Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Lakshman Seth

‘লক্ষ্মণ কাঁটা’, দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জেলা কংগ্রেস সভাপতির

লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় খোদ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মানিক ভৌমিকের একটি পোস্ট ঘিরে দলে শোরগোল পড়েছে।

লক্ষণ শেঠ। —ফাইল চিত্র

লক্ষণ শেঠ। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৫৮
Share: Save:

দলবিরোধী কাজের অভিযোগে সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন প্রায় ৬ বছর আগে। তারপর নিজের দল গড়েছিলেন। এরপর বিজেপিতে যোগ দিয়েও কয়েক মাসের মধ্যে সেই দলও ছাড়েন। গত লোকসভা নির্বাচনের মুখে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে তমলুক কেন্দ্রে প্রার্থী হন লক্ষ্ণণ শেঠ। যদিও হেরে যান।

একদা দাপুটে সিপিএম নেতা তথা তমলুকের এই সাংসদের নাম জড়িয়েছিল নন্দীগ্রাম কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে। জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের সম্মতিতেই কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন লক্ষ্মণ। কিন্তু বছর ঘোরার আগেই লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় খোদ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মানিক ভৌমিকের একটি পোস্ট ঘিরে দলে শোরগোল পড়েছে। ময়নার প্রাক্তন বিধায়ক মানিক মঙ্গলবার নিজের ফেসবুকে লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার পাশাপাশি প্রদেশ কংগ্রেসের কিছু নেতার বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় করা পোস্টে মানিকের মন্তব্য, ‘‘গত এক বছরে দলের রাজ্য নেতৃত্বের একটা প্রভাবশালী অংশের চাপে জেলার ব্লক সহ জেলাকমিটিকে রাজ্য নেতৃত্ব অনুমোদন দেয়নি। অথচ তার পরেও রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মত সমস্ত কর্মসূচি পালন এবং বিভিন্ন আন্দোলনের অংশীদার হয়েছি। আরও উল্লেখযোগ্য যে নন্দীগ্রামখ্যাত লক্ষ্মণ শেঠের কংগ্রেসে যোগদান নিয়ে আপত্তি করিনি। ভেবেছিলাম, রত্নাকর যখন বাল্মীকি হতে চাইছে তখন দেখা যাক। কিন্তু দুঃখের বিষয় শেঠবাবুর বাল্মীকি হওয়া তো দূরের কথা, রাজ্য নেতৃত্বের এক প্রভাবশালী অংশের প্রশয়ে জেলায় দলের সিনিয়র নেতাদের অপমান চরম দাম্ভিকতার নগ্ন চেহারা প্রকাশ করে। সমূহ বিষয় রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কাকস্য পরিবেদনা।’’

সামাজিক মাধ্যমে এমন মন্তব্যের পর মঙ্গলবার কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল বলে মানিক জানান। তা নিয়ে ফের ফেসবুক পোস্টে মানিকের মন্তব্য, ‘‘প্রদেশ দফতরে গিয়ে দেখি শেঠবাবুর প্রধান অনুচর প্রণব দাস, ক্ষীতিন সাহু, দীপক দাস, সনৎ বটব্যাল সভাপতির ঘরে। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব আমাকে জানান, ওই নেতাদের নিয়ে জেলা কংগ্রেসের কাজ করতে হবে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেস কমিটিকে আমি কলির দ্রৌপদীর আসনে বসাতে চাইনি। আমি বিনীতভাবে সে কথা রাজ্য সভাপতিকে জানাই। ব্যক্তিগতভাবে সোমেন মিত্র মহাশয়ের কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু কংগ্রেসকে নিয়ে কোনও নীতিহীন আপোস আমার দ্বারা সম্ভব নয়। লক্ষ্মণকে রাজ্য কংগ্রেস কমিটিতে নিন। আমাদের জেলাকে আমাদের বুঝতে দিন। নতুবা নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে লক্ষ্মণ শেঠ নিঃশর্ত ক্ষমা চান। তা হলে আমরা ভাবার জায়গা পাব।’’ সামাজিক মাধ্যমে এমন মন্তব্য করলেন কেন? তার উত্তরে বুধবার মানিক বলেন, ‘‘এক বছর ধরে সহ্য করেছি। দলের কর্মীরা আমাকে ভুল বুঝছেন। তাই কর্মীদের ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে আমার কথা জানিয়েছি।’’

তাঁর বিরুদ্ধে জেলা সভাপতি এমন ক্ষোভ ও মন্তব্য নিয়ে লক্ষ্মণ শেঠ বলেন, ‘‘আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় জেলা সভাপতির ওই পোস্ট দেখিনি। তাই তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’

জেলা সভাপতির ক্ষোভ নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরে দলের পর্যবেক্ষক তথা হাওড়া আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র বলেন, ‘‘জেলা কিছু নেতা-কর্মী লক্ষ্মণকে নিয়ে সমস্যার কথা বলেছেন। আমরা আশাবাদী আলোচনায় সমস্যা মিটে যাবে। তবে এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। জেলা সভাপতি বা অন্য কারও প্রকাশ্যে এমন কিছু বলা উচিত নয়, যাতে সমস্যা আরও জটিল হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Lakshman Seth Purba Medinipur Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy