Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

টাকা ফেরত চেয়ে নেতাকে ধাক্কাধাক্কি

মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মগরাহাটে। এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ মুলটি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য তথা তৃণমূল নেতা সুবল মণ্ডলকে বাড়ি থেকে ধাক্কা মারতে মারতে বের করে গ্রামের কিছু লোক।

তর্কাতর্কি: পুলিশকে ঘিরে চলছে ক্ষোভ। ছবি: দিলীপ নস্কর

তর্কাতর্কি: পুলিশকে ঘিরে চলছে ক্ষোভ। ছবি: দিলীপ নস্কর

নিজস্ব সংবাদদাতা
মগরাহাট শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৯ ০০:৩৭
Share: Save:

কাটমানি ফেরতের দাবিতে দিন কয়েক ধরে তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে গ্রামবাসীদের আলোচনায় বসার কথা চলছিল। কিন্তু তিনি আলোচনায় বসতে চাইছিলেন না বলে অভিযোগ। বাড়ির সামনে শুরু হয় বিক্ষোভ। ওই তৃণমূল নেতাকে বাড়ি থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে জনতা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মগরাহাটে। এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ মুলটি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য তথা তৃণমূল নেতা সুবল মণ্ডলকে বাড়ি থেকে ধাক্কা মারতে মারতে বের করে গ্রামের কিছু লোক। নিয়ে যাওয়া হয় একটি স্কুলঘরে। ঘণ্টাখানেক পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় আনে। এক বিক্ষোভকারীকেও আটক করা হয়।

আটকে রাখা বিক্ষোভকারীকে ছাড়ানোর জন্য ধামুয়া-সরবেড়িয়া রোডের তসরলা মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসীরা। বেলা ২টো থেকে আধ ঘণ্টা অবরোধ চলে।

পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মগরাহাট ২ ব্লকের মুলটি পঞ্চায়েতের তসরলা তাঁতিয়াটি গ্রামের সুবলের বিরুদ্ধে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ ছিল। মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি ফেরত দেওয়ার কথা ঘোষণা করতেই জোর পান গ্রামবাসী। তাই দিন কয়েক ধরে গ্রামবাসীরা ওই সদস্যের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইছিলেন।

অভিযোগ, কিছুতেই সময় দিচ্ছিলেন না সুবল। এ দিন সকালে গ্রামের কিছু মানুষ তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়। টাকা ফেরতের বিষয়ে কথা বলতে সুবলকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় স্কুলে। আন্দোলনকারীরা জানান, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বনসৃজন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, রাস্তা তৈরি, নলকূপ বসানো বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা-সহ সমস্ত প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন সুবল। আরও অভিযোগ, ওই সদস্য এলাকায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ বা পাবিরারিক বিবাদ মেটাতে গেলেও টাকা নিতেন। কখনও কখনও উপঢৌকন হিসাবে নেওয়া হত মদের বোতল! স্থানীয় মানুষজন জানালেন, বছর কয়েক আগে পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে পাউরুটি ফেরি করতেন সুবল। অথচ শাসকদলের সদস্য হওয়ার পরেই ফুলে ফেঁপে উঠেছেন। তৈরি করেছেন বড় পাকা বাড়ি। একাধিক এলাকায় জমি কিনেছেন।

বিক্ষোভকারীদের পক্ষে অপর্ণা মণ্ডল, সুতপা মণ্ডলদের অভিযোগ, ওই সদস্যের কাছে কোনও কাজ নিয়ে গেলে কাটমানি না দিলে কাজই হত না। সরকারি প্রকল্পের টাকা উপভোক্তাদের নামে ব্যাঙ্কে ঢুকলে তারও বাগ দিতে হত সুবলকে। না হলে নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হত বলে অভিযোগ। আন্দোলনকারী দেবাশিস আচার্যের অভিযোগ, ‘‘২০-২৫ লক্ষ টাকা কাটমানি খেয়েছেন সুবল। সমস্ত টাকা ফেরত দিতে হবে।’’

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ উড়িয়ে সুবল বলেন, ‘‘আমি কোনও কাটমানি নিইনি। কিছু বিজেপির লোকজন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’ তাঁর দাবি, রুটি ব্যবসার পাশাপাশি তাঁর জমিজায়গাও ছিল। তা দিয়েই নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন।

মগরাহাট পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক নমিতা সাহা বলেন, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। গ্রামের মানুষের এ ধরনের আচরণ ঠিক নয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

extortion magrahat TMC Bribe
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy