কল্যাণ সিংহ। নিজস্ব চিত্র।
মাদক মামলায় ১৮ মাস জেল খেটে এ বছর ফেব্রুয়ারিতে সিউড়ি জেলা আদালত থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন বীরভূমের নানুর থানার বেলুটি গ্রামের যুবক কল্যাণ সিংহ। এত দিন মুখ বুজে ছিলেন। কিন্তু, অনুব্রত মণ্ডল জেলে যেতেই ‘সাহস’ করে মুখ খুললেন। দাবি করলেন, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি করার ‘অপরাধেই’ তাঁকে গাঁজা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তৃণমূলের বড়া-সাওতা অঞ্চল কমিটির যুব সভাপতি ছিলেন কল্যাণ। বছর আঠাশের কল্যাণের দাবি, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তাঁকে ‘গাঁজা কেস’ দেওয়ার হুমকি দেওয়া হত। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘২০১৯-এর ২১ অক্টোবর বর্ধমানের শক্তিগড়ে অনুপম হাজরার একটি মিটিং থেকে বের হতেই পুলিশ আমাকে আর দলের আরও দু’জনকে ধরে ইলামবাজার থানায় নিয়ে এসে গাঁজার মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতে পাঠিয়ে দেয়।’’
কল্যাণের অভিযোগ, অনুব্রতের নির্দেশেই তাঁকে ‘বিনা অপরাধে’ এত দিন জেল খাটতে হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘জেলে যাওয়ার সময় আমার স্ত্রী আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। ১৮ মাস পরে জেল থেকে ফিরে মেয়ের মুখ দেখতে পাই। মামলা চালাতে গিয়ে জমি বিকিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, আমি যে নির্দোষ, তা তো প্রমাণ হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ফের মিথ্যা মামলায় ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি। এখন অনুব্রত জেলে থাকায় বল পেয়েছেন।
একই রকম ‘সাহস’ পেয়ে মুখ খুলেছেন দুবরাজপুরের বিজেপি কর্মী মোতাহার খান। ঘাটগোপালপুরের বাসিন্দা মোতাহারের দাবি, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি করায় তাঁকেও দু’টি মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে ১৮৪ দিন জেলা খাটিয়েছেন অনুব্রত। এখনও সেই মামলা থেকে মুক্তি মেলেনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরই কেষ্টদার কথা মতো আমাকে দু’টি মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়। স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধে পুলিশের উপরে হামলা চালানোরও মামলা ঠোকা হয়। বিধানসভায় দুবরাজপুরে বিজেপি জেতার পরে কেষ্টদা ফোন করে ফের গাঁজা কেস দেওয়ার হুমকি দেন। তার পর থেকেই চুপ করে গিয়েছি।’’
বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার অভিযোগ, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল যে কথায় কথায় বিরোধীদের গাঁজা কেস দেওয়ার কথা বলতেন, এঁরাই তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।’’ তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। কাউকে মাদক মামলা দেওয়া এত সোজা নয়। মাদক মামলা প্রয়োগে বেশ কিছু শর্ত মানতে হয়। মামলা হলেই অভিযুক্তদের সব সময় সাজা হয় না। এটাই স্বাভাবিক।’’
তথ্য সহায়তা: দয়াল সেনগুপ্ত
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy