আরাবুল ইসলাম। —নিজস্ব চিত্র।
তিনি ভাঙড়ের নেতা। ভাঙড় তাঁর কাছ থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর জেল থেকে বেরিয়ে মন্তব্য করলেন ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক, তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। বুধবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ জেল থেকে ছাড়া পান আরাবুল। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘লোকসভায় যে ফল হয়েছে, তাতে আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে আবার রাজ্যে তৃণমূলের ক্ষমতায় আসা নিশ্চিত।’’ কিন্তু তিনি কি তৃণমূলে ইতিমধ্যেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন? আরাবুল জানান, যা বলার সাত দিন পরে বলবেন।
ভাঙড়ের ‘তাজা নেতা’ আরাবুলের বিরুদ্ধে খুন-সহ ৯টি মামলা রুজু হয়েছিল। গত ৮ ফেব্রুয়ারি তাঁকে গ্রেফতার করেছিল উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ। তার পর পোলেরহাট, ভাঙড় থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে নাম জড়ায় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একাধিক বার তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। পাল্টা পুলিশের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন আরাবুল। অবশেষে হাই কোর্ট তাঁর জামিন মঞ্জুর করার পর বুধবার বারুইপুর সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পান আরাবুল।
সংশোধনাগারের সামনে অনুগামীদের ভিড় থেকে উঠে আসে ‘ভাঙড়ের নয়নের মণি আরাবুল ইসলাম জিন্দাবাদ’ স্লোগান। ফুলের মালা গলায় পরে হাসির রেখা ফুটে ওঠে তাজা নেতার মুখে। পরনে কালো শার্ট, কালো ট্রাউজ়ার্স। ভগ্ন শরীর। অনুগামীদের দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন আরাবুল। কান্না চেপে কাঁপা কাঁপা গলায় তৃণমূলের ‘তাজানেতা’ বলেন, ‘‘আমি অসুস্থ। সুস্থ হলে ভাঙড়ের মিডিয়াকে ডেকে সব কথা বলব।’’ পর ক্ষণেই তাঁর সংযোজন, ‘‘কেউ ভাঙড় কেড়ে নিতে পারে না। প্রশাসনে অনেক ব্যাপার আছে। কেউ কাউকে হটিয়ে দিতে পারে না। আমি নির্বাচিত প্রতিনিধি। পঞ্চায়েত সদস্যেরা আমায় ভোট দিয়েছেন। টোটাল বিষয়ে আমি এক সপ্তাহ পরে কথা বলব।’’
জেলে থাকার সময়ই ভাঙড়-২ ব্লক তৃণমূলের আহ্বায়ক পদ খুইয়েছেন আরাবুল। লোকসভা ভোটে আরাবুলহীন ভাঙড়ে শওকতের নেতৃত্বে তৃণমূল ভাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছে। তার পর গত ৯ জুন ভাঙড়-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সোনালি বাছাড়কে কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছে। বুধবারই দেখা যায় পঞ্চায়েত সমিতির যে ঘরে আরাবুল বসতেন, সেখান থেকে তাঁর নামফলক খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই প্রসঙ্গ উঠতেই অন্য কথায় চলে যান আরাবুল। তবে হাবেভাবে বোঝাতে চেয়েছেন ভাঙড়-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসাবে তাঁর নামের ফলক অফিস থেকে সরিয়ে দিলেও তাঁকে সরানো সহজ হবে না। পাশাপাশি ভাঙড়ের এক পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীকে তিনি খুনের চক্রান্ত করেছিলেন বলে দলেরই বিধায়ক শওকত মোল্লা যে অভিযোগ করেছেন, তার জবাব দেওয়ার জন্যও এক সপ্তাহ চাইলেন আরাবুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy