মথুরাপুর যাওয়ার একমাত্র ভরসা লোকাল ট্রেন। ফাইল চিত্র।
মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিধানসভাগুলির মধ্যে বেশিরভাগ এলাকার বাসিন্দার কলকাতায় যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ট্রেন। সরাসরি বাস যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যায় পড়ছেন বহু মানুষ।
মন্দিরবাজার, রায়দিঘি, মথুরাপুর ১ ও ২, কুলপি, মগরাহাট ২ ব্লকগুলি মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এখানে কয়েক লক্ষ মানুষের বসবাস হলেও এখনও কলকাতার সঙ্গে সরাসরি বাসরুট গড়ে ওঠেনি। রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লকের বাসিন্দাদের কলকাতায় যেতে হলে রায়দিঘি বাসস্ট্যান্ড থেকে বেসরকারি বাস বা ছোট গাড়িতে মথুরাপুর স্টেশনে আসতে হয়। সেখান থেকে শিয়ালদহ পৌঁছতে সময় লাগে ঘণ্টা দেড়েক। এ দিকে, আবার এক ঘণ্টা অন্তর ট্রেন। দূর থেকে এসে ট্রেন ধরার সময়ে একটা ট্রেন না ধরতে পারলে অনেকটা সময় নষ্ট হয়। রোগীকে নিয়ে কলকাতায় যেতে গেলে পরিবহণের সমস্যায় পরিস্থিতি অনেক সময়ে জটিল হয়ে ওঠে।
মথুরাপুর ১, মন্দিরবাজার ব্লকের বাসিন্দাদের ট্রেন ধরে পৌঁছতে হয় কলকাতায়। সে জন্য ছোট গাড়িতে করে স্টেশনে পৌঁছতে হয়। মন্দিরবাজারের বাসিন্দাদের ভরসা শিয়ালদহ-লক্ষ্মীকান্তপুর শাখার লক্ষ্মীকান্তপুর, মথুরাপুর ও মাধবপুর স্টেশন বা শিয়ালদহ-ডায়মন্ড হারবার শাখার সংগ্রামপুর স্টেশন।
মগরাহাট ১ ব্লকের বাসিন্দাদের ভূতল পরিবহণ নিগমের বাসে সরাসরি কলকাতায় যাতায়াতের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই পরিষেবা মিলছে না। ট্রেনের উপরেই নির্ভর করছেন মানুষ।
মগরাহাট ২ ব্লকের বাসিন্দাদের জন্য কিছু বছর আগে পর্যন্ত বাস ছিল। কিন্তু এখন তা বন্ধ। ফলে তাঁরাও সম্পূর্ণ ট্রেনের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। ভিড়ে ঠাসা এক ঘণ্টা অন্তর ট্রেনের অপেক্ষায় থাকতে হয় তাঁদের।
অনেক সময়ে মগরাহাট, সংগ্রামপুর, মথুরাপুরের মতো মাঝখানের স্টেশন থেকে ভিড়ের চাপে ট্রেনে উঠতেই পারেন না অনেকে। মহিলা, বয়স্ক মানুষ ও শিশুদের ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়ে। জরুরি কাজ থাকলে বাধ্য হয়ে অনেক টাকা খরচ করে গাড়ি ভাড়া করে কলকাতায় পৌঁছতে হয়।
এলাকার অনেকের অভিযোগ, জেলা জুড়ে সর্বত্রই প্রায় কলকাতার সঙ্গে সরাসরি বেসরকারি বাস যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। কিন্তু এই এলাকায় সেটা হয়নি। এমনিতেই গ্রামীণ এলাকার রাস্তা ভাল নয়, ট্রেন ধরার জন্য ছোট গাড়িতে যাতায়াতের সময়ে মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটে। বেশি রাতের দিকে গ্রামীণ এলাকায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে বাড়ি ফিরতে সমস্যা হয়।
রায়দিঘির মথুরাপুর ২ এলাকার নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ইয়াসিন গাজি বলেন, “রায়দিঘি থেকে জয়নগর ট্রেনপথ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আজও হল না। ট্রেন ধরার তাড়া নিয়ে মথুরাপুর স্টেশনে পৌঁছতে গিয়ে দ্রুত গাড়ি চালাতে বাধ্য করা হয় চালককে। হামেশাই দুর্ঘটনা ঘটে। সময়ও লাগে প্রায় ৪৫ মিনিট। অথচ, ট্রেন চলাচল শুরু হলে ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে আমরা জয়নগরে পৌঁছে যেতাম। অবিলম্বে জয়নগর থেকে রায়দিঘি পর্যন্ত রেলপথের সম্প্রসারণের কাজ শুরু হোক।”
রায়দিঘির বিধায়ক অলোক জলদাতা বলেন, “একটা সরকারি বাস ধর্মতলা পর্যন্ত চলত। কিন্তু রাস্তা সংস্কারের জন্য তা বন্ধ রয়েছে। আরও বেশি করে ভূতল পরিবহণ নিগমের বাস চলাচল করার জন্য বিভাগীয় মন্ত্রীকে জানানো হয়েছিল। তিনি জানিয়েছিলেন, রাস্তা সংস্কার হয়ে গেলে ব্যবস্থা নেবেন।” জয়নগর-রায়দিঘি ট্রেন লাইন সম্প্রসারণের বিষয়ে তিনি বলেন, “কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ করলে কাজ শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy