উদ্ধার করা হচ্ছে পর্যটকদের। ছবি পিটিআই।
উত্তরাখণ্ড বেড়াতে এসে কেদারনাথে পৌঁছই গত রবিবার। তার পর থেকেই প্রবল বৃষ্টি। রাস্তা বন্ধ। মঙ্গলবার দিনভর স্থানীয় মন্দিরের কর্মীদের আবাসনে আটকেছিলাম। কোনও রকমে খাওয়াদাওয়া সারতে হয়েছে। কী ভাবে ফিরব, সেই দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুমোতে পারিনি। বুধবার আকাশ কিছুটা পরিষ্কার হয়। খবর পাই, আজ হেলিকপ্টারে পর্যটকদের নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হবে।
ভোর থেকে স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে কেদারনাথ মন্দিরের কাছে হেলিপ্যাডে পড়েছিলাম। আবহাওয়া ভালই ছিল। বেশ কিছু লোককে হেলিকপ্টারে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরাও আশায় ছিলাম। কিন্তু দুপুরের পরে ফের মুষলধারে বৃষ্টি নামল। প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, এই আবহাওয়া হেলিকপ্টার ওড়ার উপযুক্ত নয়। আমরা যেন আজকের মতো আস্তানায় ফিরে যাই।
ভেবেছিলাম, আগামিকাল, বৃহস্পতিবার যদি ফিরতে পারি! কিন্তু, স্ত্রী চুমকি হেলিকপ্টারের ভরসায় থাকতে পারেনি। বৃষ্টি থামলে একপ্রকার জোর করেই ও হেঁটে নামতে শুরু করল। অগত্যা আমি আর মেয়েও তাই করলাম। আমাদের মতো অনেকেই অবশ্য হাঁটছেন। প্রায় ১৬ কিলোমিটার গেলে একটা নিরাপদ জায়গায় পৌঁছব। রাস্তায় আলো নেই। আমাদের ভরসা হেডল্যাম্প এবং টর্চের আলো। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে যে এতটা খারাপ পরিস্থিতিতে পড়ব, ভাবতেই পারিনি। আমরা কেদারনাথের মন্দিরের কর্মীদের আবাসনে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেও অনেকে থাকার জায়গা না পেয়ে রাস্তার ধারের বাড়ির বারান্দায় রাত কাটিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলের পরে আবহাওয়া কিছুটা ভাল হয়। আজ, বুধবার হেলিকপ্টারে পর্যটকদের উদ্ধার করা শুরু হয়। সে জন্য ভোর ৫টার মধ্যে পাহাড় ঘেরা হেলিপ্যাডে চলে আসি।
সকাল থেকে বৃষ্টি হয়নি। আকাশ ঝকঝকে ছিল। ঠাণ্ডা হাওয়া বইছিল। কিছু মানুষকে নিরাপদ স্থানে উড়িয়ে নিয়ে গেল হেলিকপ্টার। মেয়েকে নুডুলস খাইয়েছিলাম। আমরা বিস্কুট খেয়ে কাটিয়েছি। সঙ্গে ঝর্নার জল। যখন হেলিকপ্টারে ওঠার আগেই দুপুরের পর থেকে আবহাওয়া ফের বিগড়ে গেল। বিকেলে যদি আবহাওয়া ভাল হয়, সেই আশায় ওখানেই বসেছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়ে দেন, আজ কোনও মতেই হেলিকপ্টার ওড়ানো যাবে না। বিকেলে বৃষ্টি বন্ধ হতেই স্ত্রী বলল, হেঁটেই নামবে। এখন সন্ধ্যা নেমেছে। বৃষ্টিভেজা পাহাড়ি পথে আমরা হাঁটছি।
(এর পরে পরিবারটির সঙ্গে সন্ধ্যায় মোবাইলে যোগাযোগ করতে পেরেছিলেন আনন্দবাজারের প্রতিনিধি তাপস ঘোষ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy