—ফাইল চিত্র
সুন্দরবনের সৌন্দর্য লকডাউনের জেরে পর্যটকদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে অধরাই থেকে গেল। পর্যটক-বঞ্চিত হালের সুন্দরবনে তাই মন্দার ছায়া।
একটা সময় ছিল যখন মূলত শীতকালেই পর্যটকেরা ভিড় জমাতেন সুন্দরবনে। কিন্তু ইদানীংকালে ছবিটা অনেক বদলেছে। এখন মোটামুটি সারা বছর ধরেই পর্যটকেরা সুন্দরবনে আসেন। ফলে পর্যটন থেকে আয়ের পথটাও এখানে মোটামুটি সারা বছরই খোলা থাকে। কিন্তু গত পর্যটন মরসুম জুড়ে ছন্দপতন ঘটেছে। বুলবুলের দাপটে সুন্দরবনের বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সুন্দরবন অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পর্যটন। ফলে যথেষ্ট ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষজনকে।
ভ্রমণশিল্পে যুক্ত মানুষজনের অধিকাংশই ভেবেছিলেন, চলতি গরমের ছুটিতে সেই ঘাটতি কিছুটা পুষিয়ে নেবেন। কিন্তু করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে ঘোষিত লকডাউন তাঁদের সেই আশায় জল ঢেলে দিল।
প্রায় পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষ সুন্দরবনের পর্যটন ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত। লঞ্চ মালিক, লঞ্চ চালক ও কর্মচারী, রাঁধুনি, হোটেল মালিক ও কর্মচারী-সহ বহু মানুষ আছেন এই তালিকায়। সমস্যায় পড়েছেন সকলেই।
ব্যবসায়ীরা জানালেন, ইতিমধ্যেই গরমের ছুটির সমস্ত বুকিং বাতিল হয়েছে। অন্য বছরে এই সময় থেকেই পুজোর মরসুমের বুকিংও শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে পুজোর জন্য এখনও পর্যন্ত কোনও বুকিংই হয়নি বলে জানাচ্ছেন ট্যুর অপারেটররা। লঞ্চ বা হোটেল মালিকেরা তো যথেষ্ট সমস্যায় পড়েছেন। বেশি সঙ্কটে পড়েছেন লঞ্চ ও হোটেলের কর্মীরা। কিছু কিছু হোটেল ও লঞ্চ মালিক তাঁদের কর্মচারীদের সামান্য কিছু চাল-ডাল, আলু-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করেছেন ঠিকই, কিন্তু এই ভাবে কতদিনই-বা সাহায্য তুলে দেওয়া সম্ভব, তা জানেন না কোনও পক্ষই। একটি ট্যুর অপারেটর সংস্থার সভাপতি হরেন ঘোড়ুই বলেন, “জানি না আবার কবে ঠিকঠাক ব্যবসা শুরু করা সম্ভব হবে।”
সুন্দরবনের পর্যটন ব্যবসায় লঞ্চ ও ভুটভুটি মিলিয়ে প্রায় ৩০০ জলযান চলে। ক্যানিং, বাসন্তী, ঝড়খালি, গোসাবা মিলিয়ে প্রায় ১০০টি হোটেল ও লজ রয়েছে। সুন্দরবনের পর্যটনশিল্পের উপরে যেমন বহু মানুষ নির্ভরশীল, তেমনই এই শিল্প থেকে বহু টাকা রাজস্ব হিসেবে সরকারি কোষাগারেও জমা পড়ে। পর্যটন বন্ধ থাকায় রাজস্বেও যথেষ্ট ঘাটতি দেখা দেবে বলে দাবি পর্যটনশিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের। আর এক ট্যুর অপারেটর নিউটন সরকার বলেন, “শীতের মরসুম ছাড়াও এখন সারা বছর ধরে মানুষ সুন্দরবনে বেড়াতে আসেন। ইলিশ উৎসবেও বহু মানুষ এখানে আসেন আজকাল। কিন্তু লকডাউনের জন্য আপাতত সবই বন্ধ। ইলিশ উৎসবের বুকিংও এ বার হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে কিছুই বলা যাচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy