Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Fire Crackers

‘এটাই আসল ব্যবসা, ফুলঝুরি-রংমশাল বেচে পেট চলে না’

শব্দবাজির উপরে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়েছে বেশ কয়েক বছর। এমনকি, দূষণ ছড়ায়, এমন আতশবাজির বিক্রি ও পোড়ানোও নিষিদ্ধ। নিয়ম অনুযায়ী, বিক্রি করা যাবে শুধু সবুজ বাজি।

An image of fire crackers

প্রকাশ্যে: চম্পাহাটির হাড়ালে এ ভাবেই বিক্রি হচ্ছে শব্দবাজি। —নিজস্ব চিত্র।

সমীরণ দাস 
বারুইপুর শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৩ ০৪:৫৪
Share: Save:

‘সবুজ বাজির মেলা’ লেখা বিশাল তোরণ লাগানো হয়েছে ঢোকার মুখে। মাইকে অনবরত পরিবেশবান্ধব বাজি পোড়ানোর কথা প্রচারও করা হচ্ছে। কিন্তু চম্পাহাটির হাড়ালে বাজি মহল্লায় ঘুরলেই বোঝা যাচ্ছে, শব্দবাজি বা নিষিদ্ধ সব বাজির বিক্রিও চলছে সমান তালে। কোনও কোনও দোকানে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে চকলেট-দোদমা।

শব্দবাজির উপরে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়েছে বেশ কয়েক বছর। এমনকি, দূষণ ছড়ায়, এমন আতশবাজির বিক্রি ও পোড়ানোও নিষিদ্ধ। নিয়ম অনুযায়ী, বিক্রি করা যাবে শুধু সবুজ বাজি। কিন্তু সেই নিয়ম আর মানা হচ্ছে কোথায়? হাড়ালে সারা বছরই বাজি তৈরি ও বিক্রি হয়। বাজি বিক্রির শ’দুয়েক স্থায়ী দোকান রয়েছে। এ ছাড়া, কালীপুজোর আগে প্রচুর ছোট-বড় দোকান বসে যায় এলাকায়। আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন আসেন বাজি কিনতে। শুক্রবার বিকেলে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ঢোকার মুখেই সবুজ বাজির মেলায় স্বাগত জানিয়ে বিশাল তোরণ। বাজি কেনার ভিড়ে কার্যত দাঁড়ানোর জায়গা নেই হাড়ালে।

স্থায়ী দোকানগুলিতে গিয়ে দেখা গেল, বেশির ভাগ ব্যবসায়ীই সবুজ বাজি বিক্রি করছেন বলে দাবি করলেন। অর্জুন মণ্ডল নামে এক ব্যবসায়ীর দাবি, “দোকানে সবই সবুজ বাজি রয়েছে। বাজির গায়ে সবুজ বাজির লোগো এবং কিউআর কোডও দেওয়া আছে। কোড স্ক্যান করলেই আসল বাজি কি না, বোঝা যাবে।” তবে, কালীপুজো উপলক্ষে রাস্তার ধারে বসা দোকানগুলিতে অবশ্য সবুজ বাজির বালাই নেই। সেখানে বিক্রি হচ্ছে সাধারণ আতশবাজিই। সবুজ বাজির দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ আতশবাজিই বেশি কিনছেন ক্রেতারা। আতশবাজির আড়ালে দেদার বিকোচ্ছে শব্দবাজিও। কয়েকটি স্থায়ী দোকানেও শব্দবাজি মিলছে।

একশো টাকায় একশোটি চকলেট বোমা। গুণমান অনুযায়ী কম বা বেশি দামেরও মিলছে। কেউ কেউ কিছুটা আড়াল-আবডাল রেখে বিক্রি করছেন। ক্রেতা চাইলে বার করে আনছেন ভিতর থেকে। কেউ আবার বিক্রি করছেন খোলাখুলি। শব্দবাজি তো নিষিদ্ধ। তা হলে খোলাখুলি বিক্রি করছেন কী ভাবে? এক ব্যবসায়ীর উত্তর, “এটাই আসল ব্যবসা, মানুষ এই শব্দবাজিই চায়। শুধু ফুলঝুরি-রংমশাল বেচে পেট চলে না।”

উত্তর ২৪ পরগনা থেকে আসা এক ক্রেতা জানালেন, শব্দবাজির টানেই এত দূর এসেছেন। তিনি বললেন, “আতশবাজি কিনেছি। সবুজ বাজিও কিনলাম। কিন্তু এখানে আসা তো শব্দবাজি কিনতেই। ওটাও কিনেছি।” ‘চম্পাহাটি-হাড়াল আতশবাজি ব্যবসায়ী সমিতি’র মুখপাত্র শঙ্কর মণ্ডল বললেন, “সব ব্যবসাতেই কিছু অসাধু মানুষ থাকেন। এখানেও সে রকম কিছু মানুষ লুকিয়ে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি করছেন। আমরা নজর রাখছি। মাইকে প্রচার করে সতর্কও করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাঁদের প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”

কালীপুজোর সপ্তাহখানেক আগে থেকেই শহরতলির বিভিন্ন জায়গায় শব্দবাজি ফাটছে। বিশ্বকাপে ভারত ভাল খেললেও ফাটছে শব্দবাজি। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বারুইপুরের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, “নিষিদ্ধ বাজির বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। চম্পাহাটি থেকে গত কয়েক দিনে কয়েকশো কেজি বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। নাকা তল্লাশিও চলছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy