পুলক রায়চৌধুরী (বাঁ দিকে), সন্ধ্যা মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
আজ, শিক্ষক দিবসে রাজ্য সরকারের শিক্ষারত্ন পুরস্কার পেতে চলেছেন হিঙ্গলগঞ্জের কনকনগর এসডি ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক পুলক রায়চৌধুরী ও ভাঙড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সন্ধ্যা মণ্ডল।
রাজ্যের মোট ২৫ জন শিক্ষক শিক্ষারত্ন হিসেবে সম্মানিত হবেন। এর মধ্যে রয়েছেন ওঁরা দু’জন। এই খবরে খুশির হাওয়া দুই জেলাতেই। পুলক বলছেন, ‘‘এখনও অনেক কাজ বাকি। রাজ্য সরকারের দেওয়া পুরস্কারের অর্থমূল্য দিয়ে স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য উন্নত মানের একটা ফিল্টার কিনব।’’ সন্ধ্যা বলেন, এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়ে আমি আপ্লুত। এই পুরস্কার আমার একার নয়, আমার সমস্ত সহকর্মী-সহ ছাত্রীদেরও। এই পুরস্কার আমার বিদ্যালয়ের সুনাম আরও বাড়িয়ে দেবে।’’
২০১৪ সালে কনকনগর এসডি ইনস্টিটিউশন দিয়েই পুলকের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু। ৯ বছরের মধ্যে আমূল পরিবর্তন আনেন স্কুলের পরিকাঠামোগত উন্নতি এবং পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রে। প্রধান শিক্ষক জানান, মিড-ডে মিলের জন্য স্কুলের পুকুরে বিভিন্ন ধরনের মাছের চাষ হয়। জৈব সার ব্যবহার করে স্কুলে আনাজ বাগান, ফুলের বাগান তৈরি করা হয়েছে। এলাকায় আড়াই হাজার গাছ লাগানো হয়েছে স্কুলের তরফে। ছাত্রীদের জন্য বসানো হয়েছে স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন। একটি প্রদর্শনী কেন্দ্র, ডিজিটাল ক্লাসরুম তৈরি হয়েছে। স্কুলের
ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ক্যারাটে ক্লাস, কেরিয়ার কাউন্সেলিংয়েরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পুলক বলছেন, ‘‘এখনও বহু কাজ বাকি। এই প্রান্তিক এলাকার পড়ুয়াদের জন্য স্কুলে বিজ্ঞান শাখা চালু করা দরকার। সেই সঙ্গে হস্টেল চালু করাও প্রয়োজন। স্কুলকে কেন্দ্র করে একটা স্টেডিয়াম ও ক্রীড়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও প্রেক্ষাগৃহ তৈরির ইচ্ছে আছে।’’
অন্যদিকে, ৩৪ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন সন্ধ্যা । এর মধ্যে ১৯ বছর তিনি প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করছেন। আর দু’মাস পর তিনি অবসর নেবেন। গোসাবা ব্লকের বাসিন্দা সন্ধ্যা ১৯৮৯ সালে তাঁর শিক্ষকজীবন শুরু। ২০১৬ সালে তিনি ভাঙড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন। সন্ত্রাসদীর্ণ ভাঙড়ে আসার আগে অনেকে তাঁকে এই পদক্ষেপ নিতে বারণ করেন। কিন্তু সন্ধ্যা চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত ছিলেন। তিনি জানান, ভাঙড়ে আসার পর বিভিন্ন বিষয়ে তাঁকে হেনস্তার শিকার হতে হলেও সব বাধা পেরিয়ে তিনি ছাত্রীদের ‘সন্ধ্যা দিনিমণি’ হয়ে উঠতে পেরেছেন। তাঁর আমলে ভাঙড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল আগের চেয়ে ভাল হয়েছে। বিদ্যালয়ের পরিকাঠামোতেও নানা পরিবর্তন এনেছেন তিনি। গোটা স্কুল তিনি সিসি ক্যামেরায় মুড়ে দিয়েছেন। ছাত্রীদের পরিচয়পত্র চালু, রেজিস্টার খাতায় সই করে অভিভাবকের স্কুলে প্রবেশ এমন বিভিন্ন নিয়ম তিনি চালু করেন। তার সুফলও মিলেছে। পড়াশোনা-সহ অন্যান্য দিক থেকেও ভাঙড়ের অন্যতম নামী স্কুল হিসেবে উঠে এসেছে ভাঙড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
ভাঙড় ১ বিডিও দীপ্যমান মজুমদার বলেন, ‘‘ জেলার মধ্যে একমাত্র আমার ব্লকের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা এই পুরস্কার। ওঁর মতো শিক্ষিকা আজকের দিনে বিরল। ওঁর সাফল্যে আমরা গর্বিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy