কৈখালিতে মাতলা নদীর পাড়ে তৈরি হবে ভাসমান জেটি। —নিজস্ব চিত্র।
মাতলা নদীর ধারে কৈখালি সুন্দরবনের অন্যতম প্রবেশদ্বার। কিন্তু বেহাল জেটিঘাট-সহ বিভিন্ন কারণে এখানে পর্যটকদের আনাগোনা অপেক্ষাকৃত কম। এ বার সেখানে পন্টুন জেটি তৈরিতে উদ্যোগী হল প্রশাসন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত জেলাশাসক-সহ বিভিন্ন দফতরের প্রতিনিধিরা এবং বিধায়ক জেটি তৈরির জন্য আসেন নদীর পার বরাবর একাধিক জায়গা পরিদর্শন করেন। পন্টুন জেটি হলে এলাকায় পর্যটনে গতি আসবে বলেই মনে করছেন স্থানীয় মানুষজন। লাভবান হবেন জলপথের নিত্যযাত্রী ও মৎস্যজীবীরাও।
প্রশাসন সূত্রের খবর, দু’টি জায়গা বাছাই করা হয়েছে। তার মধ্যে যে কোনও একটি জায়গায় জেটি তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সেচ ও পূর্ত দফতরের কাছে। সেই প্রস্তাব অনুমোদন হলেই জেটি তৈরির বাকি প্রক্রিয়া শুরু হবে।
কুলতলির বিডিও সুচন্দন বৈদ্য বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এখানে পন্টুন জেটি তৈরির প্রস্তুতি চলছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক-সহ অন্যান্য দফতরের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে জায়গা দেখা হয়েছে। আপতত দু’টি জায়গা ঠিক করে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলে জেটি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই জেটি তৈরি হলে পর্যটন-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।”
কৈখালি থেকে লঞ্চে পৌঁছে যাওয়া যায় বনি ক্যাম্প, কলসদ্বীপের মতো সুন্দরবনের গভীরে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে। একদিনেই ঘুরে আসা যায় ঝড়খালি-সহ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্র। কৈখালি জায়গাটিও মনোরম। রামকৃষ্ণ মিশনের একটি শাখা রয়েছে। নদীর পারে রাত্রিবাসেরও জায়গা আছে। পর্যটকদের কাছে তাই এই জায়গাটির আলাদা আকর্ষণ রয়েছে। কিন্তু বেহাল জেটিঘাটের কারণে অনেকেই এড়িয়ে চলেন জায়গাটি। ঘূর্ণিঝড় আমপান ও ইয়াসে ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল কৈখালির জেটিঘাট। দীর্ঘদিন ভাঙাচোরা অবস্থায় ছিল। ফলে, সমস্যায় পড়তেন পর্যটক ও নিত্যযাত্রীরা। পরে জেটিঘাটের সংস্কার হয়েছে। তবে, নদীতে জল কম থাকলে যাত্রীদের লঞ্চে ওঠা-নামায় সমস্যা হয়। পন্টুন জেটি হলে এই সমস্যা মিটবে বলেই মনে করছেন অনেকে।
এই জেটিঘাট থেকে বহু নিত্যযাত্রী কুলতলির বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করেন। কৈখালি থেকে বহু ট্রলারও মাছ ধরতে নদী-সমুদ্রে পাড়ি দেয়। ভাসমান জেটি হলে সুফল মিলবে তাঁদেরও।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০১৮ সাল নাগাদ কৈখালিতে ভাসমান জেটি তৈরিতে উদ্যোগী হন স্থানীয় বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডল। সেইমতো পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল। সেচ ও পূর্ত দফতরের যৌথ উদ্যোগে জেটি তৈরি হবে বলে ঠিক হয়। প্রাথমিক ভাবে জেটি তৈরির জন্য একটি জায়গা নির্দিষ্ট করে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পরে সেই জায়গাটি বাতিল হয়ে যায়। এরপরই নতুন করে জায়গা দেখার কাজ শুরু হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy