অনিন্তিকা সাহা। চুল কাটার আগে এবং পরে। নিজস্ব চিত্র।
বছর দু’য়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্যানসার আক্রান্ত এক শিশুর চুল উঠে যাওয়ার ভিডিয়ো চোখে পড়েছিল একরত্তির। মাথায় চুল না থাকায় ক্যানসার আক্রান্ত মেয়েরা কী ভাবে সাজগোজ করবে, এ কথা ভেবে মন খারাপ হয়েছিল তার। বাবা-মা জানিয়েছিলেন, অন্যের দান করা চুল থেকে ‘উইগ’ তৈরি করে দিলে, তাদের মাথাও চুলে ভরে যাবে। তা শোনার পরে, রবিবার ‘শিশু দিবসে’ নিজের চুল কেটে ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের জন্য ‘উইগ’ তৈরি করতে মুম্বইয়ের একটি সংস্থায় পাঠাল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী অনিন্তিকা সাহা।
অনিন্তিকার বাড়ি বাঁকুড়ার সোনামুখীতে। বাবা যুগদীপ সাহা রাঁচীতে কর্মরত। সেখানেই একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ে অনিন্তিকা। সম্প্রতি তারা পূর্ব বর্ধমানের গুসকরায় মামাবাড়িতে আসে। এ দিন সেখানকার একটি পার্লারে সে চুল কাটে। অনিন্তিকা বলে, ‘‘আমার চুল যাতে ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের দেওয়া হয়, সে কথা বলেছি ওই সংস্থাকে।’’
তার মা পিয়ালি সাহা বলেন, ‘‘ফোনে ক্যানসার আক্রান্ত একটি বাচ্চা মেয়ের মাথার চুল উঠে যাওয়ার ভিডিয়ো মেয়ের মনকে খুব নাড়া দিয়েছিল। শুধু বলত, ওরা কী ভাবে মাথায় ফিতে বাঁধবে, কী ভাবে ক্লিপ আটকাবে? ওকে সান্ত্বনা দিতে বলেছিলাম, কেউ চুল দান করলে ওরা ফের সাজতে পারবে। তা শুনেই মেয়ে চুল দান করবে বলে জানায়।’’
পিয়ালি জানান, তাঁরা মুম্বইয়ের একটি সংস্থার খোঁজ পান, যারা দান করা চুল থেকে ‘উইগ’ তৈরি করে দুঃস্থ ক্যানসার আক্রান্তদের দেয়। যোগাযোগ করা হলে সংস্থার তরফে জানানো হয়, ১২-১৫ ইঞ্চি মাপের চুল ওই সংস্থার ঠিকানায় পাঠিয়ে দিলে, তা ক্যানসার আক্রান্তদের কাজে লাগবে। যুগদীপ বলেন, ‘‘ছোট থেকেই মেয়ের মাথা ভর্তি চুল। অন্নপ্রাশনের পরে কখনও ন্যাড়া হতে চায়নি। সে মেয়ে যখন নিজের চুল ক্যানসার রোগীদের দিতে চেয়েছে, উৎসাহ দিয়েছি।” এ দিন ১৪ ইঞ্চি চুল কাটার পরে অনিন্তিকা বলে, ‘‘ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে দু’বছর ধরে চুলের খুব যত্ন নিয়েছি।’’
অনিন্তিকার এই কাজের প্রশংসা করে বর্ধমান মেডিক্যালের রেডিয়োলজি বিভাগের প্রধান রজত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেমোথেরাপি করালে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। তাতে অনেক শিশুর মধ্যে হীনমন্যতা দেখা দেয়। ক্যানসার আক্রান্তদের চুল দান করা খুবই ভাল কাজ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy