তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। —ফাইল চিত্র।
টানা প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলল জেরা। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, কার্যত তাতে ভেঙে পড়তে দেখা গেল ভাঙড়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামকে। দফায় দফায় জেরায় গলদঘর্ম হয়ে যান তিনি। বার বার তদন্তকারী অফিসারদের কাছ থেকে জল চেয়ে খান।
আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কলকাতা পুলিশের ডিটেক্টিভ ডিপার্টমেন্ট গত বৃহস্পতিবার ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। আপাতত তিনি লালবাজারে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। গ্রেফতারের প্রায় এক সপ্তাহ পরে বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ আরাবুলকে কাশীপুর থানায় আনা হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী ছিল। ওসির ঘরে তাঁকে দফায় দফায় তদন্তকারী অফিসারেরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর পঞ্চায়েত ভোট উপলক্ষে মনোনয়ন পর্বের শেষ দিন, ১৫ জুন ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজার মেলার মাঠে আইএসএফ ও তৃণমূলের বোমা-গুলির সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছিল তিন জনের।
এঁদের মধ্যে দু’জন তৃণমূল কর্মী, রশিদ মোল্লা ও রাজু নস্কর। অন্য দিকে মৃত্যু হয় আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লার। মহিউদ্দিনের বাবা কুতুবুদ্দিন মোল্লার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আরাবুলকে গ্রেফতার করে।
সে দিন ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজারে ঠিক কী ঘটেছিল, তা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রশ্ন করেন তদন্তকারী অফিসারেরা। আরাবুলের উত্তরের পাল্টা প্রশ্ন করতে থাকেন তাঁরা। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নাগাড়ে খুঁটিনাটি জেরায় কার্যত ভেঙে পড়তে দেখা যায় ‘দাদাকে।’ তাঁর মতো পোড় খাওয়া রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এ ভাবে গলদঘর্ম হবেন, তা দেখে কিছুটা অবাক তদন্তকারীরাও। পরে চা-বিস্কুট খাবেন কি না আরাবুল, জানতে চান অফিসারেরা। চা খেয়েছেন তিনি।
এ দিন আরাবুলের পরনে ছিল সাদা শার্ট। তাঁর স্ত্রী জাহানারা বিবি ও জেলা পরিষদ সদস্য খাদিজা বিবি দেখা করতে এসেছিলেন। পরে পরিবারের দেওয়া কালো প্যান্ট ও কালো ফুলহাতা গেঞ্জি পরে থানা থেকে বেরোতে দেখা যায় তাঁকে। বেরিয়ে যাওয়ার আগে স্ত্রীর কাছে নাতি-নাতনি ও পরিবারের সদস্যদের খোঁজ নেন। জাহানারা জানতে চান, শরীর কেমন আছে। ঠিক মতো ওষুধ খাচ্ছেন কি না।
এ দিন থানা থেকে লালবাজারে যাওয়ার আগে আরাবুলের অনুগামীরা থানার বাইরে ভিড় জমান। কিন্তু কড়া পুলিশি বেষ্টনীর মধ্যে কেউ ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি।
আরাবুল গ্রেফতার হওয়ার পরে তাঁকে ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজারে আনার কথা ছিল। কিন্তু এ দিন থানাতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে লালবাজারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কবে ফের ভাঙড়ে আনা হবে আরাবুলকে, তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি তদন্তকারী অফিসারেরা। আরাবুলের সঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে কথাও বলতে দেওয়া হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy