Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
State News

মহিলা প্রোমোটারের সঙ্গে টক্কর নিতে গিয়ে খুন হন ব্যান্ডেলের তৃণমূল নেতা দিলীপ রাম

শনিবার শকুন্তলা ওরফে সমুদ্রি যাদবের ছেলে মঙ্গলকে গ্রেফতার করেছে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট। পুলিশের জালে টিটাগড়ের দুই ভাড়াটে খুনি মহম্মদ নাসিম এবং বৈদ্যনাথ রায়। কিন্তু পলাতক শকুন্তলা।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৯ ১৯:১০
Share: Save:

মহিলা প্রোমোটারের সঙ্গে টক্কর নিতে গিয়েই খুন হন ব্যান্ডেলের ডাকাবুকো তৃণমূল নেতা দিলীপ রাম! ওই এলাকার ১০ কাঠা জমির উপর নজর পড়েছিল মহিলা প্রোমোটার শকুন্তলা যাদবের। কিন্তু দিলীপের বাধায় ওই জমি হাতাতে পারছিল না শকুন্তলা। এর আগেও অনেক সময় দিলীপের জন্যে জমি কেনাবেচা নিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। দশ কাঠা জমি নিয়ে ঝামেলার পর দুই ভাড়াটে খুনিকে ‘সুপারি’ দিয়ে দিলীপকে সরানোর ‘ব্লু-প্রিন্ট’ তৈরি করে শকুন্তলা। তার পর হিসেব কষেই ব্যান্ডেলের ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে দিলীপের মাথা লক্ষ্য করে গুলি করে আততায়ীরা।

শনিবার শকুন্তলা ওরফে সমুদ্রি যাদবের ছেলে মঙ্গলকে গ্রেফতার করেছে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট। পুলিশের জালে টিটাগড়ের দুই ভাড়াটে খুনি মহম্মদ নাসিম এবং বৈদ্যনাথ রায়। কিন্তু পলাতক শকুন্তলা। লোহার ছাঁটের কারবারি বিজু পাসোয়ান এই ঘটনায় জড়িত রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।

অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, ব্যান্ডেল এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব থাকায় দিলীপকে খুনের সুপারি নিতে প্রথমে কেউ রাজি হয়নি। বিজুর সঙ্গে হাত মিলিয়ে শেয পর্যন্ত টিটাগড়ের ওই দুই ভাড়াটে খুনি তিন লক্ষ টাকায় সুপারি দেয় শকুন্তলা।

আরও পড়ুন: টাকা নিয়ে বিবাদের জেরে সপাটে চড়! মৃত্যু নদিয়ার বস্ত্র ব্যবসায়ীর, ধৃত মহাজন

দিলীপ রামকে খুনের জন্য দুই ভাড়াটে খুনিকে তিন লক্ষ টাকায় সুপারি দেয় শকুন্তলা। —নিজস্ব চিত্র।

প্রোমোটারি নিয়ে যেমন শকুন্তলার সঙ্গে বিবাদ ছিল তার, তেমনই ছাঁট লোহার কারবার নিয়ে পাসোয়ান-ভাইদের সঙ্গেও পুরনো শত্রুতা ছিল দিলীপের। এ নিয়ে লালা পাসোয়ান এবং তাঁর ভাই বিজুর সঙ্গে বিরোধিতা ছিলই। সম্প্রতি শকুন্তলার মতো আরও কয়েকজন প্রোমোটারের সঙ্গে রেষারেষি শুরু হয় ব্যবসায়িক কারণে। এলাকাবাসীদের একাংশের অভিযোগ, কোনও কিছু করতে হলে আগে দিলীপের থেকে অনুমতি নিতে হত। চুঁচুড়া বিধানসভা তৃণমূলের দখলে থাকায় এবং স্ত্রী ঋতু সিংহ ব্যান্ডেল পঞ্চায়েতের প্রধান হওয়ায়, দিলীপের দিন দিন ক্ষমতা বাড়ছিল। এটা ভাল ভাবে নিচ্ছিলেন না এলাকার প্রোমোটাররা। তাই শকুন্তলা এবং বিজু একজোট হয়ে কী ভাবে দিলীপকে সরানো যায়, সে বিষয়ে ছক কষতে শুরু করে। এই শকুন্তলার জন্ম ব্যান্ডেল এলাকায়। প্রথম দিকে কলকারখানায় পুরনো জামা সরবরাহের কাজ করত। পরে সে লোহার কাঁচামাল সরবরাহ করতে শুরু করে। পাশাপাশি, বেশ কয়েক বছর আগে জমি কেনাবেচা ও প্রোমোটিংয়ের কাজও শুরু করে। শুকুন্তলার তিন ছেলেও প্রোমোটিংয়ের কাজে জড়িত।

আরও পড়ুন: বাবার মৃত্যুদিনেই খবর এল, মা-ও নেই

অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকে দিলীপের বিরোধী গোষ্ঠীর ক্রমশ শক্তি বৃদ্ধি হচ্ছিল একটি রাজনৈতিক দলের মদতে। ঘটনার কয়েক দিন আগে দিলীপের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে হুমকিও দেয় বিজু। প্রথম থেকে খুনের ঘটনায় বিজুকেই সন্দেহ করছিল পুলিশ। তার পর বিভিন্ন দলে ভাগ করে এই ঘটনার তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের সিপি হুমায়ুন কবীর।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Chandannagar Bandel TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy