— প্রতীকী চিত্র।
ভোরে বেরোতেন বাড়ি থেকে, ফিরতেন সন্ধ্যায়। পাড়ায় হাসি মুখে সকলের সঙ্গে কথা বলতেন। এলাকায় কারও সঙ্গে তেমন ঝগড়াঝাটি করতেও কেউ দেখেননি।
এ হেন খাতেজা বিবির নৃশংস হত্যাকাণ্ডে হতভম্ব পাড়া-পড়শি, আত্মীয়েরা। স্বামী-বিচ্ছিন্না মহিলার এক ছেলে কর্মসূত্রে থাকেন ভিন্ রাজ্যে। বাকি দুই ছেলেমেয়ে ছোট। তাঁর ভাই শামিম পৈলান বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে না ফেরায় দিদিকে ফোন করি। কিন্তু ফোন বন্ধ ছিল। আতিউর লস্করকে ফোন করি। সে-ও একই ট্রেনে যেত। সে জানায়, খবর পাচ্ছে না।শুক্রবার দিনভর বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়িতে খোঁজ নিই। ভেবেছিলাম, পরদিন থানায় যাব। তার আগে রাতেই পুলিশ খবরটা দিল!’’
আবর্জনার স্তূপ থেকে শুক্রবার সকালে উদ্ধার হয়েছিল খাতেজার কাটা মাথা। এই ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে কলকাতা পুলিশ। বছর চল্লিশের খাতেজার মা-বাবার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের উত্তর রাধানগরের কামদেবপুরের পৈলানপাড়ায়। দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে সেই বাড়িতেই থাকতেন খাতেজা। তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ডায়মন্ড হারবারের পারুলিয়া কোস্টাল থানার কামারপোল গ্রামের জাহাঙ্গির লস্করের। ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। বছর পাঁচেক আগে তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে মা-বাবার বাড়িতে চলে আসেন খাতেজা।
অনেক দিন ধরেই দিনমজুরি করে সংসার চালাচ্ছিলেন খাতেজা। মাস চারেক আগে নেতড়ার বাসিন্দা আতিউরের সূত্রে কলকাতায় পরিচারিকার কাজ পান। তার পর থেকে সেই কাজই করছিলেন। ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে উত্তর রাধানগর স্টেশনে গিয়ে সেখান থেকে ট্রেন ধরতেন। নেতড়া স্টেশন থেকে ওই ট্রেনে উঠত আতিউরও। দু’জনেই নামতেন বাঘা যতীন স্টেশনে। যে যাঁর কাজে যেতেন। আতিউর পেশায় ছিলেন রং মিস্ত্রি। কাজ সেরে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বাড়ি ফিরতেন খাতেজা। বৃহস্পতিবার ভোরে বেরিয়ে আর ফেরেননি তিনি।
শনিবার খুনের খবর পেয়ে বাড়িতে ভিড় করেছিলেন প্রতিবেশীরা। এলাকার বাসিন্দা রহমান পৈলান, সৈয়দ পৈলানেরা জানান, খুব মিশুকে মহিলা ছিলেন খাতেজা। নিজের কাজ নিয়ে থাকতেন। কারও সঙ্গে দেখা হলে হেসে কথা বলতেন। তাঁর কোনও শত্রু ছিল বলে কেউ শোনেননি।
এ দিন দুপুরে গ্রামের বাড়িতে তদন্তে আসে মগরাহাট থানার পুলিশ। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তারা। তার আগেই আতিউরকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় শহরে। পরে গ্রেফতার করা হয় তাকে। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার এক আধিকারিক জানান, কলকাতা পুলিশকে তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy