প্রতীকী ছবি।
পার্টি করতে বেরিয়েছিলেন ছয় বন্ধু। রাতভর হুল্লোড়ের পরে নিজেরাই নৌকা নিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন মাঝগঙ্গায়। তিন জন ফিরলেও বাকি তিন বন্ধুর কোনও খোঁজ নেই। শনিবার ব্যারাকপুরের ওই ঘটনা ঘিরে রহস্য ক্রমশ বাড়ছে।
যে তিন বন্ধু ফিরেছেন, তাঁদের দাবি, মাঝগঙ্গায় নৌকা উল্টে নিখোঁজ হয়েছেন বাকিরা। যদিও এই বক্তব্যে যথেষ্ট অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। ফেরত আসা তিন বন্ধুকেই গ্রেফতার করেছে টিটাগড় থানা। গঙ্গায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। তবে রবিবার রাত পর্যন্ত তিন জনের সন্ধান মেলেনি।
পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজেরা হলেন বিপিন পাসোয়ান, কমল ঘোষ ও অমিত বাল্মীকি। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের বন্ধু মহম্মদ শাহবাজ ওরফে জ্যাকি, রাজু দাস এবং বিশ্বনাথ ভৌমিককে। ছ’জনই ব্যারাকপুর সদর বাজারের বাসিন্দা। সকলেই ছোটখাটো কাজের সঙ্গে জড়িত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে ছয় বন্ধু বাড়ি থেকে বেরোন। জানিয়েছিলেন, রাতে পার্টি আছে। তার ফলে রাতে ওই যুবকেরা না ফেরায় বাড়ির লোকজন তেমন চিন্তা করেননি। কিন্তু শনিবার দুপুর পর্যন্তও কেউ বাড়ি না আসায় তাঁরা খোঁজ শুরু করেন।
শনিবার দুপুরে টিটাগড় ওয়াগন কারখানায় দুই যুবককে লুকিয়ে বসে থাকতে দেখে চোর সন্দেহে তাঁদের আটকে রাখেন সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীরা। টিটাগড় থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে দু’জনকে নিয়ে যায়। ওই দু’জন পুলিশকে জানান, তাঁদের নাম রাজু দাস এবং বিশ্বনাথ ভৌমিক। কিন্তু কারখানার ভিতরে তাঁরা কী করছিলেন, সেই প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর মেলেনি। এক সময়ে তাঁরা পুলিশকে জানান, মাঝগঙ্গায় তাঁদের নৌকা উল্টে গিয়েছিল। সাঁতরে পাড়ে উঠে কারখানার মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন।
কাছাকাছি প্রায় একই সময়ে ব্যারাকপুর থানায় আর এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, মঙ্গল পাণ্ডে ঘাট থেকে তাঁর ছিপ নৌকাটি খোয়া গিয়েছে। শেষমেশ সন্ধ্যা নাগাদ পুলিশ জানতে পারে, রাজু ও বিশ্বনাথের বাড়ি সদর বাজারে। তাঁদের বাড়িতে যান তদন্তকারীরা। তখনই এলাকায় ঘটনাটি জানাজানি হয়। জ্যাকি ছাড়া সকলের বাড়ির লোকজন টিটাগড় থানায় যান। তার পরেই পুলিশ পুরো বিষয়টি জানতে পারে। এরই মধ্যে এলাকা থেকে পুলিশ খবর পায়, জ্যাকি নিজের বাড়িতেই আছেন। তাঁকেও থানায় নিয়ে আসা হয়।
ধৃতেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, শুক্রবার সারা রাত তাঁরা গঙ্গার পাড়ে বসে মদ খেয়েছিলেন। শনিবার সকালে ফের আর এক দফা মদ কিনে আনা হয়। ছ’জন মিলে ঠিক করেন, নৌকায় বসে মদ খাবেন। সেই মতো মঙ্গল পাণ্ডে ঘাটে একটি দাঁড় টানা নৌকায় বসেন তাঁরা। বেলার দিকে নিজেরাই নৌকা নিয়ে মাঝগঙ্গায় চলে যান। কেউই হাল ধরতে জানতেন না। সকলেই ছিলেন মত্ত অবস্থায়। এমনকি নৌকাটিও ফুটো ছিল। ধৃতদের দাবি, নৌকায় জল ঢুকে গেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তাঁরা। সেই সময়ে নৌকাটি উল্টে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, জ্যাকি দাবি করেছেন, তিনি সাঁতরে রাসমণি ঘাটে উঠে বাড়ি চলে যান। কিন্তু তাঁরা কেউ পুলিশকে কেন কিছু জানালেন না, কিংবা বাকিদের বাড়িতেও কেউ খোঁজ নিলেন না কেন, সেই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি। শনিবার সন্ধ্যায় তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ মনে করছে, ধৃতদের বক্তব্যে যথেষ্ট অসঙ্গতি রয়েছে। সেই জন্য তাঁদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
বিপিনের ভাই জিতেন্দ্র পাসোয়ান বলেন, ‘‘জ্যাকিই দাদাকে জোর করে পার্টির জন্য ডেকে নিয়ে গিয়েছিল।’’ একই দাবি করেছেন কমলের বোন সৌমী ঘোষ এবং অমিতের মা মীরাদেবী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy