প্রতীকী ছবি।
করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের পাশাপাশি আমপান পরবর্তী সুন্দরবন এলাকার মহিলাদের নদী-নির্ভরতা বেড়েছে। সংসার চালাতে বাড়ির পুরুষদের পাশাপাশি নদীর জলে নামছেন বাড়ির মহিলারাও। ফলে ওই সব মহিলারা আক্রান্ত হচ্ছেন জরায়ু রোগে। সুন্দরবনের বিভিন্ন দ্বীপ এলাকায় বহু মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন নদীতে মাছ, কাঁকড়া, বাগদার মিন ধরে। এ জন্য তাঁদের জোয়ারের সময়ে কোমর সমান জলে নেমে কাজ করতে হয়। জরায়ুর রোগ ছাড়াও বাড়ছে চর্মরোগ ও জলবাহিত নানা রোগ। লকডাউন পরিস্থিতিতে সরকারি হাসপাতালেও যেতে পারছেন না অনেকে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকার প্রায় লক্ষাধিক মহিলা জরায়ু ও স্ত্রীরোগের নানা সমস্যায় ভুগছেন। এ বিষয়ে গোসাবা ব্লক হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিত্রলেখা সর্দার বলেন, ‘‘প্রায়ই প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকার বহু মহিলা জরায়ু ও স্ত্রীরোগের সমস্যা নিয়ে আসছেন। দীর্ঘক্ষণ নদীর নোনা জলে কোমর পর্যন্ত ভিজে থাকার কারণে যৌনাঙ্গে সংক্রমণ হচ্ছে। পরিচ্ছন্নতার অভাবে নানা ধরনের চর্মরোগেও ভুগছেন তাঁরা।’’ ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার অপূর্বলাল সরকার বলেন, ‘‘সুন্দরবনের মহিলারা অনেক বেশি স্ত্রীরোগে আক্রান্ত হন। অনেকেই চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে রোগ গোপন করার চেষ্টা করেন। যে কারণে সমস্যাটা বেড়ে যাচ্ছে। সরকারিভাবে হাসপাতালগুলিতে মহিলাদের জন্য আলাদা বিভাগ তৈরি করা হয়েছে। বিনা পয়সায় নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।’’ গোসাবা ব্লকের পুঁইজালি গ্রামের অনিতা আড়ির ঘরবাড়ি তছনছ হয়ে যায় আমপানে। করোনা পরিস্থিতিতে ও লকডাউনের কারণে বাড়ির পুরুষ সদস্যেরা কাজ হারিয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছেন। গ্রামে কোনও পাননি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে অনিতাদের তাই নদীর উপরে নির্ভরতা বেড়েছে। বাগদার মিন ধরে স্থানীয় আড়তদারদের কাছে বিক্রি করেন। অনিতা আড়ি, মিনতি সর্দাররা বলেন, ‘‘নদীতে জাল না টানলে খাবো কী! পেটের টানে নদীতে নামতেই হয়। যেটুকু মিন ওঠে, তা বিক্রি করে কোনও রকমে সংসার চলে। আমাদের মতো গরিব মানুষের নানা রকম অসুখ- বিসুখ লেগেই আছে। হাজা, চুলকানি সহ নানা রকম স্ত্রীরোগের সমস্যা হয়।’’ অনিতা বলেন, ‘‘এ সব নিয়েই আমাদের জীবন। সব সময়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়াও হয় না। পরিস্থিতির কারণে অনেক কিছুই মানিয়ে নিয়ে চলতে হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy