জাতপাত তুলে শিক্ষক-নিগ্রহের অভিযোগকে ঘিরে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে টানাপড়েন চলে বুধবারেও। দুপুরে বাংলা ও দর্শনের বিভাগীয় প্রধানেরা পদত্যাগ করেন। ইস্তফা দেন ছ’টি স্টাডি সেন্টারের ডিরেক্টরেরাও। তবে দিনের শেষে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে সব শিক্ষকই পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেন। পদত্যাগী সব শিক্ষক-শিক্ষিকা ফের কাজে যোগ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
টিএমসিপি-র কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে জাত তুলে শিক্ষক-নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে রবীন্দ্রভারতীতে। তার প্রতিবাদে চার বিভাগীয় প্রধান এবং দু’টি স্টাডি সেন্টারের ডিরেক্টরেরা আগেই ইস্তফা দেন। শিক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার সেখানে গিয়ে জানান, অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া শাস্তি দেওয়া হবে। তার পরেও শিক্ষকদের পদত্যাগ ঘিরে এ দিন চাপান-উতোর এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, সোমবার যে-সব বিভাগীয় প্রধান ইস্তফা দিয়ে মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পদত্যাগপত্র তোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন, তাঁরা এ দিন জানান, সিদ্ধান্ত
পুনর্বিবেচনা করবেন।
দিনের শেষে রবীন্দ্রভারতী কলা শিক্ষক সংসদের সম্পাদক অধ্যাপক দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীর কথায় আমরা মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম, উপাচার্য সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরী আমাদের একটি চিঠি লিখবেন, যাতে লেখা থাকবে, ‘পদত্যাগপত্র গৃহীত হল না।’ কিন্তু উপাচার্য এই ধরনের বক্তব্য লিখে কোনও চিঠি দেননি। তাই আমরা পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথা ভেবেছিলাম। শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যায় উপাচার্য চিঠি লিখে ‘পদত্যাগপত্র গৃহীত হল না’ কথাটি লিখে আমাদের চিঠি দেন।’’
দেবব্রতবাবু জানান, এ দিনও তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। তিনি আশ্বাস দেন, পুরো বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। তার পরেই পদত্যাগপত্র গৃহীত হল না বলে জানিয়ে উপাচার্যের চিঠি আসে। চিঠি পেয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, নতুন করে আর কেউ পদত্যাগ করবেন না। তাঁদের সকলেই আজ, বৃহস্পতিবার থেকে কাজে ফিরবেন।
এ দিন পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিলেও শিক্ষকেরা জানিয়ে দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও ভয়ের আবহ রয়েছে। এর পরেও যে শিক্ষক-নিগ্রহের ঘটনা ঘটবে না, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। দেবব্রতবাবু বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপি-র সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ দে সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করে রেখেছেন। বিশ্বজিৎকে বহিষ্কার না-করলে আমরা আরও বড় আন্দোলনে নামব।’’
বিশ্বজিৎ অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কথামতো কাজ করেছি। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কোনও শিক্ষক যদি আমাদের আচরণে আহত হন, তা হলে ক্ষমা চাইতে হবে। আমরা প্রত্যেক শিক্ষককে আজ ফুল উপহার দিয়ে ক্ষমা চেয়েছি। এর পরে আর কী করতে হবে, বুঝতে পারছি না।’’
এ দিনের ঘটনা পরম্পরার বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপাচার্য সব্যসাচীবাবুর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি, এসএমএসেরও উত্তর দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy