Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
woman

WB municipal election 2022: ভোটের ময়দানে মুখোমুখি বৌদি-ননদ

দেবশ্রী ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর। ২০১৫ সালে পুরভোটে জয়ী হয়েছিলেন। শ্বশুরমশাই প্রয়াত নান্টুরঞ্জন রায় দীর্ঘদিন কাউন্সিলর ছিলেন।

সম্মুখ-সমরে: বাঁ দিকে,  মৌসুমি, ডান দিকে, দেবশ্রী

সম্মুখ-সমরে: বাঁ দিকে, মৌসুমি, ডান দিকে, দেবশ্রী নিজস্ব চিত্র।

সীমান্ত মৈত্র  
অশোকনগর শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৫:১২
Share: Save:

ভোটের ময়দানে মুখোমুখি একই পরিবারের দুই মহিলা। লড়াই হচ্ছে অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। এখানে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দেবশ্রী রায় ও তাঁর ননদ মৌসুমি রায় দে-র মধ্যে। তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়েছেন দেবশ্রী। মৌসুমি লড়ছেন কংগ্রেসের টিকিটে। মঙ্গলবার মনোনয়ন জমা দিয়েছেন দু’জনেই।

দেবশ্রী এই ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর। ২০১৫ সালের পুরভোটে জয়ী হয়েছিলেন। শ্বশুরমশাই প্রয়াত নান্টুরঞ্জন রায় দীর্ঘদিন পুরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। তিনিই ছিলেন এ রাজ্যের তৃণমূলের প্রথম কাউন্সিলর। দেবশ্রী বলেন, ‘‘শ্বশুরমশাইয়ের আশীর্বাদ সব সময়ে আমার সঙ্গে থাকে। কারণ, তিনি আমাকে উপযুক্ত মনে করেছিলেন। আমার উপরে ভরসা রেখে আমায় প্রার্থী করেছিলেন। কাউন্সিলর করেছিলেন।’’

মৌসুমির প্রার্থী হওয়াকে গুরুত্ব দিতে চান না দেবশ্রী। তাঁর কথায়, ‘‘ওয়ার্ডে কংগ্রেসের কোনও অস্তিত্ব নেই।’’ ননদ ‘বহিরাগত’ বলেও তাঁর দাবি।

মৌসুমি ভোটের ময়দানে নবাগতা। তাঁর দাবি, তিনিও তৃণমূল করতেন। এ বার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী হতে চেয়ে দলের কাছে আবেদন করেছিলেন। প্রার্থী তালিকা দেখে রবিবার কংগ্রেসে যোগদান করেন। টিকিটও পেয়ে গিয়েছেন। মৌসুমির কথায়, ‘‘হাবড়ার শ্রীচৈতন্য কলেজে পড়ার সময়ে ছাত্র পরিষদ করতাম। কলেজ ভোটেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। বরাবর আমি কংগ্রেসের আদর্শে বিশ্বাস করি। মাঝে আর একটা দলে চলে গিয়েছিলাম। আবার মূল স্রোতে ফিরে এলাম।’’ হাওড়ায় বিয়ে হয়েছিল মৌসুমির। স্বামী মারা যাওয়ার মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ির কাছেই ভাড়া থাকেন।

মৌসুমি বলেন, ‘‘আমার বাবা-মা কাউন্সিলর ছিলেন। তাঁরা কখনও ভাতা নেননি। তাঁরা দুর্নীতিকে প্রশয় দেননি। কিন্তু আগের কাউন্সিলর সেই আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। আমি ওয়ার্ডের মানুষকে বাবা-মায়ের দেখানো পথে পরিষেবা দিতে ভোটে দাঁড়িয়েছি। "

একই দিনে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে কংগ্রেসে যোগদান করেছেন মৌসুমির ছোট ভাই সুকান্ত রায়। তিনি বলেন, ‘‘আমি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুব তৃণমূল সভাপতি ছিলাম। এ বার ভোটে দিদির মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট হয়েছি।’’

মৌসুমি জানান, ওয়ার্ডের মানুষ যে ভাবে কাউন্সিলরের কাছ থেকে পরিষেবা আশা করেছিলেন, তা পাননি। নিকাশি নালা সাফ হয়নি। জঙ্গল কাটা হয়নি। প্রাক্তন কাউন্সিলর শুধু হাউজ ফর অল প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। দেবশ্রীর পাল্টা জবাব, ‘‘কয়েক মাস আগে স্বামী মারা যাওয়ার পরে ননদ এখানে এসেছেন। ওয়ার্ডে আমি কী কাজ করেছি, তা জানেন না।’’

বৌমা-মেয়ের লড়াইয়ে কী করবেন বৃদ্ধা শোভনা রায়?

তিনি নিজেও ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা। শোভনা বলেন, ‘‘গত বার পুরসভা ভোটে বৌমাকে সমর্থন করেছিলাম।’’ কিন্তু এ বার কী করবেন? দু’জনেই তো নিশ্চয়ই আশীর্বাদ নিতে আসবেন। একগাল হেসে বৃদ্ধা বলেন, ‘‘আগে আসুক, তারপরে ভাবব।’’

বৌদি-ননদের লড়াইয়ে তৃণমূলের ভোট কাটাকাটি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে বিরোধীরা। অন্য দিকে, জমজমাট ‘গৃহযুদ্ধ’ দেখার আশায় পুর এলাকার নাগরিকেরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy