Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
একুশে জুলাই ভোর থেকে কমবে বাস

দিনভর ভোগান্তির আশঙ্কা থাকছেই

তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, হাজার দেড়েক বাস ভাড়া করা হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা থেকেও। এ ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি, বাইক তো থাকছেই। 

এমন ব্যস্ত রাস্তা দেখার সম্ভাবনা কম ২১ জুলাই।

এমন ব্যস্ত রাস্তা দেখার সম্ভাবনা কম ২১ জুলাই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৯ ০২:০১
Share: Save:

লক্ষাধিক কর্মী-সমর্থক দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে একুশে জুলাইয়ের সভায় কলকাতা যাবেন বলে দাবি করেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ৩০-৪০ হাজার মানুষ ট্রেনে পৌঁছবেন। বাকি হাজার ৫০-৬০ হাজার মানষ মূলত ভাড়ায় নেওয়া বেসরকারি ও সরকারি বাস, ম্যাটাডর, ছোট গাড়িতে সভায় আসবেন বলে জেলা নেতাদের দাবি। এ জন্য হাজার দেড়েক বাস ছাড়াও বেশ কিছু গাড়ি ভাড়া করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নেতারা। কলকাতা-সংলগ্ন এলাকা থেকে অনেকে নিজের গাড়ি ও মোটর বাইক নিয়েও সমাবেশে যাবেন। বিভিন্ন রুট থেকে বাস তুলে নিলে যাত্রী পরিষেবা বিঘ্নিত হবে কিনা, সে প্রশ্ন উঠেছে। জেলার আইএনটিটিইউসির সভাপতি শক্তি মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘ওই দিন রবিবার। ছুটির দিন। সাধারণ ভাবে মানুষ কলকাতার দিকে কম যাবেন। তেমন অসুবিধা হওয়া উচিত নয়।’’

বাস ও অন্যান্য গাড়ি ভাড়া বাবদ প্রায় কোটি টাকার উপরে খরচ হবে বলে অনুমান করছেন জেলা নেতারা। তবে ওই টাকা দলীয় তহবিল থেকে খরচ করা হচ্ছে না। জেলার এক নেতার কথায়, ‘‘সাধারণত বিধায়ক ও দলের ব্লক সভাপতিরাই ওই টাকার ব্যবস্থা করছেন।’’ কী ভাবে হচ্ছে সেই ব্যবস্থা? শক্তি বলেন, ‘‘নিচুতলার কর্মীরা চাঁদা তুলেই বাসের ভাড়ার ব্যবস্থা করেন। কিছু ক্ষেত্রে সমর্থকেরা নিজেরা চাঁদা দিয়ে থাকেন।’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সওকত মোল্লা জানান, জেলার সরকারি ও বেসরকারি রুটের প্রায় সব বাসই সমাবেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য বুকিং করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাস মালিক সংগঠনের এক নেতার কথায়, ‘‘ওই দিন জেলায় কোনও রুটেই সরকারি-বেসরকারি বাস চালানো যাবে না বলেই মনে হচ্ছে। রবিবার ছুটি দিন হলেও কিছু মানুষ তো যাতায়াত করবেনই। তাঁদের অসুবিধা হবে।’’

তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, হাজার দেড়েক বাস ভাড়া করা হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা থেকেও। এ ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি, বাইক তো থাকছেই।

লোকসভা ভোটের পরে এই জেলায় ইতিমধ্যে বহু এলাকায় ধাক্কা খেয়েছে শাসক দল। ব্যারাকপুর ও বনগাঁ লোকসভায় জয়ী হয়েছে বিজেপি। তবে সে সব উপেক্ষা করে সমাবেশে জেলা থেকে প্রচুর মানুষ যাবেন বলে আশাবাদী জ্যোতিপ্রিয়। যদিও স্বেচ্ছায় কেউ সমাবেশে যাবে না বলে পাল্টা দাবি তুলেছে বিজেপি।

এত বাস তুলে নিলে সাধারণ যাত্রীরা অসুবিধায় পড়বেন কিনা, সে প্রশ্নের জবাবে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘এমনিতেই রবিবার বলে সরকারি অফিস-কাছারি ছুটি থাকায় চাপ কম থাকবে। তারপরেও দলীয় কর্মী সমর্থকদের বলা হয়েছে যাতে কোনও মানুষের সমস্যা না হয়, সে দিকটা দেখতে।’’ সাধারণ মানুষের যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে অল্প অল্প করে বাস নেওয়া হয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের।

বিজেপির জেলা সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ অনেক রকম প্রয়োজনে বাসে ওঠেন। তৃণমূল বলপ্রয়োগ করে কিছু লোককে হয় তো নিয়ে যাবে। কিন্তু স্বেচ্ছায় কেউই যাবেন না।’’

বসিরহাট মহকুমায় কয়েকজন স্থানীয় তৃণমূল নেতা জানালেন, এ বার চাঁদা তোলা বা বিনা ভাড়ায় গাড়ি নেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হচ্ছে। কোথাও তোলাবাজি, কাটমানির অভিযোগ যাতে না ওঠে, তা মাথায় রাখতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে খরচে টান পড়েছে। ফলে এত দিন যত গাড়ি যেত, তা এ বার নেওয়া যাবে কিনা, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। একুশে জুলাইয়ের প্রচারে সভাও চোখে পড়ছে কম। মহকুমার এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘সভা করতে হলে খরচ আছে। কিন্তু চাঁদা তুলতে গেলে বিপত্তি না বাধে, ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ করতে হচ্ছে।’’ গাড়ি নেওয়ার জন্য ইউনিয়নগুলিকেও চাপ দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

21 July tmc Traffic Problems Transport Problem
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE