কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
দু’এক বছর নয়, প্রাপ্য চাকরি পেতে পেরিয়ে গেল এক যুগ। তার অর্ধেক গিয়েছে আইনি লড়াইয়ে। তবে শেষমেশ কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা সূচনা মণ্ডল। চলতি মাসেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝিকড়া হাই স্কুলে শিক্ষাকর্মীর পদে নিযুক্ত হয়েছেন তিনি। আদালতের খবর, সূচনার বাবা মনোরঞ্জন মণ্ডল প্রাথমিক শিক্ষক ছিলেন। ২০১১ সালে কর্মরত অবস্থায় মারা যান তিনি। কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হলে (ডাইং ইন হারনেস) সেই চাকরির উত্তরাধিকার পেতে লড়ছিলেন সূচনা।
সূচনার আইনজীবী এক্রামুল বারি জানান, ২০১১ সালে মনোরঞ্জন মারা যান। ২০১২ সালে সূচনা বাবার মৃত্যুকালীন চাকরির জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সচিবের কাছে আবেদন করেন। ২০১৪ সালে রাজ্যের শিক্ষা দফতরে সূচনার চাকরির সুপারিশ করেন সচিব। সেই মতো সূচনাকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও পরিবারের অনুমতিমত্র (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন জেলা শিক্ষা আধিকারিক। পর্যাপ্ত নথিপত্র জমা দেওয়ার পরেও, জেলার শিক্ষা আধিকারিক উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়ায় ২০১৮ সালে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সূচনা।
এক্রামুল জানান, তৎকালীন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় শিক্ষা অধিকর্তাকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে আবেদনকারীর নিয়োগের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেন। শিক্ষা দফতর থেকে সূচনাকে জানানো হয় যে, তাঁর শিক্ষক পদের পর্যাপ্ত যোগ্যতা না-থাকায় তাঁকে শিক্ষাকর্মী পদে চাকরি দেওয়া হবে। ২০২১ সালে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সূচনার সব নথি তলব করেন। সেই মতো নথি জমা দেন সূচনা। আদালতের নির্দেশের পরেও চাকরি না পাওয়ায় সূচনা ফের আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতে রাজ্যের আইনজীবী জানান, নথিপত্র ও পুলিশি যাচাই প্রক্রিয়ার জন্য নিয়োগে দেরি হচ্ছে। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য পুলিশি যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন। সূচনাকে নিয়োগপত্র দিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দেন বিচারপতি।
আইনজীবীদের দাবি, এমন বহু মামলাই আদালতে চলছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে ঢিলেমি করছে রাজ্যের বিভিন্ন দফতর। এ ক্ষেত্রেও যেমন বাবার মৃত্যুর এক বছরের মধ্যে পদক্ষেপ করা সত্ত্বেও সরকারের গাফিলতিতে ১২ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু কত জন এমন লড়াই করার ধৈর্য ধরতে পারবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy