ধর্মঘটের সমর্থে মিছিল। নিজস্ব চিত্র।
এ বার যেন কিছুটা উলটপুরাণ। অন্যান্য বার কেউ ধর্মঘট বা বন্ধ ডাকলেই সরকারের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়, যাতে রাজ্য অচল না হয়ে পড়ে। সরকারে থাকার কারণে শাসকদলও রাজনৈতিক ভাবে ধর্মঘটবিরোধী অবস্থান নেয়। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে এমনটাই রীতি। কিন্তু আগামিকাল বৃহস্পতিবার শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘট ‘ব্যর্থ’ করতে শাসকদলের তেমন কোনও উদ্যোগ বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কোথাও চোখে পড়েনি।
কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম ও কৃষি আইন-সহ নানা ‘জন-বিরোধী’ নীতির প্রতিবাদে এবং ৭ দফা দাবিতে আগামিকাল ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে দেশ জুড়ে। ধর্মঘট সমর্থনে বাম-কংগ্রেসের মিছিল, মিটিং, সভা, পথসভা চলছে গত কয়েকদিন ধরেই। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন ব্লকে আলাদা আলাদা করে এ সব হয়েছে। তবে তৃণমূল ধর্মঘটের বিরুদ্ধে পথে নেমে প্রচার করেনি। গত প্রায় ১ দশকে এমনটা দেখা যায়নি কখনও।
ধর্মঘটের সমর্থকরা কী ভাবে দেখছেন বিষয়টিকে? সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক সত্যসেবী করের মতে, ‘‘তৃণমূল টিভিতে আছে। রাস্তায় নেই। মানুষের পাশে নেই। ফলে এমনটাই তো হওয়ার কথা।’’ জেলা ফরওয়ার্ড ব্লকের সম্পাদক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের যেমন বলছেন, ‘‘বামেরা যে ভাবে বিপুল সমর্থন নিয়ে ধর্মঘটের সমর্থনে বাইক মিছিল, পথসভা করেছে তাতে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো আগে থেকে বুঝতে পেরেছে, এই ধর্মঘট হবে সাধারণ মানুষের। সে কারণে ওরা নীরব।’’
কেন তাঁরা নীরব? এ প্রসঙ্গে জেলার একাধিক ছোটবড় তৃণমূল নেতা নিরুত্তর থেকেছেন। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তাঁদের একটা অংশের মতে, দলীয় নির্দেশ এলেই পথে নামতে পারেন তাঁরা। তেমন নির্দেশ কি নেই? জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী বলছেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরেই ধর্মঘটের বিরুদ্ধে বলে এসেছি আমরা। তাই নতুন করে কিছু বলার দরকার নেই। মানুষ ধর্মঘটে নেই। তৃণমূলের পাশে আছে।’’
আর রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ছোট্ট মন্তব্য, ‘‘আমরা ধর্মঘটের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে আর কিছু বলতে চাই না।’’
জেলার বিজেপি নেতৃত্ব কিন্তু আবার বামেদেরই কটাক্ষ করেছেন। বিজেপি নেতা তথা ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের কথায়, ‘‘বামেদের সংগঠন নেই। কর্মী নেই। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে এই বন্ধের কোনও প্রভাব পড়বে না।’’
জেলা বিজেপি-র নেতা বিপ্লব হালদার তৃণমূলকেও একই বন্ধনীতে রেখেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের মধ্যে ধর্মঘটের কোনও অনুভূতি নেই। মানুষ অপেক্ষা করছে, নির্বাচনে কী ভাবে তৃণমূলকে পরাজিত করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy