কাটমানি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে জোটবদ্ধ হয়ে আন্দোলন শুরু করলেন বনগাঁ শহরের ই-রিকশা ও টোটো চালকেরা। সোমবার সকালে তাঁরা শহরে প্রতিবাদ মিছিল করেন। ত্রিকোণ পার্ক এলাকা থেকে মিছিল শুরু হয়ে শহর পরিক্রমা করে মিছিল শেষ হয় বনগাঁ পুলিশ সুপারের অফিসের কাছে। পুলিশ ও মহকুমাশাসকের কাছে দাবিপত্রও দিয়েছেন তাঁরা।
ই-রিকশা ও টোটো চালকদের দাবি, জোর করে তাঁদের কাছ থেকে রোজ কুড়ি টাকা করে নেওয়া হত। পুরনো গাড়ি তাঁরা নিজেদের ইচ্ছে মতো বিক্রি করতে পারতেন না। ইউনিয়নের মাধ্যমে বিক্রি করা হত। পুরনো গাড়ি কিনতে হলে ইউনিয়নের কর্তাদের কাটমানি দিতে হত। নতুন গাড়ি কেনা হলেও তাঁদের রসিদ দেওয়া হয়নি।
চালকদের অভিযোগ, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন অনুমোদিত বনগাঁ মতিগঞ্জ নিমতলা ই-রিকশা ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এসডিপিও (বনগাঁ) অশেষ বিক্রম দস্তিদার বলেন, ‘‘চালকেরা তাঁদের দাবিপত্র জমা দিয়েছেন। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লাগানো পোশাক পরে মিছিল (বাঁ-দিকে)। টোটো ইউনিয়নের রসিদ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
ই-রিকশা চালকেরা এ দিন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের ব্যানার নিয়ে মিছিল করেছেন। তাতে মুখ্যমন্ত্রী ও বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের ছবি ছিল। যা নিয়ে তৃণমূল পাল্টা অভিযোগ তুলেছে। শহর তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ই-রিকশা চালকেরা দলের কাছ থেকে কোনও অনুমতি না নিয়েই দলের ব্যানার ব্যবহার করেছেন। শঙ্কর বলেন, ‘‘মতিগঞ্জ এলাকায় রবিবার গভীর রাত পর্যন্ত বিজেপির কার্যালয়ে বৈঠক করে চালকেরা বিজেপির মদতে সোমবার মিছিল করেছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ও আমার ছবি ব্যবহার করার অনুমতি ওরা নেয়নি। ওরা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া পোশাক পরে মিছিল করেছেন। মিছিল শেষে আবার সেই পোশাক খুলে ফেলেছেন। ওদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করছি।’’
পুরপ্রধান বলেন, ‘‘বেআইনি কিছু টোটো শহরে চলছে। বনগাঁ শহরকে যানজটমুক্ত করতে প্রশাসনকে বেআইনি টোটো চলাচলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ওই বেআইনি টোটো চালকদের পুরসভার কোনও অনুমতি পত্রও নেই।’’ ই- রিকশা চালকদের দাবি, তাঁরা তৃণমূলই করেন। রবিবারও তাঁরা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের দাবি দাওয়া বিয়ে বৈঠক করেছেন। রাজনীতির মধ্যে তাঁরা নন। তাঁরা চাইছেন টাকা ফেরত দেওয়া হোক।
মদত দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘ই-রিকশা ও টোটো চালকেরা নিজেরা দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচারিত। তাঁরাই টাকা ফেরানোর দাবি তুলেছেন। দলের সঙ্গে ওদের কোনও সম্পর্ক নেই।’’