Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Old woman

ঘুমের ওষুধে নিস্তেজ করে বৃদ্ধাকে ফুটপাতে ‘ফেলে এলেন’ দুই ছেলে

এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় রাজলক্ষ্মী বালিকা বিদ্যালয়ের সামনের ফুটপাতে গিয়ে অসহায় অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায় বৃদ্ধাকে।

A Photograph of  an old woman sitting on the footpath of a road

এ ভাবেই ফুটপাতে পড়ে ছিলেন ঊষারানি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৫:৫২
Share: Save:

মা নাকি কথা শোনেন না। তাই অশীতিপর বৃদ্ধাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে, চ্যাংদোলা করে গঙ্গা পেরিয়ে মধ্যরাতে ভাটপাড়ার একটি স্কুলের সামনের ফুটপাতে ফেলে এসেছিলেন দুই ছেলে। অভিযোগ এমনই। দু’টি রাত সেখানেই কাটানোর পরে এলাকাবাসীর সাহায্যে ও পুলিশের উদ্যোগে বৃদ্ধার চিকিৎসা করানো হয়। তার পরে শুক্রবার দুই ছেলেকে ডেকে পাঠিয়ে, মুচলেকা লিখিয়ে নিয়ে বৃদ্ধাকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করল পুলিশ। তবে, যে ছেলেরা বৃদ্ধাকে ওই ভাবে ফেলে এসেছিলেন বলে অভিযোগ, তাঁদের কাছে ফিরে গেলে ফের একই ঘটনা ঘটবে কি না, সেই প্রশ্ন থাকছেই।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধার নাম ঊষারানি প্রামাণিক। বাড়ি হুগলির চুঁচুড়ার ঘটকপাড়ায়। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আমার দুই ছেলে, টিঙ্কু ও মনোজ। ওরাই ভাটপাড়ায় রেখে গিয়েছিল। এলাকার লোকজন খেতে দিয়েছিলেন, পুলিশ এসে হাসপাতালে নিয়ে গেল। আমার স্বামী ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন। দুই ছেলে মাছের ব্যবসা করে। স্বামীর মৃত্যুর পরে আমি ওদের সংসারে বোঝা হয়ে গিয়েছি।’’

ভাটপাড়ার পুলিশ আধিকারিকেরা জানান, এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় রাজলক্ষ্মী বালিকা বিদ্যালয়ের সামনের ফুটপাতে গিয়ে অসহায় অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায় বৃদ্ধাকে। তিনি বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন। প্রথমে তাঁকে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরে তাঁর থেকে বাড়ির ঠিকানা জেনে ও সমস্ত ঘটনা শুনে চুঁচুড়া থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। শুক্রবার বৃদ্ধার দুই ছেলে ভাটপাড়া থানায় হাজির হন।

ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক বললেন, ‘‘দুই ছেলেকে সাবধান করা হয়েছে, মাকে যেন এ ভাবে নির্যাতন না করেন। বৃদ্ধা কেমন থাকেন, নিয়মিত খোঁজ নিতে থাকব।’’ স্থানীয় বাসিন্দা অমিত চক্রবর্তী, কুণাল দে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করার জন্য পুলিশকে জানিয়েছিলেন। অমিত বলেন, ‘‘এমন যে কেউ করতে পারেন, এটাই ভাবতে পারছি না।’’

বড় ছেলে টিঙ্কু বলেন, ‘‘মাকে বাড়ি নিয়ে এসেছি। উনি ঠিক সময়ে ওষুধ খান না। তাই মাথাটা ঠিকঠাক কাজ করে না। প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসা করে দেখুন, মাকে কতটা যত্নে রাখি। কিন্তু শিকল দিয়ে বেঁধে তো রাখতে পারি না।’’ আর ছোট ছেলে মনোজের বক্তব্য, ‘‘মা মাঝেমধ্যেই এ দিক-সে দিক বেরিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে নিয়ে এসেছি। এ বার পুলিশ মারফত জানতে পারি, মা হাসপাতালে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Old woman Bhatpara Sleeping Pill
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy