Advertisement
২৪ অক্টোবর ২০২৪
Vaccines

প্রতিষেধক: ২৫ জন করে বেঁধে দেওয়া হবে সময়

রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সব জায়গাতেই মহড়া সফল হয়েছে। ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত। আশা করছি, আগামী সপ্তাহে প্রতিষেধক রাজ্যে চলে আসবে।’’

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৪২
Share: Save:

রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ— প্রতিটি জেলার তিনটি করে কেন্দ্রে শুক্রবার করোনার প্রতিষেধক দেওয়ার মহড়া পর্ব চলল। করোনার প্রতিষেধক দেওয়ার সময়ে কী কী করতে হবে, কী কী সমস্যা হতে পারে, তা হাতেকলমে আগাম বুঝে নিতেই এই ‘ড্রাই রান’।

রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সব জায়গাতেই মহড়া সফল হয়েছে। ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত। আশা করছি, আগামী সপ্তাহে প্রতিষেধক রাজ্যে চলে আসবে।’’ এ দিন শহরের এসএসকেএম হাসপাতালে মহড়া দেখতে হাজির ছিলেন অজয়বাবু। ওই হাসপাতালে ৪টি এবং শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ২টি কেন্দ্র ছিল। গোটা রাজ্যে জেলা হাসপাতাল, মহকুমা হাসপাতাল, আর্বান প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, গ্রামীণ হাসপাতাল মিলিয়ে মোট ৮১ টি জায়গা ও শহরের প্রায় সব মেডিক্যাল কলেজেই চলল ‘ড্রাই রান’।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতিষেধক দেওয়া যখন শুরু হবে, তখন প্রতিটি হাসপাতালের এক-একটি কেন্দ্রে দৈনিক ১০০ জন করে গ্রহীতাকে প্রতিষেধক দেওয়া হবে। কিন্তু, প্রতিটি কেন্দ্রে এক সঙ্গে ১০০ জন গ্রহীতা চলে এলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ২৫ জন করে গ্রহীতাকে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলেও জানান অজয়বাবু। ১০০ জনের তালিকা তৈরি থেকে সময়সীমা নির্দিষ্ট করার কাজটি করবেন সংশ্লিষ্ট জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। এ দিনের মহড়ায় দেখা গিয়েছে, পরিচয়পত্র ও নথি দেখিয়ে প্রতিষেধক কেন্দ্রে প্রবেশ থেকে ভ্যাকসিন নেওয়া এবং তার পরে আধ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ ঘরে থাকা— সব মিলিয়ে গোটা প্রক্রিয়ায় সময় লাগছে ৪০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা।

তবে এ দিনের ড্রাই রানের সময় রাজ্যের বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে কিছু সমস্যাও তৈরি হয়েছে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃহস্পতিবার থেকেই মহড়া শুরু হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার কালিম্পঙে পেডং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং রামডি ব্লক হাসপাতালে ড্রাই রানে ব্যবহৃত অ্যাপ খোলা যায়নি। পাহাড়ি এলাকায় নেট-সংযোগ না পাওয়ায় সমস্যা হওয়ায় শেষে আধিকারিকেরা প্রয়োজনীয় নথি প্রিন্ট করিয়ে নেন। মুর্শিদাবাদে আবার মহড়ায় যোগদানকারী অনেকে যে পরিচয়পত্র দিয়ে নাম নথিভুক্ত করেছেন, সেই পরিচয়পত্র না আনায় কিংবা নথিভুক্ত নয় এমন মোবাইল নম্বর বলায় জট পাকে। বেশ কিছুক্ষণ করে মহড়া প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের বেশ কিছু কেন্দ্রেও ভুগিয়েছে ইন্টারনেট।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা হিসেবে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরাই প্রথম ধাপে প্রতিষেধক পাবেন। সেই মতো প্রতি জেলায় নাম নথিভুক্ত হয়েছে। সেই তালিকা থেকে বাছাই করা স্বেচ্ছাসেবক স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে ২৫ জনকে নিয়েই এ দিন মহড়া চলে। প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা ধাপে ধাপে সব দেখে নিয়েছেন। ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ হাতে ছোঁয়ানো পর্যন্ত সবটাই হয়েছে। বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে অতিরিক্ত সুপার শ্যামল চক্রবর্তীকে দিয়েই শুরু হয় মহড়া। ড্রাই রান দেখতে ওই হাসপাতালে আসেন জেলা শাসক পি উলগানাথন ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায়।

হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামে নির্বিঘ্নেই মিটেছে টিকাকরণের মহড়া। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমান, বীরভূম, নদিয়ায় স্বাস্থ্যজেলা ভিত্তিক কেন্দ্র করে মহড়া চলে। তবে এ দিন বঙ্গে প্রতিষেধক আসার কথা থাকলেও, তা হয়নি। প্রথম পর্যায়ে কত ভ্যাকসিন আসবে তাও নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছেন না স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। রাজ্যে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে ৬ লক্ষ স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীকে দু’টি করে ডোজ় দেওয়ার কথা।

অন্য বিষয়গুলি:

Vaccines Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE