দশে-মিলি: ভাঙন রুখতে গ্রামবাসীরা বাঁধে মাটির বস্তা ফেলছেন। নিজস্ব চিত্র।
রাত জেগে প্রায় পাঁচশ গ্রামবাসীর অক্লান্ত পরিশ্রমে রুখে দেওয়া গেল বাঁধের ভাঙন। হিঙ্গলগঞ্জের সুন্দরবন লাগোয়া গোবিন্দকাটি পঞ্চায়েতের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কালিন্দী নদীর বাঁধের ভাঙন রুখতে বুধবার রাত থেকেই গ্রামবাসীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাঁধে মাটি ফেলা শুরু করেন।
এভাবে প্রায় তিন কিলোমিটার বাঁধের ভাঙন আটকে দেওয়ায় রক্ষা পেল কয়েকশো মানুষের ঘরবাড়ি, চাষের জমি, ভেড়ি।
বুধবার বিকেল থেকেই ইয়াসের তাণ্ডব বাড়তে থাকে। ঝড় ও জলের গোঁ গোঁ শব্দে তখন কানে তালা লেগে যাওয়ার জোগাড়। পরিস্থিতি এমনই, যে কোনও মুহূর্তে ইট ও মাটির বাঁধ ভেঙে নোনা জলে গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। রাত তখন ৮টা। নদীর ভয়ঙ্কর রূপের কথা শুনে হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল ও স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সহিদুল্লা গাজি শ্রীধরকাটি গ্রামের প্রায় পাঁচশো মানুষ নিয়ে লেগে পড়েন বাঁধ মেরামতির কাজে। ততক্ষণে কালিন্দী ফুঁসছে ভয়ঙ্কর ভাবে। নদীর জল বাঁধ ছাপিয়ে ঢুকতে শুরু করেছে গ্রামে। বাঁধের ভাঙন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
পরিস্থিতি দেখেই দ্রুত বাঁধ বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেন দেবেশবাবু। গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে শুরু হয় বস্তায় মাটি ভরে বাঁধ উঁচু করার কাজ। সারা রাত চেষ্টা চালিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বাঁধ উঁচু করে কালিন্দীকে রুখে দেন গ্রামবাসীরা।
এ দিন দেবেশবাবু বলেন, “বহু বছর ধরেই সুন্দরবন এলাকায় বাস করছি। আয়লা, ফণী, বুলবুল, আমপানের মতো ঝড় দেখেছি। কিন্তু আগে কখনও নদীর এই ভয়ঙ্কর রূপ দেখিনি। জলের উচ্চতা হয়েছিল প্রায় ৫-৭ ফুট। তাই দ্রুত গ্রামবাসীদের নিয়ে বাঁধ উঁচু করার কাজ শুরু করি।”
তিনি জানালেন, হিঙ্গলগঞ্জে ২১টি পয়েন্টে শতাধিক মিটার বাঁধ ভেঙেছে। যদিও জল না সরলে ভাঙন ঠিক কতটা তা বলা সম্ভব নয়। তবে ১৬টা শিবিরের কয়েকজন মানুষ ছাড়া বাকিরা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।
সহিদুল্লা গাজি বলেন, “মানুষ বিপদে পড়েছে শুনে আমরা সকলে মিলে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁধের জল আটকাই।”
এই উদ্যোগের প্রশংসা করলেও গ্রামবাসীদের একাংশের বক্তব্য, অন্তিম মুহূর্তে উদ্যোগী না হয়ে এই কাজ যদি আগে করা হত, তা হলে গ্রামের মানুষদের এই বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে হত না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy