Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
Russia Ukraine War

Russia Ukraine War: রাতে বাস ভাড়া করে রোমানিয়া সীমান্ত, শেষে  ২০ কিলোমিটার হাঁটতে হল বেনাচিতির জিন্নতকে

স্থানীয় পরিবহণ সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। যুদ্ধের পরিস্থিতিতে বাসের ভাড়া অনেক বেশি।

এই বাসে রোমানিয়া সীমান্তে পৌঁছন জিন্নত ও অন্যরা।

এই বাসে রোমানিয়া সীমান্তে পৌঁছন জিন্নত ও অন্যরা।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:৪৫
Share: Save:

ঠিক মতো খাওয়া জোটেনি। ঘুম উধাও। এই অবস্থায় কোনও মতে অন্যদের সঙ্গে ভাড়া করা বাসে ইউক্রেন ছেড়ে রোমানিয়া পৌঁছেও, পুরোপুরি ধাতস্থ হতে পারেননি এ রাজ্যের দুর্গাপুরের বাসিন্দা ডাক্তারি ছাত্রী নেহা খান ও জিন্নত আলম।

ডিএসপি টাউনশিপের টেগোর অ্যাভিনিউয়ের নেহা ও বেনাচিতির জিন্নত ইউক্রেনের ‘ইভানো ফ্রাঙ্কিভস্ক ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি’-তে এমবিবিএসের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ফোনে নেহা জানান, ইউক্রেনের রাজধানী কিভ থেকে প্রায় ছ’শো কিলোমিটার দূরে ইভানো ফ্রাঙ্কিভস্ক শহরে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়। যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে কী ভাবে দেশে ফিরবেন, বুঝতে পারছিলেন না! পরে শোনেন, ভারত সরকার রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, পোলান্ড, স্লোভাক রিপাবলিক সীমান্তে দেশের আধিকারিকদের পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নেহার কথায়, ‘‘সবাই মিলে ঠিক করি, যে ভাবেই হোক, রোমানিয়া সীমান্তে যেতে হবে। কারণ, হাঙ্গেরি বা পোলান্ডের দূরত্ব আরও বেশি।”

স্থানীয় পরিবহণ সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। যুদ্ধের পরিস্থিতিতে বাসের ভাড়া অনেক বেশি। তবে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা, চতুর্থ বর্ষের ছাত্র পবন তিওয়ারি সবাইকে আশ্বস্ত করেন, ভাড়া তিনি মিটিয়ে দেবেন। এর পরেই তিনটি বাসে শুক্রবার রাতে (ভারতীয় সময় রাত প্রায় সাড়ে ৯টা) ১৫৪ জন যাত্রা শুরু করেন রোমানিয়ার উদ্দেশে। সীমান্তের প্রায় ২০ কিলোমিটার আগে, বাস থেমে যায়। কারণ, তার পরে আর বাস যাওয়ার নিয়ম নেই।

জিন্নত জানান, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় দু’দিন ঘুমোতে পারেননি। ক্লান্ত শরীর নিয়ে সীমান্তের দিকে হেঁটে রওনা দেয় দলটি। ভারতীয় সময় শনিবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ তাঁরা পৌঁছন রোমানিয়া সীমান্তে। যোগাযোগ হয় ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীদের সঙ্গে। সকলের ‘ভিসা’র ব্যবস্থা করে দেয় দূতাবাস। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় একটি হোটেলে। নেহা বলেন, “হোটেলে পৌঁছে খাবার খেয়ে প্রায় সকলেই ঘুমিয়ে পড়ি। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ছাড়ার কথা। তার আগে, আমাদের হোটেল থেকে নিয়ে যাওয়া হবে বিমানবন্দরে।” নেহার বাবা ফিরোজ বলেন, “আশা করি, এ বার ওরা বাড়ি ফিরতে পারবে।” জিন্নতের
বাবা সাদার আলাম বলেন, “যত ক্ষণ মেয়ে বাড়িতে না ফিরছে, দুশ্চিন্তা কাটছে না।”

তবে দুর্গাপুরের রাতুড়িয়ার ধীরেন গঙ্গোপাধ্যায় ও সুনন্দার যমজ দুই মেয়ে—রুমকি ও ঝুমকি এখনও আটকে রয়েছেন ইউক্রেনে। খারকিভ শহরের ‘খারকিভ ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি’-তে এমবিবিএস পড়তে গিয়েছেন তাঁরা। প্রথম বর্ষেই রয়েছেন দু’বোন। সুনন্দা বলেন, “ওরা রয়েছে হস্টেলের বেসমেন্টে। কলেজের মেস থেকে বেসমেন্টে খাবার-জল পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু উপরে শহরে
গোলাগুলি চলছে না বোমা পড়ছে—তা ওরা বুঝতে পারছে না। কারণ, উপরে ওঠার অনুমতি নেই।” আপাতত দুই মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগের ভরসা মোবাইল। ‘‘কী ভাবে ওরা
ফিরবে!’’, বলতে বলতে ধরে আসে ধীরেনের গলা।

অন্য বিষয়গুলি:

Russia Ukraine War
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy