ফাইল চিত্র।
অচেনা মুখের ভিড়ে ছাপ্পা ভোট, বহিরাগতদের বুথ দখল, সংঘর্ষ-বোমাবাজির মতো ঘটনা নিয়েই কেটেছে কামারহাটির পুর নির্বাচন। বিশেষ সংযোজন ছিল, ভোটের ময়দান ছেড়ে খোদ শাসকদলের প্রার্থীর অন্তরালে চলে যাওয়া। এ বার তার সঙ্গে যুক্ত হল আর এক বিস্ময়কর তথ্য। তৃণমূলের প্রাক্তন এক কাউন্সিলর এবং এ বারের নির্বাচনের প্রার্থীর ভোটটাও দিয়ে দিয়েছেন অন্য কেউ!
পুরভোট নিয়ে কামারহাটির স্থানীয় স্তরে যে কাটাছেঁড়া চলছে, তাতেও বার বার উঠে আসছে বিষয়টি। অধিকাংশ নেতাই বিরক্তি প্রকাশ করে বলছেন, “এটা একেবারেই অনভিপ্রেত। নিজেদের সহকর্মীর প্রতি যদি বিশ্বাস না থাকে, তা হলে সাধারণ মানুষের প্রতি ভরসা থাকবে কোথা থেকে?” আর ঘটনাটি জানার পরে কামারহাটির বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, “তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর ও প্রার্থীর ভোটও যদি অন্য কেউ দিয়ে দেন, তা হলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কী হয়েছে, তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে।” কামারহাটির ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ বছর (দু’টি পর্বে) কাউন্সিলর ছিলেন অজিতা ঘোষ। এ বছর তিনি ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী। আর ৩১ নম্বরের প্রাক্তন কাউন্সিলর কানু দাস এ বছর ৩২ নম্বরের প্রার্থী হয়েছেন। সূত্রের খবর, গত রবিবার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে নিজেদের ভোট দিতে যান সেখানকার বাসিন্দা অজিতা ও তাঁর মেয়ে। গিয়ে দেখেন, দু’জনের ভোটই পড়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অজিতার মেয়ে কিছু ক্ষণ ভোটকেন্দ্রের বাইরে চেঁচামেচিও করেন।
ঘটনার কথা স্বীকার করলেও এ নিয়ে এখন আর বিশদে কিছু বলতে নারাজ অজিতা। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “যা হয়ে গিয়েছে, তা নিয়ে আর কোনও কথা বলতে চাই না। তবে দলের মোটামুটি সকলকেই বিষয়টি জানিয়েছি।” ঘটনার নেপথ্যে কর্মীদের একাংশের ক্ষোভ কাজ করেছে বলেই মনে করছেন কানু। তাঁর কথায়, “সিপিএমকে ভোটটা দিয়ে দেওয়ার জন্য ৩২ নম্বরের কর্মীদের বলেছিলেন অজিতা। উদ্দেশ্য ছিল আমাকে হারানো। অডিয়োটি আমার কাছে রয়েছে। কিন্তু বিষয়টি কর্মীরা ভাল ভাবে নেননি। এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। হতে পারে, তার বহিঃপ্রকাশ থেকেই ওঁদের ভোট কেউ দিয়ে দিয়েছেন।” কেন তিনি এমন কথা বলেছিলেন, সে বিষয়ে অজিতাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন বলেও জানান কানু। তিনি জানান, অজিতা দাবি করেছেন, তাঁকে ফাঁসানোর জন্যই ওই সমস্ত করা হয়েছে।
যদিও ভোটের দিন ঘটনার কথা কানে আসতেই তিনি অজিতাকে ফোন করেছিলেন বলে দাবি করে এ দিন কানু বলেন, “জানি না, কারা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে যারাই করে থাক, কাজটা খুব অন্যায় হয়েছে। তাই বিষয়টি জানার পরেই অজিতাকে ফোন করে তাঁর এবং গোটা পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। ওঁকে বলেছি, বিষয়টি নিয়ে ভুল ধারণা না রাখতে।”
কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, “কী হয়েছে,
সেটা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। মনে হয়, নাম বিভ্রাটে ভুল করে অন্য কেউ অজিতার ভোট দিয়ে দিয়েছেন।” যদিও স্থানীয় স্তরের নেতৃত্বের অন্দরের পর্যবেক্ষণ, ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। সেই সব কাটিয়ে আজ, বুধবার কামারহাটির
ভাগ্য-নির্ধারণ। নেতাদের একাংশের এটাও বক্তব্য, “কারও যদি নিজের প্রতি বিশ্বাস না থাকে, তা হলে আর কী হবে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy