সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে রোগীর মৃত্যকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা। —ফাইল চিত্র।
সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক, নার্সদের উপর হামলার ঘটনায় সোমবার কামারহাটি থানায় আত্মসমর্পণ করলেন দু’জন। তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এই মামলায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ছয়। একই সঙ্গে শুক্রবার রাতে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে চিকিৎসক এবং নার্সদের বিরুদ্ধে কামারহাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করল মৃতার পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই দায়ের করা হয়েছে এফআইআর।
গত শুক্রবার সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে এক রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে রঞ্জনা সাউ নামে এক মহিলাকে ভর্তি করানো হয়েছিল ওই হাসপাতালে। অভিযোগ, হাসপাতালে আনার পরেও রোগীর কোনও রকম চিকিৎসা করা হয়নি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে স্বাস্থ্যকর্মীরা অক্সিজেনের ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি ওই রোগীকে। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
অভিযোগ, মৃতার পরিবারের লোকেরা হাসপাতালে ভাঙচুর চালান। চারতলায় উঠে এসে জুনিয়র ডাক্তারদের মারধর করা হয়। এমনকি, মহিলা চিকিৎসকদের ঘর থেকে টেনে বার করে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। এই ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তার, নার্স-সহ সাত জন আহত হয়েছেন। তার পর থেকেই হাসপাতালে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে, এমন দাবি তুলে কর্মবিরতি শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ওই ঘটনায় শনিবারই পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছিল। সোমবার ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আরও দু’জন থানায় আত্মসমপর্ণ করেছেন। তাঁদেরও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
তবে শনিবার ধৃতদের ছাড়ার দাবিতে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখায় মৃতের পরিবার। তারা জানায়, পুলিশ ধৃতদের না ছাড়লে দেহ নেবে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। অন্য দিকে, শুক্রবার রাত থেকেই জুনিয়র ডাক্তারেরা হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। একাধিক দাবি তুলে অবস্থানে বসেছেন তাঁরা। কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা।
ঘটনার পর থেকেই সাগর দত্ত মেডিক্যালে নিরাপত্তায় জোর দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের ফাঁড়িতে বৃদ্ধি করা হয়েছে পুলিশের সংখ্যা। পাশাপাশি, নতুন সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজও চলছে। সোমবার সুপার সুজয় মিস্ত্রির সঙ্গে হাসপাতাল পরিদর্শন করেন পুলিশ আধিকারিকেরা। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ওই হাসপাতালে যে ঘটনা ঘটেছে, তার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে একগুচ্ছ নতুন পদক্ষেপের কথা জানান সুপার। রোগী ছাড়া বিকেল ৫টার পর থেকে হাসপাতালে প্রবেশের উপর রাশ টানা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও সিসি ক্যামেরা বসানোর কথাও জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy