ক্রেতার ভিড় নেই দোকানে। রবিবার বনগাঁয়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। গত দু’বছরের মতো বিধিনিষেধ এবার নেই। করোনার জেরে গত দু’বছর মার খেয়েছে পুজোর কেনাকাটা। ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এবার পুজোর কেনাকাটায় পুরনো জোয়ার ফিরবে বলেই আশাবাদী ব্যবসায়ী মহল। তবে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় রবিবারেও দুই জেলায় পুজোর বাজার তেমন জমেনি বলেই জানাচ্ছেন অধিকাংশ দোকানদার।
পুজোর বাকি আর দিন কুড়ি। কেন এখনও জমছে না পুজোর বাজার? ব্যবসায়ীরা জানান, এ দিন সকাল থেকেই দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে দুই জেলায়। তার জেরে ক্রেতাদের একাংশ বেরোননি। অনেকের দাবি, করোনা পরিস্থিতি মানুষের কেনাকাটার অভ্যাস বদলে দিয়েছে। অনলাইনেই কেনাকাটা সারছেন অনেকে। অনেকে আবার জানান, অর্থনৈতিকভাবে এখনও সমস্যায় রয়েছেন বহু মানুষ। তার প্রভাব পড়ছে বাজারে।
বসিরহাটে এ দিন বৃষ্টিতে এ দিন কার্যত ধুয়ে যায় পুজোর বাজার। স্থানীয় পোষাক ব্যবসায়ী স্বপন মণ্ডল বলেন, “এমনিতেই বড় দোকান, শপিং মলের জন্য আমাদের ছোট দোকানে বিক্রি বাটা নেই। তার উপর বৃষ্টির জন্য ছুটির দিনের পুজোর বাজারও ধুয়ে গেল।” বসিরহাট, হাসনাবাদ এবং মালঞ্চে একাধিক শপিং মলও এ দিন ছিল ফাঁকা। এক শপিং মলের ম্যানেজার কমল পাত্র বলেন, “সারা দিন বৃষ্টিতে মানুষ তেমন বেরোননি। বিক্রি বাটা প্রায় নেই।”
বনগাঁ শহরের শাড়ি ব্যবসায়ী বাপন সাহা বলেন, “পুজোর বাজার খুবই খারাপ। অন্যান্য বছর এই সময় থেকে দোকানে ভিড় থাকে। এ বার হয়নি।” এ দিন বনগাঁর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেল, বড় দোকানগুলিতে কিছুটা ভিড় হলেও, ছোট-মাঝারি দোকানগুলি কার্যত ফাঁকা। স্থানীয় সূত্রের খবর, মহকুমার অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল পরিবহন ব্যবসার উপর। কিন্তু এখন পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রাকে পণ্য রফতানির জন্য অনলাইন স্লট বুকিং ব্যবস্থা চালু হয়েছে। ফলে স্থানীয় ট্রাক মালিক বা ট্রান্সপোর্টাররা কাজ হারিয়ে ফেলেছেন। এর প্রভাব পড়েছে পুজোর কেনাকাটায়। তাছাড়া মহকুমার অন্যতম অর্থকারী ফসল পাট। চাষিরা পুজোর আগে পাট বিক্রি করে পুজোর কেনাকাটা করেন। এ বার পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় চাষিরা পাট পচাতে পারছেন না। অনেক খেতে পাট পড়ে আছে। ফলে তাঁরাও কেনাকাটা করতে পারছেন না।
হিঙ্গলগঞ্জের বায়লানি বাজারের বস্ত্র ব্যাবসায়ী অসিত পাত্র বলেন, “করোনার আগে পুজোর দেড় মাস আগে থেকেই কেনাকাটা শুরু হয়ে যেত। অথচ এই বছর পুজোর কুড়ি দিন আগেও তেমন বেচা-কেনা হচ্ছে না। যারা আসছেন, তাঁরাও অল্প টাকার কেনাকাটা করছেন।” হাসনাবাদ বাজারের বস্ত্র ব্যবসায়ী মৃণাল ঘোষ বলেন, “আগের মতো ব্যবসা হচ্ছে না। দূর-দূরান্ত থেকে অনেক ক্রেতা আসতেন আগে। এখন পরিচিত লোকজনই বেশি আসছেন। এ দিন আবহাওয়াও ভাল নয়। ফলে কম ক্রেতা এসেছেন।”
কাকদ্বীপ বাজারের দোকানগুলোতে তেমন ভিড় চোখে পড়েনি এ দিন। কাকদ্বীপ এলাকায় অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর করে ইলিশ মাছের উপর। তবে তিন বছর ধরে ইলিশ ভাল না মেলায় প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে। কাকদ্বীপ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মানিক সাহা বলেন, “এ বছর পুজোর বাজারে তেমন বিক্রি নেই। কাকদ্বীপ এলাকায় মূল ব্যবসা ইলিশ মাছ। সেই ব্যবসা এ বছর ভাল হয়নি। তাই বিক্রিও নেই তেমন।”
ক্যানিংয়ে ভিড় উপেক্ষা করে এ দিন বেশ কিছু মানুষ ভিড় জমান বাজারে। ক্যানিংয়ের বাসিন্দা সুদর্শন মণ্ডল বলেন, “গত দু’বছর খুব খারাপ সময় কেটেছে। সকলের জন্য পুজোয় জামাকাপড় কিনতে পারিনি। কিন্তু এবছর পরিস্থিতি বদলেছে। তাই ভিড় বাড়ার আগেই কেনাকাটা করে নিলাম।” ক্যানিংয়ের কাপড় ব্যবসায়ী নিত্যানন্দ সাহা বলেন, “গত দু’বছরের তুলনায় বাজার ভাল। আশা করা যায় এবার ব্যবসা ভাল হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy