—প্রতীকী চিত্র।
বারাসতে ছেলেধরা সন্দেহে তিন জনকে গণপিটুনির ঘটনায় মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের বৃহস্পতিবারই আদালতে হাজির করানো হবে। গ্রেফতারির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে।
গত কয়েক দিন ধরে বারাসত এলাকায় ছেলেধরার গুজব রটেছে। এক বালকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। সমাজমাধ্যমেও তা নিয়ে চর্চা চলছে। ওই বালকের মৃত্যুর সঙ্গে শিশু চুরি বা ছেলেধরার কোনও সম্পর্ক নেই বলে আগেই জানিয়েছিল পুলিশ। তবু গুজব থামেনি। গুজবের জেরে বুধবার বারাসতের দুই এলাকায় দু’টি পৃথক ঘটনা ঘটে। মোল্লাপাড়ায় এক ব্যক্তিকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেয় জনতা। অন্য দিকে, মডার্ন স্কুলের সামনে এক মহিলা এবং তাঁর সঙ্গীকেও একই ভাবে ছেলেধরা মনে করে বেধড়ক মারধর করা হয়। অভিযোগ, পুলিশের সামনেই ওই দু’জনকে টেনে হিঁচড়ে মারধর করা হয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যে, তা সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। আক্রান্ত তিন জনই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বারাসত পুলিশ জেলার সুপার প্রতীক্ষা ঝারখারিয়া বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, বারাসতে কোনও শিশুচুরির ঘটনাই ঘটেনি। যে বালকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এই গুজব, তাকে খুন করা হয়েছে। খুনের অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। ছেলেধরার সঙ্গে সেই খুনের সম্পর্ক নেই। এ বিষয়ে অযথা গুজব ছড়ানো বা গুজবে কান দিতে নিষেধ করেছেন সুপার।
বারাসতের কাজিপাড়ায় ওই বালককে কেউ বা কারা নৃশংস ভাবে খুন করেছিল। গুজব রটে যায়, ছেলেধরার খপ্পরে পড়েছিল ওই বালক। ছেলেধরা তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে চোখ উপড়ে, কিডনি বার করে খুন করে। ঝুলন্ত অবস্থায় বালকের দেহ মেলে। পুলিশ তদন্তে নেমে প্রথমেই ছেলেধরা-তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছিল। জানিয়েছিল, ময়নাতদন্তে এমন কোনও ঘটনার প্রমাণ মেলেনি। এই ঘটনার পর থেকেই সমাজমাধ্যমে ঘুরতে শুরু করে বারাসতের ছেলেধরার কাহিনি। বলা হয়, বারাসতে ছেলেধরার দৌরাত্ম্য বেড়ে গিয়েছে। বারাসতের বলে অন্য বিভিন্ন জায়গার ভিডিয়োও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। এই গুজব এবং সমাজমাধ্যমে ‘অপপ্রচারের’ কারণেই বুধবার তিন জন সন্দেহের বশে গণধোলাই খেলেন বলে দাবি পুলিশের।
বুধবারের ঘটনার তদন্তে নেমে দুই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। গণপিটুনি যাঁরা দিয়েছেন, তাঁদের বেশ কয়েক জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত গ্রেফতারির সংখ্যা ১৭। তা আরও বাড়তে পারে বলে অনেকের ধারণা। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বারাসত মহকুমা আদালতে হাজির করিয়ে হেফাজতে চাইবে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy