গত বছর মার্চের শেষ থেকে স্কুল বন্ধ। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, পরিস্থিতি বুঝে পুজোর পর থেকে ক্লাস চালু হতে পারে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নীহার বিশ্বাস 
তপন (দক্ষিণ দিনাজপুর) শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৫৮
Share: Save:

পুজোর পরেই হয়তো খুলে যাবে স্কুল। কিন্তু সেই প্রাঙ্গণে আর পা রাখবে না শর্মিষ্ঠা (নাম পরিবর্তিত)। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার এই ১৪ বছর বয়সি মেয়েটি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। করোনা আবহে স্কুল বন্ধ। এরই মধ্যে সাড়ে তিন মাস আগে ‘বিয়ে’ হয়ে গিয়েছে তার। পরিবার সূত্রে খবর, এখন সে দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বাবা-মা মরা নাতনিটিকে বিয়ে দিয়েই ক্ষান্ত হননি দিদা, তোড়জোড় করছেন শর্মিষ্ঠার ছোট বোন, ১০ বছর বয়সি পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকেও ‘পাত্রস্থ’ করার। পাড়ার লোকজনেরা বলাবলি করছেন, পরিস্থিতি যা, তাতে আগামী দু’-তিন বছরের মধ্যে স্কুল যাওয়া ঘুচে যাবে ছোট বোনটিরও।

বিয়ে করতে চেয়েছিলে? শর্মিষ্ঠা পরিষ্কার বলে, ‘‘এই বয়সে কে বিয়ে করতে চায়? কিন্তু পরিস্থিতির চাপে বাধ্য হয়েই করতে হয়েছে।’’ কেন? তার দিদা বলেন, ‘‘গরিব মানুষ আমি। নিজের পেটের ভাত জোগাড় হয় না। তাই বিয়ে দিয়েছি, যাতে অন্তত খেয়েপরে বাঁচে।’’ নাবালিকা মেয়ের বিয়ে বেআইনি, বিলক্ষণ জানেন শ্বশুরবাড়ির লোক। তা-ও গর্বের সঙ্গে মেয়েটির খুড়শ্বশুর বলেন, ‘‘গরিব ঘরের মেয়ে। বাবা-মা নেই।

সেখান থেকে তুলে এনে বিয়ে দিয়ে ওকে ‘উদ্ধার’ করেছি।’’ করোনা আবহে গত বছর মার্চের শেষ থেকে স্কুল বন্ধ। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, পরিস্থিতি বুঝে পুজোর পর থেকে ক্লাস চালু হতে পারে। সমাজতত্ত্ববিদদের অনেকেরই প্রশ্ন, স্কুল আবার খুললে ঠিক কত জন ছাত্রী ফিরে আসবে শিক্ষা প্রাঙ্গণে? গত দেড় বছরে বিভিন্ন বেসরকারি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত পরিবারের অনেক নাবালিকারই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। স্কুল খোলা না থাকায় কন্যাশ্রী যোদ্ধারাও আর নজর রাখতে পারছে না সহপাঠীদের উপরে। বহু ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছে, এমন বিয়ের খোঁজ নেই স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের কাছেও।

যে গ্রামে শর্মিষ্ঠা থাকে, সেখানেও প্রশাসনের নজর সে ভাবে পৌঁছয়নি, মেনে নিলেন জেলা প্রশাসনিক কর্তারাই। ঘটনাটি শোনার পরে অতিরিক্ত জেলাশাসক বিবেক কুমার বলেন, ‘‘আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’ জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে-ও একই কথা বলেছেন। যিনি নিজের উদ্যোগে এই মেয়েটির বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছেন, সেই সমাজকর্মী তথা শিক্ষক অলোক সরকার বলেন, ‘‘প্রশাসন এ সব খবর রাখে না। আগেও গ্রামেগঞ্জে এমন ঘটনা ঘটেছে। লকডাউনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Child Marriage Pregnant Woman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy