প্রতীকী ছবি।
অনলাইন ক্লাস চালু হয়েছে বহু স্কুল-কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু তা সড়গড় হতে সময় লাগছে শিক্ষক-পড়ুয়া দু’পক্ষেরই। কোথাও ভোগাচ্ছে নেট কানেকশন। সকলের কাছে অ্যান্ড্রয়েড ফোন না থাকায় বহু পড়ুয়া এই ব্যবস্থার সুবিধা নিতে পারছে না বলে অভিযোগও আছে। আবার ইন্টারনেটের বাড়তি খরচ বহন করাও অনেক পরিবারের পক্ষে চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই যেখানে পরিস্থিতি, সেখানে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কচিকাঁচাদের জন্য রাজ্য সরকার ই-লার্নিং বা অনলাইনে পড়াশোনার ব্যবস্থা করায় তা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন।
১০ মে রাজ্যের সব ক’টি জেলার জেলাশাসকের কাছে এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে রাজ্য অঙ্গনওয়াড়ি পরিচালন দফতর থেকে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, লকডাউনের ফলে সকলেই প্রায় ঘরবন্দি। ফলে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুদের যে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার কর্মসূচি চলে, তাতে বাধা পড়েছে। পাশাপাশি এই অবস্থায় শিশুদের বাড়ির মধ্যে আটকে রাখাটাও অভিভাবকদের কাছে চ্যালেঞ্জ। তাই কেন্দ্রে না গিয়েও বাড়িতে বসে এই শিশুদের শিক্ষণ পদ্ধতি যাতে চলতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই অভিভাবকদের জন্য বেশ কিছু অডিয়ো বার্তা, রঙিন ছবি সহ কিছু নির্দেশিকা ও শিশুদের জন্য নানা ধরনের ছড়া, গান তৈরি করা হয়েছে। সেগুলি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এই সমস্ত কিছু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুদের অভিভাবকদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে কোন শিশু কী কর্মসূচি কী ভাবে পালন করল, তার ছবিও অভিভাবকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হবে। এ বিষয়ে রিপোর্ট তৈরি করে সুপারভাইজারদের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশও এসেছে। সপ্তাহের ছ’দিন অভিভাবকেরা সন্তানদের এই কর্মসূচির মধ্যে রাখবেন বলে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে।
কিন্তু রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলগুলিতে এই পদ্ধতিতে শিশুশিক্ষা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে নানা মহলে। মূলত আর্থিক অবস্থা ভাল নয় যাঁদের, এই সব বাড়ির ছেলেমেয়েরাই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যায়। অবস্থাপন্ন ঘরের বাচ্চারা সচরাচর বেসরকারি স্কুলে ভর্তি হয়। গ্রামের গরিব পরিবারগুলির সকলের কাছে স্মার্ট ফোন নেই। ফলে প্রতিটি পরিবারের কাছে কর্মসূচি পৌঁছে দেওয়া নিয়ে সংশয় থাকছে। অনেক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের নিজেদেরও স্মার্ট ফোন নেই।
বহু গ্রামে ইন্টারনেট সংযোগ খুবই দুর্বল। অনেকে ঠিকঠাক রিচার্জ করতে পারছেন না ফোনে। লকডাউনে কাজকর্ম হারিয়েছেন অনেকেই। তাঁদের পক্ষে এখন মোবাইলের পিছনে বাড়তি টাকা খরচ করা নেহাতই বিলাসিতা বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তাদের একাংশও। প্রশ্ন আছে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, সহায়িকাদের মধ্যেও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্যানিং ১ ব্লকের এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা বলেন, ‘‘এই লকডাউনের মধ্যে সেন্টারে গিয়ে চাল, আলু বিতরণ করেছি। এখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে মোবাইল নম্বর জোগাড় করে ফোনে কর্মসূচি পাঠাতে হচ্ছে। কিন্তু যাঁদের কাছে স্মার্ট ফোন বা ইন্টারনেট সংযোগ নেই, তাঁরা কী করবেন?”
যদিও এই কর্মসূচিতে ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্যানিং ১ ব্লকের প্রকল্প আধিকারিক শ্যামল পাল। তিনি বলেন, “শিশুরা খুবই উৎসাহ নিয়ে এই কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছে। ব্লকের সমস্ত শিশু যাতে এই কর্মসূচির আওতায় আসতে পারে, আমরা সেই চেষ্টা করছি।” দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রকল্প আধিকারিক নিতেশ ঢালি বলেন, ‘‘বিষয়টি জেনে পরে জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy