খড়দহে শুভেন্দু, বাবুল, অর্জুন। নিজস্ব চিত্র।
তাঁর বাড়িতে যে তিন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি আছেন, তাঁরাও ‘পদ্ম ফোটাবেন’। মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের পথসভা থেকে সাফ জানিয়ে দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশিই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘হরিশ মুখার্জি রোডে ঢুকেও পদ্ম ফোটাব!’’
শুভেন্দু বিজেপি-তে যোগ দিলেও তাঁর বাবা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী, ভাই তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী এবং অপর এক ভাই কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন প্রশাসক সৌম্যেন্দু অধিকারী তৃণমূলেই রয়েছেন। যদিও আপাতদৃষ্টিতে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁদের দূরত্ব প্রতিদিনই বাড়ছে। দলের কোনও সভা-সমিতিতেই তাঁদের দেখা যাচ্ছে না। এ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই জল্পনা চলছিল। বস্তুত, রবিবার ডায়মন্ড হারবারে এক সভা থেকে তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দুকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, ‘‘তুমি বিজেপি-তে গিয়েছো। কিন্তু তোমার বাবা-ভাই তো এখনও তৃণমূলে! তাদের বিজেপি-তে নিয়ে যেতে পারোনি। তাদের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতে লজ্জা করে না?’’
মঙ্গলবার খড়দহের সভা থেকে সেই কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘রামনবমী আসছে। তখন দেখবেন। এখন তো পদ্ম সবে কুঁড়ি। রামনবমীতে পদ্ম ফুটবে।’’ তার পরেই শুভেন্দু বলেন, ‘‘লজ্জা কেন করবে! আমার বাড়ির লোকেরাও তো পদ্ম ফোটাবে।’’ প্রায় একনিঃশ্বাসে বিজেপি নেতার সংযোজন, ‘‘এ বার হরিশ চ্যাটির্জি স্ট্রিট, হরিশ মুখার্জি রোডে ঢুকেও পদ্ম ফোটাব।’’ প্রসঙ্গত, অভিষেক থাকেন হরিশ মুখার্জি স্ট্রিটে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঠিকানা ৩০বি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট। সারদা-নারদা নিয়েও শুভেন্দুকে আক্রমণ করেছিলেন অভিষেক। তার জবাবে অভিষেককে ‘বাবুসোনা’ বলে সম্বোধন করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘তোমার জ্যাঠামশাই সৌগত রায়ের কথা ভুলে গেলে বাবুসোনা? তাঁর হাতে নারদার টাকা দেখতে পেলে না?’’ শুভেন্দু আরও বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে সিবিআইয়ের হলফনামা দেখেছো? নারদা, সারদা, রোজ ভ্যালির টাকা কারা নিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে সব জানিয়েছে সিবিআই।’’
মঙ্গলবার বিকেলে ব্যারাকপুর ওয়্যারলেস মোড় থেকে খড়দহ থানার মাঠ পর্যন্ত একটি রোড-শো করে বিজেপি। সেখানে শুভেন্দু ছাড়াও ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, বিজেপি-র যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ, ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ-সহ একাধিক নেতা। মিছিলের শেষে খড়দহ থানার পাশের মাঠে একটি সভাও হয়। সেখানেই শুভেন্দু মমতা-অভিষেককে লক্ষ্য করে বলে দেন, ‘‘তোমাদের হারাতেই আমি ময়দানে নেমেছি!’’ তৃণমূল এবং রাজ্য সরকারের প্রতি আক্রমণাত্মক শুভেন্দু মাঝে মধ্যে হিন্দিতেও কথা বলেছেন। স্লোগান তুলেছেন, ‘‘কাশ্মীর সে কন্যাকুমারী...।’’ জনতা তাঁর সুরে সুর মিলিয়ে বলেছে, ‘‘দেশ হমারি, দেশ হমারি।’’ ভাষণ শেষে ‘বন্দেমাতরম’, ‘জয় শ্রীরাম’ এবং ‘ভারত মাতা কি জয়’ তো ছিলই।
আরও পড়ুন: সমুদ্রের মাঝে বিচ্ছিন্ন দ্বীপে ফের এক দল রোহিঙ্গাকে পাঠাল বাংলাদেশ সরকার
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর মিছিলে যাওয়ার পথে বিজেপি কর্মীদের বাসে হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগ
মঙ্গলবার আবার তৃণমূলকে ‘কোম্পানি’ বলে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। বলেন, ‘‘পার্টি নয়, ওটা একটা কোম্পানি। আমরা কর্মচারী হয়েই ছিলাম।’’ রাজ্যে যে তৃণমূল আর ক্ষমতায় আসবে না, সে কথাও একাধিক বার বলেছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘পিসি-ভাইপোর সরকার আর ফিরছে না!’’ পাশাপাশিই, ‘যশস্বী’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে বাংলাকে তুলে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘কেন্দ্রে-কলকাতায় এক সরকার আনতে হবে।’’ এর পরেই তাঁর নিজস্ব স্লোগান, ‘হরেকৃষ্ণ হরে হরে’। জনতা জবাব দিয়েছে, ‘‘পদ্ম এ বার ঘরে ঘরে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy