ফাইল চিত্র।
স্বাস্থ্য ভবনের স্বাস্থ্যসাথী বিল্ডিংয়ে পর্যালোচনা বৈঠক শুরু হতে তখনও আধ ঘণ্টা বাকি। নীলরতন সরকার হাসপাতালে ডাক্তার-নিগ্রহে ধৃত পাঁচ জনের জামিন নিয়ে প্রশ্ন করতেই এক জুনিয়র ডাক্তার বললেন, ‘‘পিছন থেকে ছুরি মারা হল!’’ পর্যালোচনা বৈঠকে স্বাস্থ্যকর্তাদের জন্য যে অস্বস্তিকর প্রশ্নবাণ অপেক্ষা করছে, বোঝা গিয়েছিল তখনই। হলও তা-ই! জুনিয়র ডাক্তারদের ক্ষোভ স্বাভাবিক, বৈঠক শেষে জানালেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা। আর জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, দাবি পূরণ না-হলে ছেড়ে কথা বলবেন না তাঁরা।
এ দিন দু’ভাগে বক্তব্য জানাতে চেয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। কিন্তু দু’ঘণ্টার বৈঠকে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা এবং ধৃতদের জামিন নিয়েই কথা হয়। পরিকাঠামোগত সমস্যা নিয়ে কোনও আলোচনাই করা যায়নি।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র, অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় বনশল-সহ প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে জুনিয়র ডাক্তারেরা জানতে চান, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে পুলিশ পোস্টিং নেই কেন? কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজের এক জুনিয়র চিকিৎসক বলেন, ‘‘আমার কলেজে প্রতিশ্রুতির ১০ শতাংশও পূরণ হয়নি।’’ সম্প্রতি ওই কলেজে এক মহিলা চিকিৎসককে ফের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। কলকাতার পাঁচটি মেডিক্যালে যৌথ পরিদর্শন হলেও সাগর দত্ত-সহ জেলার হাসপাতালে সেই উদ্যোগ নেই বলে জুনিয়র ডাক্তারেরা জানান। এই অবস্থায় জেলার হাসপাতালে দ্রুত পরিদর্শনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এনআরএস-কাণ্ডে ধৃতদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেও ধৃতেরা কী ভাবে জামিন পেল, জুনিয়র ডাক্তারেরা সেই প্রশ্ন তোলেন। চিকিৎসক দিবসে কী বার্তা গেল, জানতে চান তাঁরা। স্বাস্থ্য সূত্রের খবর, পুলিশ জানায়, আহত জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখোপাধ্যায় এখনও অসুস্থ। তাই তাঁর বয়ান নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাতে ধৃতদের জামিন পেতে সুবিধা হয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রশ্ন, আক্রান্ত অন্য দুই ডাক্তার, হাসপাতালের রক্ষী বা কর্তব্যরত পুলিশের বয়ান নেওয়া হয়নি? স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা কিছু জানাতে পারবেন। সাংবাদিক বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, ‘‘এ দিনের আলোচনায় আমরা ৭০ শতাংশ অসন্তুষ্ট। ৩০ শতাংশ খুশি। প্রশাসনিক উদাসীনতা নাকি অপদার্থতা— কী কারণে ধৃতেরা জামিন পেল, তা আধিকারিকেরা ঠিক করবেন। ওঁরা সময় চেয়েছেন। আমরা সময় দিলাম। আমাদের দাবি পূরণ না-হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy