ব্যারাকপুর আদালতের পথে সুজয় পাত্র ও সাগর দে। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।
দুষ্কৃতীদের ‘টার্গেট’ ছিলেন বাইকচালক। তিনি গুলিবিদ্ধ হলেন। ঘটনাস্থলে গুলিতে জখম হয়ে গেলেন এক গাড়িচালকও। ওই রাস্তা দিয়েই গাড়ি নিয়ে আসছিলেন তিনি। পুলিশ প্রথমে ভেবেছিল, দু’টি ঘটনার পিছনে রয়েছে একই দুষ্কৃতী দল। ইছাপুর গুলি-কাণ্ডের সপ্তাহ পার হওয়ার পরে জানা গেল, গাড়ির চালককে গুলি করেছিল জখম নেপাল (গোবিন্দ) দাসের দুই সঙ্গী।
সেই অভিযোগে নোয়াপাড়া থানার পুলিশ শুক্রবার দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের নাম সাগর দে ও সুজয় পাত্র। ইছাপুরের বাপুজি কলোনির একটি বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই বাড়িতেই আত্মগোপন করেছিল তারা। তাদের কাছ থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ঘটনার দিন তারা সশস্ত্র অবস্থায় নেপালের সঙ্গেই ছিল।
অর্থাৎ, তাঁর উপরে যে হামলা হতে পারে, তা আঁচ করে সশস্ত্র সঙ্গীদের নিয়েই ঘুরতেন এক সময়ের দাগি নেপাল। তবে পুলিশের ধারণা, নেপালকে গুলি করার জন্য বাইরে থেকে শুটার ভাড়া করে আনা হয়েছিল। নেপাল এখনও কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অবস্থার উন্নতি হলেও বিপন্মুক্ত নন তিনি। চিকিৎসকেরা এখনও পুলিশকে তাঁর সঙ্গে কথা বলার অনুমতি দেননি।
গত ২ ডিসেম্বর বিকেল ৪টে নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাইকে যাচ্ছিলেন নেপাল। প্রায় ফাঁকা রাস্তায় তাঁর মাথায় গুলি করে দুষ্কৃতীরা। গুলি খেয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। সেই সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে নিজের বেহালার বাড়িতে ফিরছিলেন সন্দীপ দাস। ইছাপুরের মায়াপল্লির রেললাইনের ধারে ঘটনাস্থলের কাছে তাঁর গাড়ি আটকায় দু’জন। তারা কিছু বললেও জানলার কাচ বন্ধ থাকায় তা শুনতে পাননি সন্দীপ। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই বন্ধ জানলার কাচের এ পাশ থেকে গুলি চালায় এক দুষ্কৃতী। সেই গুলি কাচ ফুঁড়ে সন্দীপের পায়ে লাগে। ব্যারাকপুরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
ঘটনার পরে পুলিশ ভেবেছিল, যে দুষ্কৃতীরা নেপালকে গুলি করেছে, তারাই সম্ভবত সন্দীপের উপরে গুলি চালিয়েছে। দিন দুয়েক পরে পুলিশ জানতে পারে, নেপালের সঙ্গে ওই বাইকে আরও দু’জন ছিল। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে পুলিশ সাগর ও সুজয়কে তলব করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে তাদের বক্তব্যে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এর পরেও পুলিশ তাদের তলব করে। কিন্তু তারা এড়িয়ে যাচ্ছিল পুলিশকে। পরে তারা গায়েব হয়ে যায়। তখনই পুলিশ বুঝতে পারে, সাগরদের ভূমিকা সন্দেহজনক।
তাদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। শেষ পর্যন্ত গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বাপুজি কলোনির একটি বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (সাউথ) অজয় ঠাকুর বলেন, “ধৃতেরা ঘটনার সময়ে নেপালের সঙ্গে সশস্ত্র অবস্থায় ছিল। সেই অস্ত্র বাজেয়াপ্ত হয়েছে। গাড়ির চালককে তাদের মধ্যেই এক জন গুলি করেছিল। ঘটনার তদন্ত চলছে। নেপালকে কারা গুলি করেছিল, তার কিছু সূত্র আমাদের হাতে এসেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy