অমাবস্যার ভরা কটালে নদীবাঁধে ফাটল ধরেছিল। সংস্কারের কাজ শুরু হলেও বেশ কিছুটা অংশ ভেঙে নোনা জল ঢুকল সন্দেশখালির আতাপুর মণিপুর পঞ্চায়েতের তালতলা ঘাট এলাকায়।
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, অমাবস্যার ভরা কটালে নদীর জলস্তর অনেকটা বৃদ্ধি পাওয়ায় রবিবার সন্দেশখালির তালতলা এলাকায় বড় কলাগাছি নদীর বাঁধের বেশ কিছুটা অংশে ফাটল দেখা দেয়। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসনের সহযোগিতায় ফাটল মেরামতির কাজ শুরু করার পরে সোমবার রাতে সেচ দফতরও নদীবাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করে।
বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল ভাঙনের জায়গাটি ঘুরে দেখেন। তবে বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করলেও শেষরক্ষা হল না। সংস্কারের কাজ চলাকালীন মঙ্গলবার দুপুরে জোয়ারের জলে নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হল সন্দেশখালির আতাপুর মণিপুর-সহ বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম। বাসিন্দারা জানান, বসতবাড়িতে জল ঢুকেছে। তলিয়ে গিয়েছে মেছোভেড়ি, চাষের জমি। গ্রামবাসীরাও হাত লাগিয়েছেন বাঁধ মেরামতির কাজে।
স্থানীয় মানুষ জানান, এ দিন দুপুরে হঠাৎ নদীর বাঁধ ভেঙে হু হু করে জল ঢুকে পড়ে মেছোভেড়িতে। লোকালয়ের ভিতরে ঢুকতে শুরু করে নদীর নোনা জল। মুহূর্তের মধ্যে ধান খেতে নোনা জল ঢুকে পড়ে। কয়েকটি গ্রামের পুকুর, খাল, বিল— সবটাই নদীর নোনা জলে ভর্তি হয়ে যায়।
এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত বোধ করছেন সন্দেশখালির আতাপুর ও মণিপুর এলাকার কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। অবিলম্বে বাঁধ সংস্কার না হলে বড়সড় বিপত্তি হতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। রাজু নস্কর, কল্যাণ বৈদ্যেরা বলেন, ‘‘যে ভাবে নদী বাঁধ ভেঙে পড়েছে, তাতে আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে নদীবাঁধ সংস্কার না হওয়ার জন্য এই রকম ঘটনা ঘটছে।’’
সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, ‘‘আয়লা, আমপানের সময়ে যে ভাবে নদীবাঁধ ভেঙে একের পর এক এলাকা প্লাবিত হয়েছিল, যে ভাবে এলাকার মানুষকে ঘর ছাড়তে হয়েছিল এ বারও দ্রুত বাঁধ মেরামত না হলে ফের একই ভাবে ঘর ছাড়তে হতে পারে।’’ ইতিমধ্যে বাঁধের প্রায় চল্লিশ ফুট অংশ ভেঙেছে বলে সেচ দফতর জানিয়েছে। ভাটার সময়ে মেরামতির কাজ সেরে ফেলার প্রস্তুতি নিয়েছে তারা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)