Advertisement
২৪ অক্টোবর ২০২৪
Landslide of River Dams

পূর্ণিমার কটালে ধস নদীবাঁধে, আশঙ্কায় গ্রামবাসী

নামখানা ব্লকের নারায়ণগঞ্জে প্রায় ১২০০ মিটার মাটির বাঁধ ধস নেমে মুড়িগঙ্গা নদীতে তলিয়ে গিয়েছে।

নামখানায় ত্রিপল ঢেকে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা গ্রামবাসীদের।

নামখানায় ত্রিপল ঢেকে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা গ্রামবাসীদের। ছবি: সমরেশ মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৫৮
Share: Save:

পূর্ণিমার কটালে নদীর জলস্তর বেড়েছে। তার পরেই সুন্দরবনের কাকদ্বীপ মহকুমার একাধিক নদীবাঁধে ধস নামতে শুরু করেছে। আতঙ্কিত উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের আশঙ্কা, এখনই বাঁধ সারাই না করলে, যে কোনও মুহূর্তে একের পর এক গ্রাম প্লাবিত হয়ে যাবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, দুর্যোগ কাটলেই সেচ দফতর বাঁধ মেরামতিতে হাত লাগাবে।

নিম্নচাপের ফলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জুড়ে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত। তার মধ্যে সুন্দরবন এলাকায় বৃষ্টির পরিমাণ বেশি। সুন্দরবন এলাকার সবকটি ব্লকের বাঁধ নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন। কাকদ্বীপ মহকুমার নামখানা, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ এবং সাগর ব্লকের গঙ্গাসাগর সমুদ্রতট, মৌসুনি দ্বীপ, নারায়ণগঞ্জ ও গোবর্ধনপুর এলাকায় নদী বাঁধে ধস নেমেছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। নোনা জল ঢুকছে বাঁধ উপচে।

নামখানা ব্লকের নারায়ণগঞ্জে প্রায় ১২০০ মিটার মাটির বাঁধ ধস নেমে মুড়িগঙ্গা নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, গত বছর এই বাঁধটি প্রায় ছয় কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়েছিল। অল্প কয়েক মাসেই বাঁধের এমন অবস্থা কী করে হল সেই প্রশ্ন উঠেছ। আতঙ্কিত বাসিন্দাদের কথায়, ‘‘যে কোনও সময় বাঁধটি পুরোপুরি ভেঙ্গে যেতে পারে।’’ তাছাড়া পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুর এলাকায় প্রায় ২০০ মিটার নদীবাঁধ ধস নেমে ভেঙে গিয়েছে। সাগরের সাউঘেরি, মহিষামারি, বোটখালি এলাকাতেও নদী বাঁধের অবস্থা বেহাল।
পূর্ণিমার কটালে হঠাৎই নামখানার মৌসুনি দ্বীপের পয়লাঘেরিতে নদীবাঁধে ধস নামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পয়লাঘেরিতে চিনাই নদীর বাঁধে প্রায় ১০০ ফুট জায়গা জুড়ে ওই ধস নেমেছে। তবে এখনও পর্যন্ত নদী বাঁধ ভেঙে বা ছাপিয়ে গ্রামে নোনা জল ঢোকেনি। ধস নেমেছে নামখানার দুর্গানগর এলাকাতেও। সেখানে সপ্তমুখী নদীর জলের তোড়ে ৫০০ মিটার নদীবাঁধ ভেসে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, নদীতে জোয়ার হলে সবাই বাঁধের কাছাকাছি চলে আসছেন। গ্রামবাসীরা সকলে এখন নদীবাঁধের উপর নজর রেখেছেন। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘বাঁধের ভাঙা অংশে ত্রিপল চাপিয়ে নদীবাঁধ বাঁচানোর চেষ্টাও করা হচ্ছে। যাতে নদীর জলে বাঁধের মাটি ভেসে না যায়।’’

উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের আশঙ্কা, দ্রুত নদীবাঁধ মেরামতি না হলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হবে। কিছুদিন আগেই চাষবাস শেষ হয়েছে। নোনাজল জমিতে ঢুকে গেলে সব নষ্ট হয়ে যাবে বলে উদ্বেগে রয়েছেন তাঁরা। এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘ঘরবাড়ি, পুকুর তো যাবেই। বৃষ্টির দিনে যেন উদ্বাস্তু হতে না হয়। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিক।’’

সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘সুন্দরবন এলাকায় যে সমস্ত নদীবাঁধের মাটি আলগা হয়ে গিয়েছে, তা প্রশাসনের নজরে রয়েছে। দুর্যোগ না কাটলে ভাল করে বাঁধ মেরামতির কাজ করা যাছে না। এই সপ্তাহের শেষ থেকে ধাপে ধাপে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sundarbans kakdwip
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE